ETV Bharat / state

দলীয় নেতার বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে তোলা আদায়ের অভিযোগ তৃণমূলের - চাকরি দেওয়ার নামে টাকা

প্রাইমারি শিক্ষকের চাকরি দেওয়ার নামে টাকা তোলার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে । অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়েছেন শিশির অধিকারী ।

প্রাইমারি শিক্ষকে
প্রাইমারি শিক্ষকে
author img

By

Published : Dec 21, 2019, 12:04 AM IST

Updated : Dec 21, 2019, 8:52 AM IST

তমলুক, 20 ডিসেম্বর : 2011-2012 সালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় টাকা দিয়েই মিলেছিল প্রাথমিকের বেশ কিছু চাকরি । আর সে কারণেই নতুন করে চাকরি দেওয়ার দলীয় কর্মীদের কাছ থেকে টাকা তুলেছিল দলেরই একাংশ । যা তারা তুলে দিয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের হাতে । পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর দেখা যায় নেতাকে টাকা দিয়েও তালিকায় নাম নেই চাকরিপ্রার্থীদের । যে কারণেই পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ বেরা নিজের ও স্ত্রীর নামে বেশ কয়েকটি চেক ফেরত দিয়েছিলেন দলীর নেতৃত্বদের । যারা সোমনাথ বেরার হয়ে চাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকা তুলেছিল । অভিযোগ, সেই চেকগুলি ব্যাঙ্কে জমা দিলে তা বাউন্স করে । পরে তমলুক ব্লকের একাধিক নেতা সোমনাথবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে টাকা ফেরতের জন্য দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর কাছে । কিন্তু তাতেও মেলেনি ফল । তাই ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের বেশ কয়েকটি অঞ্চলের পদাধিকারীরা এবার সোমনাথবাবুর বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন করে টাকা ফেরতের বার্তা দিলেন । অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়েছেন শিশির অধিকারী ।

দেখুন ভিডিয়ো

আজ তমলুকের মিলন নগরের একটি বেসরকারি আবাসনে তৃণমূলের নীলকুণ্ঠ অঞ্চলের 5 নম্বর বুথের সভাপতি শশধর সামন্ত, তমলুক ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি মাধব পাঁজা, অনন্তপুর 2 অঞ্চলের সভাপতি শ্রীকান্ত খাসকিল সহ মোট 20 জন তমলুক ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা সাংবাদিক বৈঠক করে । শশধর সামন্ত অভিযোগ করে বলেন, "2012 সালের প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে সোমনাথবাবুর মাধ্যমে বেশকিছু চাকরি হয়েছিল যা আমরা জানতে পেরেছিলাম । পরে সোমনাথবাবু আমাদের জানান ভবিষ্যতেও এভাবেই দলীয় কর্মীদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন তিনি । চাকরি পেতে লাগবে টাকা । তাই সোমনাথবাবুকে বিশ্বাস করে আমরা 2012 সালের পর থেকে মোট 70 থেকে 75 জন দলীয় কর্মীর কাছ থেকে প্রায় 2 কোটি টাকা তুলে দিয়েছিলাম । কিন্তু টাকা তুলে দিলেও দেখা যায় যাদের চাকরির জন্য টাকা দিয়েছিলাম তাঁরা প্রত্যেকেই পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে । সোমনাথবাবু জানিয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষক, জেলার পঞ্চায়েত দপ্তরের গ্রুপ ডি, গ্রুপ সি ও নির্মাণ সহায়কের সমস্ত চাকরিই তাঁর হাতে । বিশ্বাস করে টাকা দিয়ে আমরা প্রতারিত হওয়ায় টাকা ফেরত চেয়েছি । এর জন্য 2018 সালে ওঁর কাছে দ্বারস্থ হই । টাকা ফেরত দেওয়ার নাম করে সোমনাথবাবু তাঁর স্ত্রী উত্তর সোনামুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কাজল বেরা ও নিজের নামে বেশ কয়েকটি চেক লিখে দেন মার্চ মাস নাগাদ । কিন্তু ব্যাঙ্কে সেই চেকগুলি জমা দেওয়ার পর দেখা যায় সেগুলি বাউন্স করেছে । যে কারণে আমরা প্রতারিত হয়ে জেলার দলের সভাপতি তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর দ্বারস্থ হই । কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে টাকা ফেরতের সমস্ত চেষ্টা চালিয়ে গেলেও তা না পাওয়ায় আমরা বাধ্য হয়েই আজ সাংবাদিক সম্মেলন করছি । আমরা চাই সোমনাথবাবু অবিলম্বে আমাদের টাকা ফেরত দিক । তা না হলে আমরা সবশেষে ওঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব ।"

