নন্দীগ্রাম, 31 অক্টোবর : "যতক্ষণ না আমার মুখ থেকে কিছু শুনছেন এইসব বাজারি সংবাদ উপেক্ষা করুন এবং নিজের কাজ নিজে করুন ।" আজ দুপুরে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে বিজয়া সম্মেলনীর অনুষ্ঠানে অনুগামীদের এই বার্তা দিলেন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী । তবে আজও শুভেন্দুবাবুর মঞ্চে ছিল না কোনও দলীয় পতাকা বা কোনও দলীয় স্লোগান । সভাশেষে নন্দীগ্রামের ভূমি আন্দোলনের স্মৃতি উসকে দিয়ে 10 নভেম্বর গোকুলনগরে বৃহত্তর সমাবেশের ডাক দেন শুভেন্দু অধিকারী ।
মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে ঘিরে বেশ কয়েক মাস ধরেই রাজ্য রাজনীতিতে চলছে জল্পনা । আর নন্দীগ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়ে আজ তাঁর অনুগামীদের বার্তা দিলেন, "আমার নিজের মুখ থেকে না শোনা পর্যন্ত বাজারি সংবাদ উপেক্ষা করুন ।" পাশাপাশি বিরোধীদের কটাক্ষের সুরে বলেন , "আমি প্যারাসুটেও নামিনি এবং লিফটেও উঠিনি । সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে উঠেছি । আমাকে এসব করে কোনও লাভ হবে না । ছোটোলোকদের দিয়ে বাজে কথা বলিয়ে ভাবছে আমি উত্তর দেব । কুকুর পায়ে কামড়ালে মানুষ কখনও কুকুরের পায়ে কামড়ায় না । লক্ষ্মণ শেঠ বলেছিলেন, শুভেন্দু নয়াচরে ঢুকলে পা কেটে হাতে ধরিয়ে দেব । যেদিন বলেছিলেন তার ঠিক পরের দিন নয়াচরে চলে গেছি ।"
তিনি আরও বলেন, "আমার বিভিন্ন সময়ে পদের পরিবর্তন হয়েছে এবং হতেও পারে । কখনও কাঁথি পৌরসভার কাউন্সিলর । কখনও দক্ষিণ কাঁথির বিধায়ক । কখনও চার সালে নন্দীগ্রামে লড়াই করার তকমা ছিল । আবার কখনও বিধায়ক মন্ত্রী । আমরা ভোটে একটা দল থেকে লড়ি । অন্য একটি দলকে হারাই । কিন্তু ভোটের পরে সংকীর্ণ রাজনীতি আপনার জনপ্রতিনিধি কখনও করেনি ।"
আজ ফের বামেদের অতীত মনে করিয়ে দিয়ে তমলুকের প্রাক্তন সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠকে কটাক্ষ করে শুভেন্দু বলেন, "লক্ষ্মণ শেঠের পতন হয়েছিল কেন বলুন তো ? লক্ষ্মণ শেঠ যখন সুতির পায়জামা-পাঞ্জাবি পরে, ঝোলা ব্যাগ নিয়ে রানিচকের শ্রমিক ভবনে থেকে বামপন্থা করত তখন মানুষ সঙ্গে ছিল । কিন্তু যখন লক্ষ্মণ শেঠ 35 লাখের গাড়ি চড়তে শুরু করল, সুতির পায়জামা-পাঞ্জাবি ছেড়ে দিয়ে কোট-টাই, বিদেশি ঘড়ি, বিদেশি কলম, বিদেশি চশমা, সাদা চুলগুলো কালো করা শুরু করল... ঠিক তার পরে দেখুন পতন শুরু হয়ে গেছে । আপনারা বলুন তো দেখি 2004 সালের শুভেন্দু অধিকারী ও 2020 সালের শুভেন্দু অধিকারী এক আছে নাকি নেই?"