ETV Bharat / state

Purulia School Situation: শিক্ষক ছাড়াই চলছে স্কুল, মিড-ডে মিল খেয়ে বাড়ি যাচ্ছে পড়ুয়ারা - পড়ুয়া আছে তবে দেখা নেই শিক্ষকদের

পড়ুয়া আছে, তবে দেখা নেই শিক্ষকদের ৷ এমনই ছবি ধরা পড়ল পুরুলিয়ার একটি স্কুলে (Purulia School Situation) ৷ পড়ুয়ারা সারাদিন বসে মিড-ডে মিল খেয়ে চলে যাচ্ছে বাড়ি ৷

Purulia School
শালডাবরা
author img

By

Published : Feb 28, 2023, 11:06 AM IST

শিক্ষক ছাড়াই চলছে স্কুল

পুরুলিয়া, 28 ফেব্রুয়ারি: বিদ্যালয় চলছে ঠিকই, তবে শিক্ষক ছাড়া ! কী শুনতে অবাক লাগছে তো ? কিন্তু এটাই ঘটনা । পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডি ব্লকের দু নম্বর চক্রের তুন্তুরী সুইসা অঞ্চলের ঝাড়খণ্ড লাগোয়া প্রত্যন্ত গ্রাম শালডাবরা । সেখানকার জুনিয়র হাইস্কুলে গিয়ে দেখা গেল বিদ্যালয়s শিক্ষকদের কেউ নেই, ছাত্র-ছাত্রীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে, কেউ করছে খেলাধুলো তো কেউ বসে রয়েছে মিড-ডে মিল খেয়ে বাড়ি চলে যাবে সেই অপেক্ষায় । পড়াশোনা তো দূর অস্ত ছেলে-মেয়েদেরকে আগলে রাখার জন্য বিদ্যালয়ে উপস্থিত নেই কোনও শিক্ষক । খোঁজ নিয়ে জানা গেল, বিদ্যালয়ে দু'জন শিক্ষক রয়েছেন । ফোনে তাঁরা জানালেন, দু'জনেই বাইরে রয়েছেন । বিষয়টি শুধু আজকের নয়, এটি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে বলে দাবি খুদে ছাত্র-ছাত্রীদের (School running in teachers absent) ।

পড়ুয়া সুজিতা গোপ ও রবি গোপ জানায়, তারা প্রতিদিন বাড়িতে খাবার খেয়ে সকাল দশটায় স্কুলে আসে । কিন্তু প্রতিদিন স্কুলের শিক্ষক আসেন দুপুর বারোটায় । শিক্ষক আসার পর সেই সময় তাদের প্রার্থনা হয় । আজকে শিক্ষক আসেসনি তাই তারা ক্লাস ঘরে বসে রয়েছে । মিড-ডে মিলের খাবার খেয়ে বাড়ি ফিরে যাবে তারা বলে জানায় । ওপর দিকে ওই স্কুলের রাঁধুনি শ্রীমতী গোপ ও লক্ষ্মীমণি গোপ জানান, স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গত শনিবার তাঁদের মিড-ডে মিলের (Mid Day Meal) রান্নার সমস্ত সরঞ্জাম দিয়ে গিয়েছেন । তাঁরা প্রতিদিন 130 জন ছাত্র-ছাত্রীর রান্না করেন । সেই মত আজকেও রান্না করেছেন । কিন্তু এদিন দু'জন শিক্ষকের কেউ স্কুলে আসেননি ।

গ্রামের বাসিন্দা উপেন্দ্রনাথ গোপ জানান, এই বিষয়টি আজকের নয়, প্রতিদিনই এটা হয়ে থাকে । আজকে তো স্কুলের দু'জন শিক্ষক অনুপস্থিত রয়েছেন । কিন্তু প্রায় দিনই দুপুর বারোটায় আসেন তাঁরা ৷ কোনওদিন আবার আসেন না । অনেকবার বলা সত্ত্বেও এমনিভাবেই চলছে স্কুলের পঠন-পাঠন । অথচ এই স্কুলের উপর নির্ভর করে শালডাবরা, বাঁশটাড়, বাঁধডি, গাগী, রাঙ্গামাটি, মুকরূপ, ডাংডুং, পেড়েতোরাং-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ছেলে-মেয়েরা ।

শিবেশ্বর কর্মকার নামে এক বাসিন্দা বলেন, "আমি আমার মেয়েকে স্কুলে ভরতি করার জন্য গত আট দিন ধরে আসছি । স্কুলের শিক্ষক না-থাকার কারণে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি ।" স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোপাল মহাপাত্র ফোনে বলেন, "এই ঘটনা আজকের নতুন নয়, এই ঘটনাটি প্রায় দিনেই হয়ে থাকে । আজকে ডাক্তার দেখানোর জন্য পুরুলিয়াতে আমি চলে এসেছি । এই স্কুল চালানোর সমস্ত দায়িত্ব আমার নয় । তাই আমি রাঁধুনিদেরকে বলে দিয়েছি, তাঁরা মিড-ডে মিলের রান্না করে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের খাইয়ে বাড়ি চলে যাবেন । এছাড়া আমার আর কিছু বলার নেই ।"

ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক রাজেশ মণ্ডল জানান, তিনি ডিআই অফিসে গিয়েছেন স্কুলের কাজে । কারণ টিআইসি পরিবর্তন হয়েছে ৷ প্রাক্তন টিআইসি তাঁদের মাইনে দেননি । তাই মাইনের জন্য তিনি পুরুলিয়ায় ডিআই অফিসে গিয়েছেন । আরেকজন শিক্ষককে তিনি বলেছিলেন স্কুল যেতে ৷ উনি স্কুল না-গিয়ে কোথায় গিয়েছেন তিনি বলতে পারবেন না বলে জানান । এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে বাঘমুন্ডি ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক দেবরাজ ঘোষ বলেন, "বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে ।"

