খেজুরি, 13 অগস্ট: শুভেন্দু অধিকারীর গড় খেজুরি দুই পঞ্চায়েত সমিতি গঠনের আগেই উলটপুরাণ । পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনের আগে খেজুরি পঞ্চায়েত সমিতি ফের সংখ্যাগরিষ্ঠতায় দখল নিল তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলে যোগদান বিজেপির প্রতীকে জেতা পঞ্চায়েত সমিতির জয়ী দুই সদস্য যোগ দিল তৃণমূলে ।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার খেজুরি দুই নম্বর ব্লকের মোট 15টি পঞ্চায়েত সমিতির আসনের মধ্যে বিজেপি নয়টিতে জয়লাভ করে । তৃণমূল ছয়টি আসনে জয়লাভ করে । দুই নম্বর ব্লকের পাঁচটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে তিনটিতে বিজেপি বোর্ড গঠন করে এবং দু'টিতে তৃণমূল বোর্ড গঠন করে । সোমবার পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনের আগে রবিবার বিজেপির দু'জন পঞ্চায়েত সমিতির জয়ী প্রার্থী কাঁথিতে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব তন্ময় ঘোষ, বিদায়ী জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক এবং কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি তরুণ মাইতির হাত ধরে খেজুরি দুই নম্বর ব্লকের বিজেপির প্রতীকে জেতা উদয় শংকর মাইতি এবং পিপাসা দাস তৃণমূলে যোগদান করেন। বর্তমানে তৃণমূলের ম্যাজিক ফিগার আটটি এবং বিজেপির সাতটি।
পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূল বোর্ড গঠন করবে বলে আত্মবিশ্বাসী। বিজেপি নেতা উদয় শংকর মাইতি তৃণমূলে যোগদান করে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তিনি বলেন, "খেজুরির বিধায়ক শান্তনু প্রামাণিক-সহ নেতৃত্বরা মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন। সন্ত্রাস কবলিত এলাকায় হিসেবে তৈরি করছেন। নেতাদের চারিত্রিক গঠন নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। সুপারিসে জিতে আসা বিধায়ক বিচার জানেন না । কথা বলতে জানেন না। আমাকে এবার পঞ্চায়েত সমিতি ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসরাই জিতিয়েছে। আমি তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটের জয়লাভ করেছি। তাই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলাম যোগ্য সম্মান দিতে। মা-মাটি-মানুষের সরকারের উন্নয়নের জোয়ারে শামিল হতে। বিজেপির অন্দরে অনেক রেষারেষি কোন্দল, আমাকে বিজেপির একাংশ নেতা-কর্মীরা কৌশল করে হারাতে চেষ্টা করেছিল।" প্রায় একই অভিযোগ করেছেন বিজেপির আরও এক পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য পিপাসা দাস ।
যদিও খেজুরির বিধায়ক শান্তনু প্রামানিক বলেন, "তৃণমূল বোমা-বন্দুক ভয় ভীতি প্রদর্শন করিয়ে ওদেরকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে । খেজুরিতে বেশ কয়েক দিন ধরে বিজেপির কর্মী অনেক নেতৃত্বদের গুলি করে আহত করেছে মারধর করেছে, বম্বিং করেছে, অশান্ত পরিবেশ তৈরি করেছে তৃণমূল কংগ্রেস ।" যদিও পিপাসা দাসের স্বামী বলেন, "বেশ কিছুদিন ধরে তৃণমূলের লোকেরা স্ত্রীকে তৃণমূলের যোগদান করার জন্য চাপ দিচ্ছিল । আমি কাজের সুবাদে বাইরে থাকি । আমার স্ত্রী গত আট তারিখ থেকে নিখোঁজ রয়েছে । তৃণমূলের লোকেরা ওকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছে।"
আরও পড়ুন: পার্থর বিধানসভায় প্রাক স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন মমতা
তৃণমূল রাজ্য নেতা তন্ময় ঘোষ জানান, মা-মাটি-মানুষের সরকারের উন্নয়নকে ভালোবেসে বিজেপির মণ্ডল সভাপতি তথা সদ্য পঞ্চায়েত সমিতি থেকে জয় লাভ করা দুই সদস্য সদস্যা তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা হাতে যোগদান করলেন। তারা নিজেরাই জানালেন বিজেপির মধ্যে সন্ত্রাস রেষারেষি নেতা-কর্মীদের সম্মান না দেওয়া সন্ত্রাস এই সমস্ত প্রতিবাদ জানাতেই যোগদান করেছেন। এই ঘটনাকে ঘিরে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।