পুরুলিয়া, 27 জুন: কোটশিলা শাখার গৌরীনাথ ধাম ও চাষরোড রেল স্টেশনের মাঝে আচমকা ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন ঝুনপুকি গরাই নামের বছর আঠারোর এক যুবতী (Woman Died Aftet Jumped From The Train)। পরিবারের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির নির্যাতনের কারণে তিনি এই পথ বেছে নিতে বাধ্য হয়েছেন ৷
এপ্রিল মাসের 21 তারিখ গড় জয়পুরের ঝুনপুকির সঙ্গে বিয়ে হয় পাহাড়গোড়া রামপুরের বাসিন্দা ভোলানাথ গরাইয়ের । ঝুনপুকির বাড়ির লোকের অভিযোগ, শ্বশুরবাড়িতে সকলে মিলে তাঁর উপর মানসিক অত্যাচার করেছে ৷ একথা জানতে পেরে তাঁকে ট্রেনে করে বাড়ি ফিরছিল তাঁর দাদা । হঠাৎই ট্রেন যখন জয়পুর স্টেশনে ঢুকতে, তখনই আচমকা ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে দেন ঝুনপুকি । রেলের ওই শাখায় ডবল লাইনের কাজ চলছে । যার ফলে রেল লাইনে বাঁশের বেড়া দেওয়া হয়েছে । ট্রেন থেকে পড়ার সময় সেই বাঁশের আঘাতে গুরুতর জখম হয় ঝুনপুকি ।
তারপর চাষরোড স্টেশনে নেমে বোনকে পুরুলিয়া জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান দাদা । পরে বোনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্যত্র রেফার করা হলে রাস্তাতেই মারা যান ঝুনপুকি ৷ সোমবার দেহটির ময়নাতদন্ত করা হয়েছে ৷ এদিন দাদা রাহুল গড়াইকে এবিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, "আমার বোনকে অতিরিক্ত পণের দাবিতে মানসিকভাবে নির্যাতন করা হত । একাজ করত তাঁর স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ি ৷ এমনকী আমার বোনকে ফোন পর্যন্ত করতে দিত না ৷ ফোন করলে ফোন কল রেকর্ড করা হত, তারপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যেত ।"
আরও পড়ুন : হস্টেলে ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, ব়্যাগিং না আত্মহত্যা ?
রাহুল আরও জানায়, বোন জানিয়েছে যে শ্বশুরবাড়িতে তাঁকে বাপের বাড়ির লোকজনকে নিয়ে খারাপ কথা বলা হত ৷ শ্বশুর বাড়ির মানসিক অত্যাচারে ফুটফুটে বোনটি নিজেকে শেষ করে দিল । ওকে বাঁচতে দিল না শ্বশুরবাড়ির লোকজনরা ৷ এদিন বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও স্বামীর নামে জয়পুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতার দাদা । ঘটনায় জড়িত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক মধুসূদন মাহাতও ।