হলদিয়া, 16 নভেম্বর : চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ হলদিয়ায় । রবিবার সন্ধ্যা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে ভবানীপুর থানার মসজিদ পাড়া এলাকায় । পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম আবদুল রশিদ (24)। রাতেই তাঁকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে ভরতি করে পরিবারের লোকেরা ৷ পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় স্থানান্তরিত করা হয় তমলুক জেলা হাসপাতালে ৷ সেখানে গভীর রাতে মৃত্যু হয় তাঁর । পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই একটি খুনের মামলা রুজু করে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ভবানীপুর থানার পুলিশ ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পেশায় পার্কিং জ়োনে কর্মী আবদুল কয়েকদিন আগেই একটি এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন কেনেন । ঘটনা চক্রে রবিবারই পার্কিংয়ে থাকা এক গাড়ি চালকের মোবাইল চুরি হয় । আবদুলের কেনা ফোনটি পুরাতন ফোন হওয়ায় ফোনে থাকা নম্বরে একাধিক কল আসতে শুরু করে । কথোপকথনের সূত্র ধরেই স্থানীয় কিছু যুবক পৌঁছে যায় আবদুলের কাছে । তাদের ধারণা ছিল আবদুল মোবাইলটি চুরি করেছেন ৷ সেই ধারণা থেকে পাঁচ থেকে সাত জন আবদুলের উপর চড়াও হয়ে ব্যাপক মারধর করে ৷ পরে বিষাক্ত কিছু খাইয়ে দিয়ে এলাকা থেকে চম্পট দেয় । খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন আবদুলকে গুরুতর জখম অবস্থায় উদ্ধার করে হলদিয়া মহাকুমা হাসপাতালে ভরতি করে । অবস্থার অবনতি হওয়ায় রাতেই চিকিৎসকেরা তাকে তমলুক জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করে । কিন্তু আবদুলকে বাঁচানো যায়নি ।
আজ সকাল থেকেই আবদুলের খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা এলাকা । সকাল থেকেই শুরু হয় বিক্ষোভ । পরে ভবানীপুর থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে । দুপুর নাগাদ মৃতের বিবি রানুমা থানায় লিখিত অভিযোগ জানান ৷ অভিযোগের ভিত্তিতে এলাকারই শেখ মেহেবুব, শেখ সামা ও শেখ রমজানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ । রানুমা বিবি খুনিদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন, "কোনও একজন আমার শওহরকে জোর করে একটি চুরির সিম দিয়েছিল । সেই চোর পালিয়ে যাওয়ায় আমার শওহরের কাছে সিম কার্ড থেকে যায় । আর যে কারণে গতকাল দুপুর নাগাদ আমার শওহরকে চোর সন্দেহে পৌরসভার সামনে ব্যাপক মারধর করে । পরে আমার শাশুড়ি গিয়ে আলোচনা করে সমস্যা মিটিয়ে ছেলেকে নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন । এরপর বিকেল নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় শওহর ৷ সেসময় পাঁচজন মিলে রাস্তায় ধরে ওকে ব্যাপক মারধর করে বিষ জাতীয় কিছু খাইয়ে দেয় । আমি চাই পুলিশ সঠিক তদন্ত করে খুনিদের ফাঁসির ব্যবস্থা করুক ।"