আরও পড়ুন: 2-1 জন পড়ুয়ার জন্য 2 শিক্ষক, বেহাল দশা সাগরের স্কুলের

শিক্ষক ছাড়াই চলছে স্কুল

পুরুলিয়া, 28 ফেব্রুয়ারি: বিদ্যালয় চলছে ঠিকই, তবে শিক্ষক ছাড়া ! কী শুনতে অবাক লাগছে তো ? কিন্তু এটাই ঘটনা । পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডি ব্লকের দু নম্বর চক্রের তুন্তুরী সুইসা অঞ্চলের ঝাড়খণ্ড লাগোয়া প্রত্যন্ত গ্রাম শালডাবরা । সেখানকার জুনিয়র হাইস্কুলে গিয়ে দেখা গেল বিদ্যালয়s শিক্ষকদের কেউ নেই, ছাত্র-ছাত্রীরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে, কেউ করছে খেলাধুলো তো কেউ বসে রয়েছে মিড-ডে মিল খেয়ে বাড়ি চলে যাবে সেই অপেক্ষায় । পড়াশোনা তো দূর অস্ত ছেলে-মেয়েদেরকে আগলে রাখার জন্য বিদ্যালয়ে উপস্থিত নেই কোনও শিক্ষক । খোঁজ নিয়ে জানা গেল, বিদ্যালয়ে দু'জন শিক্ষক রয়েছেন । ফোনে তাঁরা জানালেন, দু'জনেই বাইরে রয়েছেন । বিষয়টি শুধু আজকের নয়, এটি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে বলে দাবি খুদে ছাত্র-ছাত্রীদের (School running in teachers absent) ।

পড়ুয়া সুজিতা গোপ ও রবি গোপ জানায়, তারা প্রতিদিন বাড়িতে খাবার খেয়ে সকাল দশটায় স্কুলে আসে । কিন্তু প্রতিদিন স্কুলের শিক্ষক আসেন দুপুর বারোটায় । শিক্ষক আসার পর সেই সময় তাদের প্রার্থনা হয় । আজকে শিক্ষক আসেসনি তাই তারা ক্লাস ঘরে বসে রয়েছে । মিড-ডে মিলের খাবার খেয়ে বাড়ি ফিরে যাবে তারা বলে জানায় । ওপর দিকে ওই স্কুলের রাঁধুনি শ্রীমতী গোপ ও লক্ষ্মীমণি গোপ জানান, স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গত শনিবার তাঁদের মিড-ডে মিলের (Mid Day Meal) রান্নার সমস্ত সরঞ্জাম দিয়ে গিয়েছেন । তাঁরা প্রতিদিন 130 জন ছাত্র-ছাত্রীর রান্না করেন । সেই মত আজকেও রান্না করেছেন । কিন্তু এদিন দু'জন শিক্ষকের কেউ স্কুলে আসেননি ।

গ্রামের বাসিন্দা উপেন্দ্রনাথ গোপ জানান, এই বিষয়টি আজকের নয়, প্রতিদিনই এটা হয়ে থাকে । আজকে তো স্কুলের দু'জন শিক্ষক অনুপস্থিত রয়েছেন । কিন্তু প্রায় দিনই দুপুর বারোটায় আসেন তাঁরা ৷ কোনওদিন আবার আসেন না । অনেকবার বলা সত্ত্বেও এমনিভাবেই চলছে স্কুলের পঠন-পাঠন । অথচ এই স্কুলের উপর নির্ভর করে শালডাবরা, বাঁশটাড়, বাঁধডি, গাগী, রাঙ্গামাটি, মুকরূপ, ডাংডুং, পেড়েতোরাং-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ছেলে-মেয়েরা ।

শিবেশ্বর কর্মকার নামে এক বাসিন্দা বলেন, "আমি আমার মেয়েকে স্কুলে ভরতি করার জন্য গত আট দিন ধরে আসছি । স্কুলের শিক্ষক না-থাকার কারণে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি ।" স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক গোপাল মহাপাত্র ফোনে বলেন, "এই ঘটনা আজকের নতুন নয়, এই ঘটনাটি প্রায় দিনেই হয়ে থাকে । আজকে ডাক্তার দেখানোর জন্য পুরুলিয়াতে আমি চলে এসেছি । এই স্কুল চালানোর সমস্ত দায়িত্ব আমার নয় । তাই আমি রাঁধুনিদেরকে বলে দিয়েছি, তাঁরা মিড-ডে মিলের রান্না করে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের খাইয়ে বাড়ি চলে যাবেন । এছাড়া আমার আর কিছু বলার নেই ।"

ওই স্কুলের সহকারী শিক্ষক রাজেশ মণ্ডল জানান, তিনি ডিআই অফিসে গিয়েছেন স্কুলের কাজে । কারণ টিআইসি পরিবর্তন হয়েছে ৷ প্রাক্তন টিআইসি তাঁদের মাইনে দেননি । তাই মাইনের জন্য তিনি পুরুলিয়ায় ডিআই অফিসে গিয়েছেন । আরেকজন শিক্ষককে তিনি বলেছিলেন স্কুল যেতে ৷ উনি স্কুল না-গিয়ে কোথায় গিয়েছেন তিনি বলতে পারবেন না বলে জানান । এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে বাঘমুন্ডি ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক দেবরাজ ঘোষ বলেন, "বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে ।"

আরও পড়ুন: 2-1 জন পড়ুয়ার জন্য 2 শিক্ষক, বেহাল দশা সাগরের স্কুলের

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.