পুরুলিয়া, 1 ফেব্রুয়ারি: করোনার বিধিনিষেধের জেরে আর্থিক সঙ্কটে পড়েছিলেন পুরুলিয়ার মুখোশ শিল্পীরা (Artist Wating In Purulia)। এবার খুলে যাচ্ছে পর্যটনকেন্দ্রগুলি। সোমবার পর্যটনকেন্দ্র খোলার বিষয়ে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার কি ফিরবে চড়িদা গ্রামের মুখোশ শিল্পীদের সুদিন? এটাই এখন তাদের কাছে বড় প্রশ্ন।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের করাল থাবা বসিয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। করোনার বাড়বাড়ন্তের জেরে বহু শিল্প, শিল্পী, প্রতিষ্ঠান চরম অসুবিধার মধ্যে পড়েছে। তেমনিভাবে এখন চরম আর্থিক লোকসানে পড়েছেন পুরুলিয়া জেলার বাঘমুন্ডি থানা এলাকার চড়িদা গ্রামের মুখোশ শিল্পীরা। পুরুলিয়ার এই গ্রামটি 'মুখোশ গ্রাম' হিসেবেই পরিচিত। এই গ্রামের সকলেই সিদ্ধহস্ত বিভিন্ন ধরনের মুখোশ তৈরিতে। গণেশ, শিব-দুর্গা, কৃষ্ণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন রকমের অসুর এমনকি আদিবাসী নর-নারীর ছোট-বড় নানা সাইজের মূর্তি এখানে পাওয়া যায়।
যে সব পর্যটকরা পুরুলিয়ায় বেড়াতে আসেন, তাঁরা অযোধ্যা পাহাড়ে যাওয়ার পথে মুখোশ কেনার জন্য একবার ঢুঁ মেরে যান এই গ্রামে। অনেকে আবার এই রকমারি ডিজাইনের তৈরি মুখোশ বাড়ি সাজানোর কাজে ব্যবহার করেন। তাঁরা আলাদা করে মুখোশ কেনার জন্যই এই গ্রামে যান। বিভিন্ন রকম দামে 50 টাকা জোড়া থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ 8-10 হাজার টাকা পর্যন্ত মুখোশ পাওয়া যায়। এই মুখোশ তৈরি চড়িদা গ্রামের মানুষজনের অধিকাংশেরই পেশা।
আরও পড়ুন: ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে পাথুরে জমিতে সবজি বাগান, রোজগারের দিশা দেখাচ্ছেন ঝালদার মহিলারা
মাসখানেক আগেও যেহেতু করোনার সংক্রমণ খুব একটা বেশি ছিল না এবং পর্যকটদের এই জেলায় পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে যাতায়াতের কোনও বিধিনিষেধও ছিল না, তাই চড়িদা গ্রামের বহু মানুষই ঋণ করে অনেক টাকা খরচ করে ফেলেছেন মুখোশ তৈরিতে। তারা দুঃস্বপ্নেও ভাবতে পারেননি যে ফের করোনার প্রভাব ছায়া ফেলবে তাঁদের এই শিল্পে। এখন তাই বিপদে পড়ে গিয়েছেন গৌতম সূত্রধর, আনন্দ সূত্রধরেরা । তারা বলছেন, "অনেক টাকা ধার করে নতুন বছরের আগে প্রচুর মুখোশ তৈরি করেছি, মুখোশের বিক্রি নেই। কীভাবে যে মহাজনের ঋণ শোধ করব এবং কীভাবে যে আমরা সংসার চালাব বুঝতে পারছি না।" পর্যটকদের জন্য ফের খুলে যাচ্ছে পর্যটনকেন্দ্রগুলি। সেই আগের মত কবে আবার ভিড়ে গমগম করবে মুখোশ শিল্পীদের এই গ্রাম, কবে তাদের এই সৃষ্টিগুলির বিক্রি বাড়বে? সেই সুদিনের অপেক্ষায় এখন চাতকের মত চেয়ে আছেন ওই গ্রামের শিল্পীরা।