হলদিয়া, 4 মে : লকডাউনে কেউ যাতে অভুক্ত না থাকে তার জন্য ত্রাণ বিতরণ করছেন শুভেন্দু অধিকারী । যা দুস্থদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা । কিন্তু হলদিয়া পৌরসভার 22 নম্বর ওয়ার্ডে সেই ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ উঠল । ত্রাণ না পেয়ে গতকাল কাউন্সিলরের বাড়ি ঘেরাও করেন স্থানীয়রা । বাড়িতে থাকলেও একবারের জন্যও তিনি বের হননি । পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয় । সকলের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ দেখানো বন্ধ হয় ।
কোরোনার সংক্রমণ রুখতে দেশে চলছে লকডাউন । বন্ধ পরিবহন পরিষেবা । অত্যাবশ্যকীয় কাজ ছাড়া বন্ধ বাকি সবই । কাজ নেই রাজ্যের বহু মানুষের । কাজ থাকলেও রোজগার বন্ধ, সেই সংখ্যাও কম নয় । এই পরিস্থিতিতে শুভেন্দু অধিকারী পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়াসহ রাজ্যের একাধিক জেলায় ত্রাণ বিতরণ করছেন । দলীয় নেতা-কর্মীরা তা মানুষের হাতে তুলে দিচ্ছেন । কিন্তু সেই ত্রাণ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠল হলদিয়া পৌরসভার 22 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে । এলাকার বাসিন্দারা ত্রাণ না পেয়ে গতকাল বিকেল থেকে কাউন্সিলর পঞ্চানন ভুঁইঞার বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ।
তাঁদের অভিযোগ, পঞ্চাননবাবু শনিবার এলাকার দুস্থদের বাড়িতে ডেকেছিলেন ত্রাণ বিতরণের জন্য । সেইমতো শনিবার বিকেলে ওয়ার্ডের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ ভিড় জমিয়েছিলেন পঞ্চাননবাবুর বাড়িতে । কিন্তু দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও তাঁরা ত্রাণ না পেয়ে বাড়ি ফিরে যান । ত্রাণ না পাওয়ায় কিছু সময়ের জন্য চলে বিক্ষোভও । পরে পঞ্চাননবাবু আশ্বস্ত করেন, রবিবার বিকেলে ত্রাণ বিতরণ করা হবে । সেইমতো গতকাল বিকেল তিনটের পর থেকে ফের কাউন্সিলরের বাড়ির সামনে হাজির হন ওয়ার্ডের বাসিন্দারা । বিকেল গড়িয়ে সন্ধে নামলেও কাউন্সিলরের দেখা মেলেনি । যে কারণে বিকেল থেকেই ত্রাণের দাবিতে তাঁর বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন তাঁরা । পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ।
তাঁদের মধ্যে অনেকেই বলছেন, বাসিন্দাদের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে প্রতিটি ব্লক থেকে অঞ্চলে প্রতিনিয়ত ট্রাক ট্রাক ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন শুভেন্দু অধিকারী । সেই সামগ্রী সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে না দিয়ে নেতারাই মাঝপথে আত্মসাৎ করছেন । ফলে খাদ্যের অভাবে সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ ।
22 নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি সঞ্জয় দাস বলেন, "আমাদের নেতা (শুভেন্দু অধিকারী) এলাকার দুস্থ মানুষদের জন্য প্রতিনিয়ত ত্রাণ পাঠিয়ে যাচ্ছেন । কিন্তু কাউন্সিলর সেই সামগ্রী হয় অন্য কোথাও পাচার করে দিচ্ছেন, অথবা নিজে আত্মসাৎ করছেন । যে কারণে দুস্থরা এই দুর্দিনে সামান্য খাবারটুকুও পাচ্ছেন না । কাউন্সিলরের এই অন্যায়ের কারণে দলীয়ভাবে আমরাও সাধারণ মানুষের কাছে কোণঠাসা হয়ে পড়ছি ।"
কাউন্সিলরের সঙ্গে যোগাযোগ হলেও তিনি এবিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ।