পুরুলিয়া, 27 জুন : পুরুলিয়ার মসীহা ডাক্তার নয়ন মুখোপাধ্যায় ৷ জনদরদী কাজের জন্য এই তকমা পেয়েছেন পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ৷ বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ওষুধ বিতরণ করা তাঁর নিত্যকাজের মধ্যে পড়ে ৷ ডাক্তারির পাশাপাশি করোনাকালে অসহায়দের হাতে খাদ্যদ্রব্য তুলে দিয়েছেন ৷ ডাইনি ও ভূতে পাওয়ার মতো গ্রাম্য কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াইও জারি রয়েছে তাঁর ৷
গ্রামে গ্রামে বিনে পয়সায় চিকিৎসা, ওষুধপত্র দেওয়া ইত্যাদি তো রয়েছেই ৷ করোনার সময়ে অন্যান্য চিকিৎসকরা যখন সাধারণ পরিষেবাটুকু দিতে ভীত তখন ডাক্তার নয়ন মুখোপাধ্যায় পুরুলিয়া জেলা হাসপাতালে নিজের কাজ সামলে ছুটে বেড়াচ্ছেন পুরুলিয়ার এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ৷ যে প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতে ডাক্তারি পরিষেবা সহজে পাওয়া যায় না সেখানেও মুশকিল আসান হয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন তিনি ৷ রাজ্যে কার্যত লকডাউনে বিভিন্ন গ্রামে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও ওষুধ বিতরণ শিবির করেছেন ৷
প্রায় প্রতিদিনই 60 থেকে 70টি করে রোগী দেখেন ৷ কোনওদিন আবার যতক্ষণ রোগীদের ভিড় থাকে ততক্ষণ দেখে যান ৷ চিকিৎসক নয়ন মুখোপাধ্যায়ের নাম এখন পুরুলিয়ার গ্রামেগঞ্জের মানুষদের মুখে মুখে ফিরছে ৷ কেউ নিজেদের গ্রামে স্বাস্থ্য শিবির করতে চেয়ে সরাসরি যোগাযোগ করছেন ডাক্তারবাবুর সঙ্গে ৷ পুরুষ, মহিলা, শিশু থেকে 100 বছর বয়সী বৃদ্ধাও এসে হাজির হচ্ছেন স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবিরে ৷ এর পাশাপাশি অসহায় পরিবারগুলিকে আর্থিকভাবে সাহায্য করার চেষ্টাও করেন তিনি ৷
গতকাল পুরুলিয়ার পুঞ্চা থানা এলাকার একটি অসহায় পরিবারের হাতে আর্থিক সাহায্য তুলে দিয়েছেন নয়ন মুখোপাধ্যায় ৷ গতবছর লকডাউন চলাকালীন অনেক অসহায় পরিবার, রিকশা চালকদের হাতে খাদ্যদ্রব্য তুলে দিয়েছেন ৷ চিকিৎসার পাশাপাশি নয়ন মুখোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের পুরুলিয়া জেলা সম্পাদক ৷ তাই ডাইনি প্রথা, ভূতে পাওয়ার মতো কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন ৷ গ্রামের মানুষদের বোঝানোর কাজ করেন ৷
আরও পড়ুন : Sundarbans : ত্রাণের অপেক্ষায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা নোনা জলে, বাড়ছে স্ত্রীরোগ
হাসপাতালের কাজ সামলে এখন অনেকটা সময় ব্যয় করছেন গ্রামে গ্রামে রোগী দেখে ৷ এই ব্যাপারে চিকিৎসক নয়ন মুখোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, "এই করোনার সময় অনেকেই ভয় পেয়ে হাসপাতালে আসছেন না ৷ আবার গাড়ি চলাচলও বন্ধ ৷ এই পরিস্থিতিতে যথাসম্ভব ডাক্তারি ধর্ম পালন করার চেষ্টা করছি ৷"