যদিও পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সোমনাথ বেরা । টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি । তাঁর অভিযোগ, দলের অভ্যন্তরীণ ঝামেলার কারণেই কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে এই ধরনের মিথ্যে অভিযোগ প্রতিনিয়ত করে চলেছে । ওঁদের সঙ্গে আমার ব্যবসায়িক সম্পর্কের কারণেই চেক দিয়েছিলাম তা বাউন্স করেছে । এর সঙ্গে চাকরির কোনও সম্পর্ক নেই । কারও কোনও অভিযোগ থাকলে সে আমার বিরুদ্ধে আইনি পথে লড়াই করতে পারে । এভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে আমার রাজনৈতিক জীবন কালিমালিপ্ত করা উচিত নয় ।

ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তৃণমূলকে আক্রমণ করতে ছাড়েনি BJP । পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নবারুণ নায়েক বলেন, "সোমনাথবাবুর বিরুদ্ধে কয়েকশো কোটি টাকা তোলার অভিযোগ অনেক আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল । তা সত্ত্বেও সোমনাথবাবুকে তমলুকে 2019 লোকসভা নির্বাচনের ভোটিং এজেন্ট হিসেবে রাখা হয়েছিল । আসলে সোমনাথবাবু কাটমানি হিসেবে যে টাকা বাজার থেকে তুলেছিল তা সঠিক সময়ে জেলার ক্ষমতাশীল পরিবারকে পৌঁছে দেননি । তাই ওঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলেরই অপর এক গোষ্ঠীকে এগিয়ে দিয়ে চাপে রেখে টাকা আদায়ের নতুন পরিকল্পনা করেছে শাসকদলের একাংশ । আমরা চাই সত্যিটা সামনে আসুক ।

এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দলে কাউকে পদ দেওয়া মানেই চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার লাইসেন্স দেওয়া নয় । ওনার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই অভিযোগ এসেছে । দলের তরফে তদন্ত কমিটি গঠন করে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে । অভিযোগ প্রমাণিত হলে দলীয়ভাবে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।

তমলুক, 20 ডিসেম্বর : 2011-2012 সালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় টাকা দিয়েই মিলেছিল প্রাথমিকের বেশ কিছু চাকরি । আর সে কারণেই নতুন করে চাকরি দেওয়ার দলীয় কর্মীদের কাছ থেকে টাকা তুলেছিল দলেরই একাংশ । যা তারা তুলে দিয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের হাতে । পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর দেখা যায় নেতাকে টাকা দিয়েও তালিকায় নাম নেই চাকরিপ্রার্থীদের । যে কারণেই পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ বেরা নিজের ও স্ত্রীর নামে বেশ কয়েকটি চেক ফেরত দিয়েছিলেন দলীর নেতৃত্বদের । যারা সোমনাথ বেরার হয়ে চাকরিপ্রার্থীদের থেকে টাকা তুলেছিল । অভিযোগ, সেই চেকগুলি ব্যাঙ্কে জমা দিলে তা বাউন্স করে । পরে তমলুক ব্লকের একাধিক নেতা সোমনাথবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে টাকা ফেরতের জন্য দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর কাছে । কিন্তু তাতেও মেলেনি ফল । তাই ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের বেশ কয়েকটি অঞ্চলের পদাধিকারীরা এবার সোমনাথবাবুর বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন করে টাকা ফেরতের বার্তা দিলেন । অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়েছেন শিশির অধিকারী ।

