কাঁথি (পূর্ব মেদিনীপুর), 28 নভেম্বর: সমুদ্রে পড়ে নিখোঁজ কাঁথির মৎস্যজীবীকে (Missing Fisherman of Contai) পরিকল্পিতভাবে খুনের অভিযোগ ৷ ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিতে অস্বীকার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে মৎস্যজীবী নিমাই বেরার পরিবার ৷ ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির জুনপুট কোস্টাল থানা এলাকায় ৷ পরিবারের অভিযোগ নিমাই বেরাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করেছেন দয়াময়ী ট্রলারের মালিক সঞ্জয় জানা এবং তাঁর কর্মীরা (Murder Allegation by Family of Missing Fisherman) ৷
প্রসঙ্গত, পরিবারের অভিযোগ গত সোমবার বছর 45-এর নিমাই বেরাকে জোর করে কাজ করার জন্য নিয়ে যায় সঞ্জয় মাইতির দয়াময়ী ট্রলারের মাঝি বিশ্বনাথ বাটুল ও ম্যানেজার পল্লব গিরি ৷ গত 21 নভেম্বর সমুদ্রে মাছ ধরতে যান তাঁরা ৷ মোট 13 জন মৎস্যজীবী সমুদ্রে গিয়েছিলেন ৷ কিন্তু, মাছ ধরে ট্রলারের সবাই ফিরলেও, নিমাই ফেরেননি ৷ 23 নভেম্বর নিমাইয়ের পরিবারের লোকজন খোঁজ নিলে তাঁদের জানানো হয়, অমাবস্যার কারণে সমুদ্রে পড়ে গিয়েছেন নিমাই ৷ কিন্তু, পরিবারের লোকজন সেই দাবি মানতে নারাজ ৷
তাঁদের অভিযোগ, নিমাইয়ের সমুদ্রে পড়ে যাওয়ার খবর পরিবারকে জানায়নি ৷ তাঁদের অভিযোগ নিমাইকে কার্যত জোর করে সমুদ্রে নিয়ে গেছিলেন বিশ্বনাথ এবং পল্লব ৷ এমনকি ওই ট্রলারের মালিক এবং মাঝির থেকে টাকাও পেতেন নিমাই ৷ ফলে পুরো ঘটনায় পরিকল্পিতভাবে নিমাইকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর পরিবারের ৷ তবে, এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধেও অসহযোগিতার অভিযোগ করেছে নিমাই বেরার পরিবার ৷
আরও পড়ুন: প্রাক্তন নৌসেনা কর্মীর দেহাংশ ও খুনে ব্যবহৃত করাত উদ্ধার
তাঁদের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে জুনপুট কোস্টাল থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে পুলিশের তরফে সাহায্য করা হয়নি ৷ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিমাই বেরার ভাই গৌরাঙ্গ ৷ তিনি জানিয়েছেন, নিমাইয়ের ডানহাত কাটা ৷ তাই বাড়িতে থেকে ছোটখাট কাজ করতেন ৷ ট্রলারের মালিকের থেকে কাজের টাকা পেতেন নিমাই এবং ওই ট্রলারের মাঝি নিমাইয়ের থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন ৷ সেই টাকা কেউই দিচ্ছিলেন না ৷ যা নিয়ে চিন্তায় ছিলেন নিমাই ৷
তবে, কাঁথি মৎস্যজীবী উন্নয়ন সমিতির সভাপতি আমিন সোহেল বলেন, ‘‘ঘটনার খবর পেয়ে আমরা পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি ৷ তাঁর পরিবারকে আইনের মাধ্যমে যাবার কথা বলা হয় ৷ নিখোঁজ মৎস্যজীবীর পরিবারের পাশে আমরা ও মৎস্য দফতর থাকবে বলে আশ্বাসও দিয়েছি ৷’’ অন্যদিকে, ট্রলারের মালিক সঞ্জয় জানা খুনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ৷ তিনি বলেন, ‘‘গভীর সমুদ্রে একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে ৷ খুব দুঃখজনক ঘটনা ৷ বিষয়টি আমি জানতে পেরে তাঁর পরিবারকে সবরকম সহযোগিতার কথা জানিয়েছি ৷’’