পুরুলিয়া, 29 অক্টোবর: এর আগেও কাড়া লড়াই (পুরুষ মোষের লড়াই) দেখতে গিয়ে ঘটেছে একাধিক মৃত্যুর ঘটনা । তবুও হুঁশ যে ফেরেনি তা আবারও প্রমাণিত। ফের কাড়া লড়াইয়ের আসরে ঘটল দুর্ঘটনা। রবিবার পুরুলিয়া মফস্সল থানার কানালি গ্রামে মোষের লড়াইয়ের আসরে দু'জন আহত হলেন।
আহতদের উদ্ধার করে পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে বিপজ্জনক এই লড়াই বন্ধের চেষ্টা করা হয়েছিল পুরুলিয়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা বন্ধ করতে পারেনি পুলিশ। প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই দিনে দুপুরে পুরুলিয়া জেলা জুড়ে চলছে এই লড়াই। এর আগে 2022 সালের 16 অক্টোবর পাড়া থানার হাতিমারা গ্রামে কাড়া লড়াইয়ের আসরে মৃত্যু হয় ওই এলাকারই নডিহা গ্রামের বাসিন্দা রথু বাউড়ির (52)।
2021 সালে বরাবাজার থানার জিলিং গ্রামে কাড়া লড়াইয়ের আসরে মৃত্যু হয় পূর্ব সিংভূমের এক ব্যক্তির। আহত হয়েছিলেন আরও দুইজন।
তারপরেও বন্ধ করা যায়নি প্রাণঘাতী এই লড়াইয়ের আসর। সারা বছর জেলার বিভিন্ন প্রান্তে চলছে এই লড়াই। কোথাও ঘটছে দুর্ঘটনা, কোথাও বা নির্বিঘ্নে মিটছে সব কিছু। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দর্শক এদিন জানান, কাড়া লড়াই দেখতে পুরুলিয়ার আসর গুলিতে 20 থেকে 30 হাজার পর্যন্ত লোকের সমাগম হয়।
স্থানীয়দের দাবি, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাড়া লড়াইয়ের সময় যখন জয়ী কাড়াটি পরাজিত কাড়াকে তাড়া করে সেই সময় প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে দিক বিদিক জ্ঞান হারিয়ে যেদিকে পারে দৌড়য় কাড়াটি। সেই সময় এক ব্যক্তি সামনে চলে এলে তিনি দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লক্ষ্মী পুজো উপলক্ষে ফি-বছর কানালি গ্রামে এই লড়াই হয়। এদিনও তেমনি লড়াই ছিল। প্রচুর মানুষ ভিড় করেছিল লড়াই দেখতে।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুজোর দিন পুকুরে স্নান করতে গিয়ে মৃত্যু দুই কিশোরীর
প্রথম লড়াই এর শেষে একটি কাড়ার গুঁতোয় জখম হন মনীন্দ্র মাহাতো নামে এক বৃদ্ধ। পরের লড়াইয়ে জখম হন কানালি গ্রামের বাসিন্দা মড়িরাম মাহাতো নামে আরও এক ব্যক্তি। ওই দু'জনেই বর্তমানে পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন। এদিন দুর্ঘটনার জেরে ওই লড়াই মাঝপথে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে জেলা পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দোপাধ্যায় বলেন, "বিষয়টি জেনে মন্তব্য করব।" ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির জেলা সম্পাদক মধুসূদন মাহাতো বলেন, "ভোট ব্যাংকের স্বার্থে এই ধরনের কাজ করা হয়। এগুলি অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত।"