ETV Bharat / state

শেষ হয়নি কংসাবতীর স্লুইস গেট তৈরির কাজ, আশঙ্কায় পাঁশকুড়াবাসী - Work of Swissgate near Kangsabati river closed due to lockdown

গতবছর ডিসেম্বরে স্লুইস গেট তৈরির কাজ শুরু হয় । কিন্তু লকডাউনের জেরে আর কাজ এগোয়নি । বর্ষায় তাই আতঙ্কে রয়েছেন নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষজন ।

কংসাবতী নদী
কংসাবতী নদী
author img

By

Published : Jun 18, 2020, 7:57 PM IST

পাঁশকুড়া, 18 জুন : পাঁশকুড়া পৌরসভার 14 ও 15 নম্বর ওয়ার্ড ও সংলগ্ন এলাকার বর্ষার জল নিকাশের জন্য কংসাবতী নদীর পাড়ে স্লুইস গেট তৈরির কাজ চলছিল। কিন্তু কোরোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের জেরে দু'মাস ধরে কাজ বন্ধ । সম্প্রতি স্বল্প সংখ্যক কর্মী নিয়ে কাজ শুরু হলেও বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 2013 সালের বন্যা কেড়ে নিয়েছিল সবকিছুই। ফের নতুন তৈরি হয়েছে ঘরবাড়ি। স্লুইস গেটের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় রীতিমতো আতঙ্কে দিন কাটছে নদী তীরবর্তী এলাকার কয়েক হাজার মানুষের।

প্রতিবছরই বৃষ্টিতে কমবেশি প্লাবিত হয় কংসাবতী নদীর তীরে থাকা পাঁশকুড়া পৌরসভার 14 নম্বর ও 15 নম্বর ওয়ার্ড। এর জেরে সেচ বিভাগের তত্ত্বাবধানে গতবছর ডিসেম্বর মাসে 1 কোটি 60 লাখ টাকার খরচে একটি স্লুইস গেট তৈরির কাজ শুরু করা হয়। ওই গেটের মাধ্যমেই পাঁশকুড়া পৌরসভা এলাকায় বর্ষার জমে থাকা জল কংসাবতী নদীতে পড়বে। সেই কাজের জন্য ইতিমধ্যেই 150-200 ফুট নদীর পাড় কেটে ফেলা হয়েছে । কাজও অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। কিন্তু কোরোনা ও লকডাউনের জেরে বন্ধ হয়ে যায় স্লুইস গেট তৈরির কাজ। রাজ্যে বর্ষা ঢুকে গিয়েছে । ধীরে ধীরে কংসাবতী নদীর জলস্তরও বাড়তে শুরু করেছে। কিন্তু নদীর পাড় বাঁধার কাজ এখনও হয়নি। তাই এলাকার মানুষজন আতঙ্কে রয়েছেন । অন্যান্য বছরের মতো কংসাবতী ব্যারেজ থেকে যদি জল ছাড়া হয়, তাহলে স্লুইস গেট সংলগ্ন কেটে ফেলা পাড় দিয়ে নদীর জল ঢুকে প্লাবিত হবে গোটা এলাকা। নির্মীয়মাণ গেটের অদূরে গড় পুরুষোত্তমপুরে 2013 সালে কংসাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বেশ কয়েকটি ব্লক। ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন পাঁশকুড়া পৌরসভার 14 ও 15 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। ঘরবাড়ি থেকে ফসল সবকিছু ভেসে গেছিল। হারানো সবকিছু ফের তিলেতিলে গড়ে তুলেছেন বাসিন্দারা । কিন্তু গেটের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় প্লাবনের আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছেন পাঁশকুড়া পৌরসভার চাঁপাডালি, প্রতাপপুর, রানিহাটি,বেলুন ও গড় পুরুষোত্তমপুর এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসন দ্রুত কাজ সম্পন্ন করছে না । বৃষ্টি নেমে গেছে । এবার নদীতে জল এলেই হুহু করে তা গ্রামে ঢুকবে । বাড়িঘর সব ভেঙে পড়বে । বাঁচব কীভাবে?

