কাঁথি, 1 ফেব্রুয়ারি : কাঁথি পৌরসভায় কোটি কোটি টাকার আর্থিক তছরুপের অভিযোগ ৷ রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী পৌরসভার চেয়ারম্যান থাকাকালীন বড়সড় আর্থিক দুর্নীতি সামনে এসেছে ৷ ইতিমধ্যেই প্রাক্তন এক্সিকিউটিভ অফিসার এবং বর্তমান অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়রের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৷ জানা গিয়েছে, 2017-18 আর্থিক বছরে গ্রিন সিটি মিশন প্রকল্পে কাঁথি শহরের সৌন্দর্যায়ন এবং পথবাতি বসানোর টেন্ডারে ধরা পড়েছে বড়সড় গরমিল । সেসময় কাঁথি পৌরসভার চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন সৌমেন্দু অধিকারী ৷ স্বাভাবিকভাবেই দুর্নীতিতে সৌমেন্দু জড়িত আছেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ৷
কাঁথি পৌরসভায় আর্থিক দুর্নীতির (Contai Municipality Financial Fraud Case ) অভিযোগ উঠেছিল আগেই ৷ বিষয়টি নিয়ে মাসখানেক আগে রাজ্য সরকার তদন্তের নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসনকে । তদন্ত কমিটিতে ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক শ্বেতা আগরওয়াল, জেলা পুলিশ সুপার অমরনাথ কে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মানব সিংহল প্রমুখ ৷ প্রায় একমাস ধরে এই আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত চালায় কমিটি ৷ জানা গিয়েছে, সৌমেন্দু অধিকারী পরিচালিত তৎকালীন কাঁথি পৌরবোর্ডের হিসেবে কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতি ধরা পড়েছে ৷ শহরের বাসিন্দা পল্লব দত্তের অভিযোগের ভিত্তিতে সোমবার পৌরসভার প্রাক্তন এক্সিকিউটিভ অফিসার সমীর দে এবং বর্তমান অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার দিলীপ চৌহানের বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির 409, 477/এ ও 120/ বি ধারায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে ৷
এছাড়াও এই দুর্নীতিতে আরও বেশ কয়েকজন ঠিকাদার, প্রাক্তন কাউন্সিলররা জড়িত আছেন বলে পুলিশের অনুমান ৷ " জানা গিয়েছে, সৌমেন্দু অধিকারী কাঁথি পৌরসভার মাথায় থাকার সময় গ্রিন সিটি মিশন প্রকল্পে সৌন্দর্যায়ন ও পথবাতি বসানোর জন্য বেশ কয়েক কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল রাজ্যের তরফে ৷ অভিযোগ, নির্দিষ্ট সংখ্যার থেকে কম সংখ্যক পথবাতি বসানো হয়েছে । এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে শহরের একাধিক ওয়ার্ডে এই পথবাতির সংখ্যা নির্ধারণ ও চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু করে তদন্ত কমিটি । তাতেই দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে এবং সেই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে পৌরসভার প্রাক্তন এক্সিকিউটিভ অফিসার সমীর দে এবং বর্তমান অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার দিলীপ চৌহানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) মানবকুমার সিংলা ।
আরও পড়ুন : বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় অনুব্রত মণ্ডলকে ফের তলব সিবিআইয়ের
এ ব্যাপারে কাঁথির পৌর প্রশাসক হরিসাধন দাস অধিকারী বলেন, 'একমাস ধরে দুর্নীতির তদন্ত হয়েছে । আমি তাতে সহযোগিতা করেছি । প্রাথমিকভাবে দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে । তারই ভিত্তিতে মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ । সৌমেন্দু অধিকারী সেসময় পৌরসভায় চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন । স্বাভাবিকভাবে দুর্নীতির মাথা কে, তা অজানা নয় আমাদের । তাই কান টানলে যে মাথার হদিশ মিলবে এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত ।''