পুরুলিয়া, 4 সেপ্টেম্বর: পুরুলিয়ার (Purulia) ঝালদার (Jhalda) কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু (Tapan Kandu) খুনে ধৃত ভাড়াটে শুটার জাবির আনসারিকে (Zabir Ansari) 10 দিনের জন্য সিবিআই হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিল পুরুলিয়া জেলা আদালত ৷ সিবিআই-এর দাবি, তপন কান্দুকে খুন করতে এই জাবিরই গুলি ছুড়েছিল ৷ কিন্তু, এতদিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের চোখে ধুলো দিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিল এই দুষ্কৃতী ৷ শেষমেশ ঝাড়খণ্ডের বোকারো জেলার ব্যাংক নারায়ণপুরের কাচগ্রাম থেকে তাকে গ্রেফতার করে সিবিআই ৷ বস্তুত, জাবিরকে ধরতে বেশ কয়েক দিন ওই এলাকায় ঘাঁটি গেড়ে থাকেন সিবিআই-এর গোয়েন্দারা ৷
উল্লেখ্য, গত 13 মার্চ তপন কান্দুকে খুন করা হয় ৷ ওই দিনই এই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত কলেবর সিংয়ের সঙ্গে জাবির আনসারিকে ঝালদা শহরে 'রেইকি' করতে দেখা যায় ৷ সেই সময় মোটরবাইকে সওয়ার ছিল দুই দুষ্কৃতী ৷ বাইকটি চালাচ্ছিল জাবির ৷ ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় কলেবর সিংকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ আপাতত বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছে সে ৷ সূত্রের দাবি, কলেবর সিং-সহ ধৃত সকলকে জেরা করে এবং সিসিটিভি ক্য়ামেরার ফুটেজের সূত্র ধরেই ঝাড়খণ্ড থেকে জাবিরকে গ্রেফতার করা হয় ৷ এবার জাবিরকে জেরা করে খুনে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রটি উদ্ধার করার চেষ্টা চালাবে সিবিআই ৷ সেইসঙ্গে, কে বা কারা তপন কান্দুকে খুনের 'সুপারি' দিয়েছিল, তাও জানার চেষ্টা করা হবে ৷
আরও পড়ুন: তপন কান্দু খুনের ঘটনায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার ভাড়াটে শুটার
এই প্রসঙ্গে কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নেপাল মাহাত বলেন, "সিবিআইকে অভিনন্দন, ধন্যবাদ ৷ আগামী দিনে আরও বড় মাথা ধরা পড়বে ৷ খুব তাড়াতাড়ি এই মামলার বিচার পাবে সবাই ৷" এই বিষয়ে নিহত তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্নিমা কান্দু বলেন, "সিবিআই-এর প্রতি ভরসা ছিল ৷ এবার একে একে সবাই ধরা পড়বে ৷" খুশি নিহত তপন কান্দুর ভাইপো মিঠুন কান্দুও ৷
উল্লেখ্য, তপন কান্দু খুন (Tapan Kandu Murder) হওয়ার পর ঘটনার তদন্তে নামে জেলা পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) ৷ তারা চার অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করে ৷ কিন্তু, তারপরও সিবিআই তদন্তের দাবিতে সরব হন কান্দু পরিবারের সদস্যরা ৷ গত 4 এপ্রিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) তপন কান্দু খুনে সিবিআই তদন্তের (CBI Investigation) নির্দেশ দেয় ৷ এরপর গত 6 এপ্রিল তপন কান্দু খুনের প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জন বৈষ্ণবের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ৷ সেদিনই ঝালদায় এসে 'সিট'-এর হাত থেকে তদন্তভার বুঝে নেয় সিবিআই ৷ পরবর্তীতে গত 12 এপ্রিল নিরঞ্জন বৈষ্ণবের মৃত্যুতেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট ৷
এখনও পর্যন্ত তপন কান্দু খুনের ঘটনায় মোট পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ বর্তমানে তাদের মধ্যে জেল হেফাজতে রয়েছে নিহত তপন কান্দুর ভাইপো দীপক কান্দু, তপন কান্দুর ভাই নরেন কান্দু, আশিক খান, কলেবর সিং ও সত্যবান পরামাণিক ৷