image
অল্প সংখ্যক কর্মী নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে
স্থানীয় বাসিন্দা শেখ আশরাফ আলি জানিয়েছেন, "2013 সালের বন্যায় তমলুক পর্যন্ত জল চলে গিয়েছিল। কয়েক হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। সেবার নদীর পাড় ভেঙেছিল । কিন্তু এবার তো নদীর পাড় কাটা রয়েছে। তাই আরও বড় বিপদের আশঙ্কা রয়েছে । আশপাশের চার-পাঁচটি গ্রামের মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন । সবাই দেখতে আসছেন, কাজ কতটা এগিয়েছে । বাড়ি-ঘর ভেঙে যেতে পারে । দ্রুত গেট তৈরির কাজ সম্পন্ন না হলে আবার সব কিছু হারিয়ে যাবে।"নবনির্মিত গেটের পাশেই দোতলা বাড়ি আঙ্গুরা বিবির। 2013-র পর ফের নতুন করে ওই বাড়ি তৈরি করেছিলেন। দুই সন্তানকে নিয়ে সেখানেই বাস। বাড়ির চারদিক থেকে মাটি কেটে নেওয়ায় ইতিমধ্যেই নড়বড়ে বাসস্থান। এখন সারাদিনই আশঙ্কায় রযেছেন তিনি । বলেন, "গতবারের বন্যায় আমাদের বাড়ি ভেঙে গেছিল। আবার তৈরি করেছি। এখন বাড়ির পাশের সব মাটি আলগা রয়েছে। একটু জল লাগলে আমার বাড়ি ভেঙে পড়বে। আমরা গরিব মানুষ আবার কীভাবে বাড়ি করব ? বাঁচব কীভাবে ? আমাদের কি কেউ বাড়ি দেবে ? যদিও ইতিমধ্যেই 80 শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাঁশকুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনোরঞ্জন মালিক। একমাসের মধ্যেই নদীপাড় বেঁধে লকগেটের কাজ সম্পন্ন করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। বলেন, "লকডাউনের জেরে বেশ কয়েকদিন কাজ বন্ধ ছিল। সংক্রমণের ভয়ে স্বল্প সংখ্যক কর্মী দিয়ে কাজ পুনরায় শুরু করা হয়েছে। মাটি আনার সমস্যা তৈরি হয়েছিল। তাও আমরা সমাধান করতে পেরেছি। এক মাসের মধ্যেই স্লুইস গেট কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই ।"

পাঁশকুড়া, 18 জুন : পাঁশকুড়া পৌরসভার 14 ও 15 নম্বর ওয়ার্ড ও সংলগ্ন এলাকার বর্ষার জল নিকাশের জন্য কংসাবতী নদীর পাড়ে স্লুইস গেট তৈরির কাজ চলছিল। কিন্তু কোরোনা সংক্রমণ ও লকডাউনের জেরে দু'মাস ধরে কাজ বন্ধ । সম্প্রতি স্বল্প সংখ্যক কর্মী নিয়ে কাজ শুরু হলেও বন্যার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 2013 সালের বন্যা কেড়ে নিয়েছিল সবকিছুই। ফের নতুন তৈরি হয়েছে ঘরবাড়ি। স্লুইস গেটের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় রীতিমতো আতঙ্কে দিন কাটছে নদী তীরবর্তী এলাকার কয়েক হাজার মানুষের।

