পটাশপুর, 31 অক্টোবর : সম্পত্তি নিয়ে শরিকি বিবাদের জের । পাড়ার মাতব্বরদের নিদানে একঘরে পরিবার । পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের ঘটনা । যাতায়াতের রাস্তা সব দিক থেকে বন্ধ । কখনও পুকুরের জলে নেমেও যাতায়াত করতে হচ্ছে তাদের ।
পটাশপুরের 2 ব্লকের প্রতাপদিঘি গ্রামের বাসিন্দা জ্যোতির্ময় কামিলা । বৃদ্ধা মা, স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে পাঁচজনের পরিবার । সম্পত্তি নিয়ে শরিকি বিবাদ চলছে প্রায় তিন বছর । আর এই বিবাদকেই হাতিয়ার করে কামিলা পরিবারের যাতায়াতের রাস্তা সবদিক থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় ।
যাতায়াত করার জন্য কখনও মাঠ-পথে, কখনও বা পুকুরের ধারে জলে নেমে যাতায়াত করতে হচ্ছে এই পরিবারকে । আমফান ঝড়ের সময় ভেঙে পড়েছে বাড়ি । কিন্তু তা সারানোর উপায় নেই । কারণ পাড়ার মাতব্বররা যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করে রেখেছেন । তাই বাড়ি সারানোর জন্য মালপত্র ঢোকাতে পারছে না এই পরিবার ।
পরিবারের তরফে শিবরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়ে । তার ভিত্তিতে গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে দুই পক্ষকেই নোটিস পাঠানো হয় । কিন্তু বিরোধী পরিবার হাজির না হওয়ায় ভেস্তে যায় বৈঠক । অভিযুক্ত শক্তিপদ কামিলার দাবি , আজ থেকে কয়েক বছর আগে সম্পত্তি বিবাদে মারামারি হয় । যা নিয়ে পটাশপুর থানায় অভিযোগ করেন জ্যোতির্ময় কামিলা । আগে সেই মামলা প্রত্যাহার করতে হবে । তারপরই তাঁরা আলোচনায় বসবেন ।
শিবরামপুর গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান গৌতম জানা বলেন, "এই ঘটনা বহু পুরনো । আমদের কাছে জ্যোতির্ময়বাবু আর্জি নিয়ে এসেছিলেন । সেই অনুযায়ী আমরা ওঁর প্রতিবেশীদের সালিশি সভার জন্য ডাকি । কিন্তু সেখানে কেউ উপস্থিত হননি । অনেক পুরনো মামলা । আমরা তাঁকে উচ্চপদস্থ কর্তৃপক্ষের কাছে যেতে বলেছি ।"
কিন্তু পটাশপুর 2 নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চন্দন সাহু অভিযোগ অস্বীকার করেন । বলেন, এইসব মিথ্যা খবর । এই প্রথম তিনি শুনলেন বলে দাবি করেন । তিনি বলেন, "আমার ব্লকে একটা জায়গা নেই, যেখানে বয়কট আছে । আসলে এই লোক প্রশাসনিক কর্তাদের সহ্য করতে পারছে না । হতাশায় ভুগছে । তাই এইরকম বলছে । আপনারা নিয়ে আসুন তাঁদের । 10 মিনিটে মীমাংসা করে দেব ।"
এই বিষয়ে এগরা মহাকুমা শাসক অপ্রতিম ঘোষ বলেন, "আমি অভিযোগ পাওয়ার পর স্থানীয় থানাকে বিষয়টি দেখতে বলেছিলাম । যাতায়াতের রাস্তা করে দেওয়ার কথাও জানিয়েছিলাম । রাস্তার সুরাহা না হলে অভিযোগকারীকে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেছিলাম । কিন্তু ওঁরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি ।"
এই বিষয়ে অভিযুক্তরা ক্যামেরার সামনে মুখোমুখি হতে নারাজ ।