হলদিয়া, 7 ফেব্রুয়ারি : আজ শিল্পশহর হলদিয়ায় এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী । প্রথমে রাজনৈতিক কর্মসূচি এবং তারপর সরকারি কর্মসূচি । একুশের বঙ্গ-ভোটের আবহে এই প্রথমবার বাংলায় বিজেপির কোনও জনসভায় নরেন্দ্র মোদি । আজ নরেন্দ্র মোদির এই কর্মসূচি বিজেপির নীলবাড়ি দখলের লড়াইয়ে বাড়তি হাওয়া দিল বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ।
গেরুয়া শিবিরের তরফে দাবি করা হচ্ছে আজকের সভায় দু'লাখেরও বেশি জনসমাগম হয়েছে । সভাস্থানের বাইরে আরও এক লাখ কর্মী ও সমর্থক ছিলেন বলে দাবি করছেন দিলীপ ঘোষ । সভামঞ্চে বঙ্গ-বিজেপির অন্য নেতাদের সঙ্গে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ও ।
বঙ্গ-রাজনীতির ময়দানে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা যথেষ্টই গুরুত্বপূর্ণ । এককথায় বলতে গেলে শুভেন্দু-গড় । আজ সেই শুভেন্দু-গড়েই নরেন্দ্র মোদি । হলদিয়ার হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে সভা করলেন তিনি । হলদি নদীর যে পাড়ে তিনি সভা করলেন, তার উলটো দিকেই নন্দীগ্রাম । রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, শুভেন্দু-গড়ের গুরুত্ব বিচার করেই ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির প্রথম রাজনৈতিক সভাস্থান ঠিক করা হয়েছে ।
আরও পড়ুন : আন্তর্জাতিক চক্র ভারতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে, সরব মোদি
কিন্তু আজ হলদিয়ার সভামঞ্চ থেকে শুভেন্দু অধিকারীর বিষয়ে একটি বাক্যও ব্যবহার করতে দেখা গেল না নরেন্দ্র মোদিকে । শুধুমাত্র তৃণমূলের অপশাসনের কথা তুলে ধরার সময় ঘাসফুল ছেড়ে পদ্মশিবিরে নাম লেখানো শুভেন্দু-রাজীবদের দিকে হাত তুলে দেখান । আর ভাষণ শেষে শুভেন্দুদের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির কয়েক মুহূর্তের কুশল বিনিময় । ব্যাস, এইটুকুই । এছাড়া নজরে পড়ার মতো আর কিছুই দেখা গেল না ।
জার্সিবদলের পর থেকেই শুভেন্দু বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছেন গেরুয়া শিবিরে । কখনও জনসভা, কখনও আবার রোড শো... শুভেন্দুর চাছাছোলা ভাষায় আক্রমণ বাড়তি হাওয়া দিয়েছে বিজেপির পালে । এই পরিস্থিতিতে অনেকেই মনে করছিলেন, আসন্ন ভোটে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে শুভেন্দুকেই প্রজেক্ট করতে পারে বিজেপি । কিন্তু আজ নরেন্দ্র মোদির ভাষণে যেন অন্য ছবিই ধরা পড়ল ।
আরও পড়ুন : শুভেন্দুর বিজেপিতে যোগদানের পর প্রথমবার অধিকারী-গড়ে মোদি
বরং, ভোটের আগে শুভেন্দুকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে নারাজ । "নন্দীগ্রামের ভূমিপুত্রের" বিষয়ে কোনও বাক্যব্যয় না করে যেন এই বার্তাটাই আজ দিয়ে গেলেন নরেন্দ্র মোদি । রাজ্য রাজনীতির পর্যবেক্ষকদের একটি বড় অংশ অন্তত এমনটাই মনে করছেন ।
এর আগে লোকসভা ভোটের সময় দেখা গিয়েছিল, নরেন্দ্র মোদির মুখ সামনে রেখেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল বিজেপি । সাফল্যও এসেছিল । এবার বিধানসভা ভোটেও কি তবে নরেন্দ্র মোদির মুখ সামনে রেখেই নীল বাড়ির দখল নিতে চাইছে বিজেপি ? সেই প্রশ্নই এখন ঘোরাফেরা করছে রাজ্য রাজনীতির আনাচে-কানাচে ।