হলদিয়া, 29 অগস্ট: বেপরোয়া লরির চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল মহিলা-সহ দুজনের । আহত হয়েছেন কমপক্ষে আটজন ৷ তাঁদের মধ্যে দু'জন গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৷ ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার হলদিয়ার গিরিশ মোড় সংলগ্ন এলাকায় । মৃতরা হলেন স্থানীয় গ্রামবাসী ৷ বাসুলিয়ার বাসিন্দা শেখ হোসেন আলি (41) এবং ভাগ্যবন্তপুরের বাসিন্দা নীলিমা কালসা (56) । ঘাতক লরিটি-সহ চালক পলাতক ৷
হলদিয়ার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রাহুল পান্ডে বলেন, "আজ সকালে মর্মান্তিক একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে । ঘটনাস্থলে এক মহিলা ও এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে ৷ বাকি 2 আহতকে পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে । সেই সঙ্গে ঘাতক গাড়িটির সন্ধানে খবর পাঠানো হয়েছে সমস্ত থানাগুলিকে । দেহগুলিকে ময়নাতদন্তের জন্য হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ পাশাপাশি খবর দেওয়া হয়েছে মৃতের পরিজনদেরও ।"
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বেশ কয়েকজনকে পিষে দিয়ে চলে যায় । যার জেরে ঘটনাস্থলে এক মহিলা ও এক সাইকেল আরোহীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে । এই ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় এলাকা জুড়ে । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ । গুরুতর জখম অবস্থায় এক মহিলা ও ব্যক্তিকে উদ্ধার করে প্রথমে হলদিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । তাঁদের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তমলুক জেলা সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে । বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয় । তবে ঘাতক ট্রাকটির এখনও কোনও সন্ধান পাওয়া যায়নি ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এ দিন সকালে হলদিয়া গিরিশ মোড়ের কাছে একটি দশ চাকার লরি প্রচণ্ড গতিতে ছুটে আসে ৷ সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একাধিক মানুষকে ধাক্কা মারে । সেই সময় রাস্তার পাশে বাজারের উপর সবজি নিয়ে বিক্রি করছিলেন অনেকে ৷ অপরদিকে শিল্পাঞ্চলের কাজে যোগ দিতেও শ্রমিকরা যাচ্ছিলেন । ব্যস্ত মোড় হওয়ায় দুর্ঘটনায় লরির তলায় একাধিক ব্যক্তি চলে আসে । তবে লরিটি তাঁদের ধাক্কা মেরেই ঘটনাস্থল থেকে চম্পট দেয় । ঘটনাস্থলেই সাইকেল আরোহী ও মহিলার মৃত্যু হয় । গুরুতর জখম হন আরও দু'জন ।
স্থানীয়রা মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে । এর জেরে হলদিয়া মেছেদা রাজ্য সড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয় । খবর পেয়ে দুর্গাচক থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে দেহগুলিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে । তবে ঘাতক ট্রাকটিকে পাকড়াও করার দাবি তুলেছে স্থানীয়রা ।
আরও পড়ুন: ঝাড়খণ্ডে 12 জনকে পিষে দিল গাড়ি, মৃত 3; শোকপ্রকাশ মুখ্যমন্ত্রীর
স্থানীয়দের দাবি, এই এলাকাগুলিতে সকালে পুলিশের নজরদারি সেভাবে থাকে না । তাই শিল্পাঞ্চলের গাড়িগুলি প্রচণ্ড গতিতে ছুটে চলে । এই সময় শ্রমিক থেকে সাধারণ মানুষকে পথে বেরিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় । গোটা ঘটনায় প্রশাসনকে তৎপর হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ।