কাঁথি, 6 এপ্রিল : সুরেন্দ্রনাথ ভুঁইঞা পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি এক নম্বর ব্লকের করঞ্জি গ্রামের বাসিন্দা ৷ সাত বছর আগে দিল্লির বাসিন্দা পরভিন তিওয়ারির সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর এক মেয়ের ৷ বিয়ের পর তাঁদের এক কন্যা সন্তানও হয় ৷ ছয় মাস আগে পরভিনের স্ত্রী ও পাঁচ বছরের মেয়ে কাঁথিতে বাবার বাড়ি আসে ৷ গত মাসে শ্বশুরবাড়ি আসার কথা ছিল পরভিনেরও ৷ কিন্তু কাল হয়ে দাঁড়াল কোরোনা ৷ কোরোনা সংক্রমণ রুখতে লকডাউন দেশজুড়ে ৷ লকডাউনে দিল্লিতেই আটকা পড়ে যান পরভিন ৷ কিন্তু, কতদিন আর পরিবার ছেড়ে থাকা যায় ৷ তাই বাধ্য হয়ে সাইকেলে কাঁথির উদ্দেশে রওনা ৷ টানা 9 দিন সাইকেল চালিয়ে গতরাতে শ্বশুরবাড়ি পৌঁছান পরভিন ৷
রাতে সব স্বাভাবিকই ছিল ৷ কিন্তু, সকালে সুরেন্দ্রনাথের বাড়িতে দিল্লি থেকে জামাই এসেছে শুনতেই আতঙ্ক শুরু হয় গ্রামবাসীদের মধ্যে ৷ বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা ৷ খবর পেয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তারা গ্রামে গিয়ে হাজির হন ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে চেষ্টা করেন ৷ কিন্তু, গ্রামবাসীদের একটাই দাবি, পরভিনকে 14দিন গ্রামের বাইরে থাকতে হবে ৷ সেই মতো পরিস্থিতি সামাল দিতে পরভিনকে স্থানীয় নয়াপুট সাইক্লোন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ এখানে রাজ্য সরকার নির্দেশিত কোয়ারান্টাইন সেন্টার রয়েছে ৷ কিন্তু, তাও মানতে রাজি হননি সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা ৷ অবশেষে বাধ্য হয়ে তাঁকে কয়েক কিলোমিটার দূরে সাবাজপুটে একটি কোয়ারান্টাইন সেন্টারে রাখা হয় ৷
স্থানীয় গ্রামের বাসিন্দা বিকাশ গিরি বলেন, "এই এলাকায় অনেকেই ভিনরাজ্য থেকে এসেছে । কিন্তু তাদের শরীরে এখনও পর্যন্ত কোরোনার কোনও উপসর্গ দেখা যায়নি ৷ তা সত্ত্বেও ছেলেগুলো স্থানীয় একটি কোয়ারান্টাইনে আছে । সেও 14 দিন বাইরে থেকে এখানে শ্বশুরবাড়িতে এলে আমাদের কোনও আপত্তি নেই, সে তো এলাকার জামাই ।" কাঁথি এক নম্বর ব্লকের BDO লিপন তালুকদার বলেন, "ঘটনাটি ঘটেছিল ঠিক । কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশ মতো ওই ব্যক্তিকে সঠিক জায়গায় রাখা হয়েছে ।"