প্রতিবছরই বৃষ্টিতে কমবেশি প্লাবিত হয় কংসাবতী নদীর তীরে থাকা পাঁশকুড়া পৌরসভার 14 নম্বর ও 15 নম্বর ওয়ার্ড। এর জেরে সেচ বিভাগের তত্ত্বাবধানে গতবছর ডিসেম্বর মাসে 1 কোটি 60 লাখ টাকার খরচে একটি স্লুইস গেট তৈরির কাজ শুরু করা হয়। ওই গেটের মাধ্যমেই পাঁশকুড়া পৌরসভা এলাকায় বর্ষার জমে থাকা জল কংসাবতী নদীতে পড়বে। সেই কাজের জন্য ইতিমধ্যেই 150-200 ফুট নদীর পাড় কেটে ফেলা হয়েছে । কাজও অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। কিন্তু কোরোনা ও লকডাউনের জেরে বন্ধ হয়ে যায় স্লুইস গেট তৈরির কাজ। রাজ্যে বর্ষা ঢুকে গিয়েছে । ধীরে ধীরে কংসাবতী নদীর জলস্তরও বাড়তে শুরু করেছে। কিন্তু নদীর পাড় বাঁধার কাজ এখনও হয়নি। তাই এলাকার মানুষজন আতঙ্কে রয়েছেন । অন্যান্য বছরের মতো কংসাবতী ব্যারেজ থেকে যদি জল ছাড়া হয়, তাহলে স্লুইস গেট সংলগ্ন কেটে ফেলা পাড় দিয়ে নদীর জল ঢুকে প্লাবিত হবে গোটা এলাকা। নির্মীয়মাণ গেটের অদূরে গড় পুরুষোত্তমপুরে 2013 সালে কংসাবতী নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বেশ কয়েকটি ব্লক। ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন পাঁশকুড়া পৌরসভার 14 ও 15 নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। ঘরবাড়ি থেকে ফসল সবকিছু ভেসে গেছিল। হারানো সবকিছু ফের তিলেতিলে গড়ে তুলেছেন বাসিন্দারা । কিন্তু গেটের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় প্লাবনের আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছেন পাঁশকুড়া পৌরসভার চাঁপাডালি, প্রতাপপুর, রানিহাটি,বেলুন ও গড় পুরুষোত্তমপুর এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, প্রশাসন দ্রুত কাজ সম্পন্ন করছে না । বৃষ্টি নেমে গেছে । এবার নদীতে জল এলেই হুহু করে তা গ্রামে ঢুকবে । বাড়িঘর সব ভেঙে পড়বে । বাঁচব কীভাবে?

image
অল্প সংখ্যক কর্মী নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে
স্থানীয় বাসিন্দা শেখ আশরাফ আলি জানিয়েছেন, "2013 সালের বন্যায় তমলুক পর্যন্ত জল চলে গিয়েছিল। কয়েক হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। সেবার নদীর পাড় ভেঙেছিল । কিন্তু এবার তো নদীর পাড় কাটা রয়েছে। তাই আরও বড় বিপদের আশঙ্কা রয়েছে । আশপাশের চার-পাঁচটি গ্রামের মানুষ আতঙ্কে রয়েছেন । সবাই দেখতে আসছেন, কাজ কতটা এগিয়েছে । বাড়ি-ঘর ভেঙে যেতে পারে । দ্রুত গেট তৈরির কাজ সম্পন্ন না হলে আবার সব কিছু হারিয়ে যাবে।"নবনির্মিত গেটের পাশেই দোতলা বাড়ি আঙ্গুরা বিবির। 2013-র পর ফের নতুন করে ওই বাড়ি তৈরি করেছিলেন। দুই সন্তানকে নিয়ে সেখানেই বাস। বাড়ির চারদিক থেকে মাটি কেটে নেওয়ায় ইতিমধ্যেই নড়বড়ে বাসস্থান। এখন সারাদিনই আশঙ্কায় রযেছেন তিনি । বলেন, "গতবারের বন্যায় আমাদের বাড়ি ভেঙে গেছিল। আবার তৈরি করেছি। এখন বাড়ির পাশের সব মাটি আলগা রয়েছে। একটু জল লাগলে আমার বাড়ি ভেঙে পড়বে। আমরা গরিব মানুষ আবার কীভাবে বাড়ি করব ? বাঁচব কীভাবে ? আমাদের কি কেউ বাড়ি দেবে ? যদিও ইতিমধ্যেই 80 শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাঁশকুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনোরঞ্জন মালিক। একমাসের মধ্যেই নদীপাড় বেঁধে লকগেটের কাজ সম্পন্ন করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। বলেন, "লকডাউনের জেরে বেশ কয়েকদিন কাজ বন্ধ ছিল। সংক্রমণের ভয়ে স্বল্প সংখ্যক কর্মী দিয়ে কাজ পুনরায় শুরু করা হয়েছে। মাটি আনার সমস্যা তৈরি হয়েছিল। তাও আমরা সমাধান করতে পেরেছি। এক মাসের মধ্যেই স্লুইস গেট কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে। আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নেই ।"
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.