ভগবানপুর, 14 নভেম্বর : "পুলিশ যদি ছেড়েও দেয়, সিবিআই তদন্ত করে জেলে পাঠানোর দায়িত্ব আমাদের ৷" তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে এই মন্তব্য করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) ৷ গতকাল পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুর বিধানসভার ভগবানপুরে বিজেপি নেতা চন্দন মাইতি ওরফে শম্ভুর স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন সুকান্ত মজুমদার-সহ বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি নবারুণ নায়ক এবং অন্য বিজেপি নেতৃত্বরা । এই সভায় প্রয়াত চন্দন মাইতির স্ত্রীর হাতে আর্থিক সাহায্যের একটি চেক তুলে দেন রাজ্য সভাপতি ৷ বিজেপির অভিযোগ চন্দন মাইতির মৃত্যুর পিছনেও শাসকদলের দুষ্কৃতীরাই রয়েছে ৷
এদিন রাজ্যে ভোট-পরবর্তী হিংসায় বিজেপি নেতার মৃত্যুতে তৃণমূল সরকার ও পুলিশকে দুষলেন বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার । চন্দন মাইতির মৃত্যুর জন্য শাসকদলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে তিনি বলেন, "একজন মানুষ অন্য রাজনৈতিক দল করে বলে খুন হয়ে গেল ৷" এপ্রসঙ্গে তিনি মগরাহাট পশ্চিমের বিজেপি প্রার্থী মানস সাহার মৃতদেহে মালা দেওয়ার প্রসঙ্গ মনে করিয়ে দেন ৷ 20 সেপ্টেম্বর সুকান্ত মজুমদার রাজ্য সভাপতি হন ৷ আর 23 সেপ্টেম্বর তাঁর নেতৃত্বে বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা মানস সাহার মৃতদেহ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) বাড়ির সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন ৷ নির্বাচনের ফল প্রকাশের দিন বিজেপি প্রার্থীকে মারধর করা হয় ৷ দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর 22 সেপ্টেম্বর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি মারা যান ৷
আরও পড়ুন : BJP Protest : মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির কাছে দলীয় নেতার মরদেহ রাস্তায় রেখে বিক্ষোভ বিজেপির
ভগবানপুর বিধানসভায় মহম্মদপুরে বিজেপির শক্তি কেন্দ্র প্রমুখ চন্দন মাইতির মৃত্যু নিয়েও আক্ষেপ করে তিনি বলেন, "তাঁর বাচ্চা ছেলের বোঝার মতো ক্ষমতা নেই যে তাঁর কাছ থেকে কী অমূল্য রতন হারিয়ে গিয়েছে ৷" মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তাঁর প্রশ্ন, "এই চোখের জলের দাম কে দেবে দিদিমণি ?" তৃণমূল কংগ্রেসকে এ ধরনের ঘটনার জন্য দায়ী করে তিনি বলেন, "তৃণমূল কংগ্রেস ভাবছে আমাদের কে কী করবে ? মনে রাখবেন চিরকাল কাহারো সমান নাহি যায় ৷"
শাসকদলের উদ্দেশ্যে সুকান্ত বলেন, "কখনও নৌকার উপরে গাড়ি ওঠে ৷ কখনও গাড়ির উপরে নৌকা ওঠে ৷" তিনি জানান ক্ষমতার দম্ভে যাঁরা মনে করছেন, মানুষকে প্রাণে মেরে ফেলবেন, তাহলে তাঁরা "মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন ৷ আপনার দিকেও সেই তির একদিন ধেয়ে আসতে বাধ্য হবে ৷" তিনি বলেন, "যেয়সি করনি, ওয়েসি ভরনি ৷" তাঁর হুঁশিয়ারি পাপ বাপকেও ছাড়ে না ৷
আরও পড়ুন : Post Poll Violence : ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে আরও একটি এফআইআর সিবিআইয়ের
এদিন ভরা সভায় সুকান্তের ভবিষ্যদ্বাণী, "এই চোখের জলের পাপ একদিন তৃণমূল কংগ্রেসকে ডুবিয়ে মারবে ৷ আমি ভবিষ্যদ্বাণী করে গেলাম, সেই দিন আসতে আর বেশিদিন বাকি নেই ৷" ভোট-পরবর্তী হিংসার ঘটনায় 37 জনে অভিযুক্তের নাম দেওয়া হয়েছে ৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে ৷ পুলিশকে আক্রমণ করে বিজেপি রাজ্য সভাপতি বলেন, "পুলিশ প্রশাসনকে আমি এখান থেকে পরিষ্কার কণ্ঠে বলতে চাই, আপনারা খুব শীঘ্রই পদক্ষেপ করে এদের গ্রেফতার করুন ৷" পুলিশের এই আচরণ প্রসঙ্গে তিনি জানান, পুলিশকে নেতারা ভয় দেখাচ্ছে ৷ তিনি বলেন, "এখানকার বিধায়ক হরলিক্স চেটে খাওয়া বিধায়ক ৷ পুলিশ ছেড়ে দিলেও সিবিআই তদন্ত করে দোষীদের জেলে পাঠানোর দায়িত্ব আমাদের ৷ আর আমরা সেই দায়িত্ব পালন করে ছাড়ব ৷"