দেখুন ভিডিয়ো

আজ তমলুকের মিলন নগরের একটি বেসরকারি আবাসনে তৃণমূলের নীলকুণ্ঠ অঞ্চলের 5 নম্বর বুথের সভাপতি শশধর সামন্ত, তমলুক ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি মাধব পাঁজা, অনন্তপুর 2 অঞ্চলের সভাপতি শ্রীকান্ত খাসকিল সহ মোট 20 জন তমলুক ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা সাংবাদিক বৈঠক করে । শশধর সামন্ত অভিযোগ করে বলেন, "2012 সালের প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে সোমনাথবাবুর মাধ্যমে বেশকিছু চাকরি হয়েছিল যা আমরা জানতে পেরেছিলাম । পরে সোমনাথবাবু আমাদের জানান ভবিষ্যতেও এভাবেই দলীয় কর্মীদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন তিনি । চাকরি পেতে লাগবে টাকা । তাই সোমনাথবাবুকে বিশ্বাস করে আমরা 2012 সালের পর থেকে মোট 70 থেকে 75 জন দলীয় কর্মীর কাছ থেকে প্রায় 2 কোটি টাকা তুলে দিয়েছিলাম । কিন্তু টাকা তুলে দিলেও দেখা যায় যাদের চাকরির জন্য টাকা দিয়েছিলাম তাঁরা প্রত্যেকেই পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছে । সোমনাথবাবু জানিয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষক, জেলার পঞ্চায়েত দপ্তরের গ্রুপ ডি, গ্রুপ সি ও নির্মাণ সহায়কের সমস্ত চাকরিই তাঁর হাতে । বিশ্বাস করে টাকা দিয়ে আমরা প্রতারিত হওয়ায় টাকা ফেরত চেয়েছি । এর জন্য 2018 সালে ওঁর কাছে দ্বারস্থ হই । টাকা ফেরত দেওয়ার নাম করে সোমনাথবাবু তাঁর স্ত্রী উত্তর সোনামুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কাজল বেরা ও নিজের নামে বেশ কয়েকটি চেক লিখে দেন মার্চ মাস নাগাদ । কিন্তু ব্যাঙ্কে সেই চেকগুলি জমা দেওয়ার পর দেখা যায় সেগুলি বাউন্স করেছে । যে কারণে আমরা প্রতারিত হয়ে জেলার দলের সভাপতি তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর দ্বারস্থ হই । কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে টাকা ফেরতের সমস্ত চেষ্টা চালিয়ে গেলেও তা না পাওয়ায় আমরা বাধ্য হয়েই আজ সাংবাদিক সম্মেলন করছি । আমরা চাই সোমনাথবাবু অবিলম্বে আমাদের টাকা ফেরত দিক । তা না হলে আমরা সবশেষে ওঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব ।"

যদিও পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেছেন সোমনাথ বেরা । টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি । তাঁর অভিযোগ, দলের অভ্যন্তরীণ ঝামেলার কারণেই কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে এই ধরনের মিথ্যে অভিযোগ প্রতিনিয়ত করে চলেছে । ওঁদের সঙ্গে আমার ব্যবসায়িক সম্পর্কের কারণেই চেক দিয়েছিলাম তা বাউন্স করেছে । এর সঙ্গে চাকরির কোনও সম্পর্ক নেই । কারও কোনও অভিযোগ থাকলে সে আমার বিরুদ্ধে আইনি পথে লড়াই করতে পারে । এভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে আমার রাজনৈতিক জীবন কালিমালিপ্ত করা উচিত নয় ।

ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তৃণমূলকে আক্রমণ করতে ছাড়েনি BJP । পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নবারুণ নায়েক বলেন, "সোমনাথবাবুর বিরুদ্ধে কয়েকশো কোটি টাকা তোলার অভিযোগ অনেক আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল । তা সত্ত্বেও সোমনাথবাবুকে তমলুকে 2019 লোকসভা নির্বাচনের ভোটিং এজেন্ট হিসেবে রাখা হয়েছিল । আসলে সোমনাথবাবু কাটমানি হিসেবে যে টাকা বাজার থেকে তুলেছিল তা সঠিক সময়ে জেলার ক্ষমতাশীল পরিবারকে পৌঁছে দেননি । তাই ওঁর বিরুদ্ধে তৃণমূলেরই অপর এক গোষ্ঠীকে এগিয়ে দিয়ে চাপে রেখে টাকা আদায়ের নতুন পরিকল্পনা করেছে শাসকদলের একাংশ । আমরা চাই সত্যিটা সামনে আসুক ।

এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দলে কাউকে পদ দেওয়া মানেই চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার লাইসেন্স দেওয়া নয় । ওনার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই অভিযোগ এসেছে । দলের তরফে তদন্ত কমিটি গঠন করে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে । অভিযোগ প্রমাণিত হলে দলীয়ভাবে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।

