পুরুলিয়া, 14 এপ্রিল: গত বুধবার দুপুরে পুরুলিয়া পৌরসভার 20 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা পূজা খাঁ-র (25) অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পাওয়া যায় ৷ ঘটনার দিনই মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজনদের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছিলেন তাঁর বাবা উজ্জ্বল কুমার মল্লিক ৷ তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে নিহত গৃহবধূর স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি এবং ননদকে গ্রেফতার করল পুলিশ ৷ অভিযোগ পণের দাবিতে পূজার উপরে অত্যাচার করতেন শ্বশুর বাড়ির লোকেরা ৷ ধৃতদের শুক্রবার আদালতে তোলা হয় ৷ বিচারক মৃতের স্বামী শ্রীকান্ত খাঁ-কে 5 দিনের পুলিশ হেফাজত এবং বাকিদের পুলিশ জেল হেফাজতে পাঠিয়েছেন ৷
মৃত পূজা খাঁ-এর বাবা উজ্জ্বল কুমার মল্লিক বৃহস্পতিবার বিকেলে পুরুলিয়া সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করান ৷ সেখানে তিনি জানিয়েছেন, বছর 2 আগে সম্বন্ধ করে তিনি মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন পুরুলিয়া পৌরসভার 20 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শ্রীকান্ত খাঁ-র সঙ্গে ৷ শ্রীকান্তের বাড়িতে তাঁর মা আরাধনা খাঁ, বাবা সঞ্জয় খাঁ এবং বোন রজনী খাঁ রয়েছেন ৷ বিয়ের সময় শ্রীকান্তর বাড়ি থেকে 100 গ্রাম সোনা ও 1 লক্ষ টাকার দাবি করা হয়েছিল ৷ কিন্তু, তিনি সোনা পুরো দিতে পারলেও, নদগ 30 হাজার টাকাই দিতে পেরেছিলেন ৷
অভিযোগ বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই টাকার জন্য চাপ দিতে শুরু করেন শ্বশুর বাড়ির লোকেরা ৷ সঙ্গে তাঁর স্বামীও টাকা চেয়ে চাপ দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ ৷ এমনকি পূজাকে মানসিক এবং শারীরিকভাবে অত্যাচারও করা হয় বলে অভিযোগ ৷ পূজা প্রায়ই নিজের মাকে সেই কথা জানাতেন ৷ এমনকি একদিন বাড়ি থেকে বেরও করে দেয় তাঁরা ৷ শেষের কয়েকমাস প্রাণে মারার হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন উজ্জ্বল কুমার মল্লিক ৷
আরও পড়ুন: পুরুলিয়ায় গার্হস্থ্য হিংসা, পণ চেয়ে ও সন্তান না-হওয়ার কারণে দুই বধূকে নির্যাতনের অভিযোগ
পুলিশে তিনি জানান, গত বুধবার পূজার শ্বশুর উজ্জ্বলবাবুকে ফোন করেন ৷ ফোনে সঞ্জয় খাঁ জানান, পূজা অসুস্থা এবং হাসপাতালে ভরতি ৷ তিনি হাসপাতালে গিয়ে দেখেন, তাঁর মেয়ে মৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে এবং সেখানে পূজার স্বামী বা শ্বশুর বাড়ির অন্য কেউ নেই ৷ পূজার শরীরে মারধরের চিহ্ন ছিল বলে জানিয়েছেন তাঁর বাবা ৷ তিনি অভিযোগ করেছেন, পূজার শ্বশুর বাড়ির লোকজন দাবি করেছিল, তাঁর মেয়ে আত্মহত্যা করেছে ৷ কিন্তু, তা সম্পূর্ণ মিথ্যে বলে জানান উজ্জ্বল কুমার মল্লিক ৷