Intro:তমলুক,২০ ডিসেম্বর: টাকা দিয়েই মিলেছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় 2011-12 সালের প্রাথমিকের বেশ কিছু শিক্ষকতার চাকরি। আর সে কারণেই নতুন করে চাকরির আশায় দলীয় কর্মীদের কাছ থেকে টাকা তুলে দলেরই একাংশ পদাধিকারীরা দিয়েছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ হাতে। অভিযোগ পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর দেখা যায় নেতাকে টাকা দিয়েও চাকরিপ্রার্থীদের তালিকায় নাম নেই। আর যে কারণেই টাকা ফেরত চাওয়ায় সোমনাথ বাবু নিজের ও নিজের স্ত্রীর নামে বেশ কয়েকটি চেক ফেরত দেন দলীয় নেতৃত্ব দের। অভিযোগ সেই চেক গুলি ব্যাংকে জমা দিলে তা বাউন্স করে। পরে তমলুক ব্লকের একাধিক নেতা সোমনাথ বাবুর বিরুদ্ধে টাকা ফেরতের জন্য দ্বারস্থ হয়েছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি শিশির অধিকারীর কাছেও। কিন্তু তাতেও মেলেনি কোন ফল। তাই ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের বেশ কয়েকটি অঞ্চলের পদাধিকারীরা এবার সোমনাথ বাবুর বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন করে টাকা ফেরতের বার্তা দিলেন।Body:এদিন তমলুকের মিলন নগরের একটি বেসরকারী আবাসনে দলের নীলকুন্ঠ অঞ্চলের ৫নং বুথের সভাপতি শশধর সামন্ত, তমলুক ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি মাধব পাঁজা, অনন্তপুর দুই অঞ্চলের সভাপতি শ্রীকান্ত খাসকিল সহ মোঠ কুড়িজন তমলুক ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের পদাধিকারীরা দুপুর নাগাদ চাকরি দেওয়ার নাম করে সোমনাথ বাবুর বিরুদ্ধে প্রতারণা করার অভিযোগ তুলে সাংবাদিক সম্মেলন করেন । সাংবাদিক সম্মেলনে শশধর সামন্ত অভিযোগ করে বলেন, 2012 সালের প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে সোমনাথ বাবুর মাধ্যমে বেশকিছু চাকরি হয়েছিল যা আমরা জানতে পেরেছিলাম। পরে সোমনাথ বাবু আমাদের জানান ভবিষ্যতেও এভাবেই দলীয় কর্মীদের চাকরি পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন তিনি। চাকরি পেতে লাগবে টাকা। তাই সোমনাথ বাবু কে বিশ্বাস করে আমরা 2012 সালের পর থেকে মোট 70 থেকে75 জন দলীয় কর্মীর কাছ থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা তুলে দিয়েছিলাম দলের নেতা তথা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ বেরার হাতে। কিন্তু টাকা তুলে দিলেও দেখা যায় যাদের চাকরির জন্য টাকা দিয়েছিলাম তারা প্রত্যেকেই পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন। সোমনাথ বাবু জানিয়েছিলেন প্রাথমিকের শিক্ষক , জেলার পঞ্চায়েত দপ্তরের গ্রুপ ডি ,গ্রুপ সি ও নির্মাণ সহায়কের সমস্ত চাকরিই তাঁর হাতে।বিশ্বাস করে টাকা দিয়ে আমরা প্রতারিত হওয়ায় টাকা ফেরত চেয়ে ২০১৮ সালে ওনার কাছে দ্বারস্থ হই। টাকা ফেরত দেওয়ার নাম করে সোমনাথ বাবু তাঁর স্ত্রী উত্তর সোনামুই গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কাজল বেরা ও নিজের নামে বেশ কয়েকটি চেক লিখে দেন মার্চ মাস নাগাদ। কিন্তু ব্যাঙ্কে সেই চেক গুলি জমা দেওয়ার পর দেখা যায় সেগুলি বাউন্স করেছে। যে কারণে আমরা প্রতারিত হয়ে জেলার দলের সভাপতি তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারীর দ্বারস্থ হই।কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে টাকা ফেরতের সমস্ত চেষ্টা চালিয়ে গেলেও তা না পাওয়ায় আমরা বাধ্য হয়েই আজ সাংবাদিক সম্মেলন করছি। আমরা চাই সোমনাথ বাবু অবিলম্বে আমার ষোল লক্ষ টাকা বাকি নেতৃত্বদের সমস্ত টাকা ফেরত দিক। তা না হলে আমরা সবশেষে ওনার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হব।

Conclusion:যদিও জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সোমনাথ বাবু টাকার বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর অভিযোগ দলের অভ্যন্তরীণ কলহের কারণেই কিছু লোক আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা অভিযোগ প্রতিনিয়ত করে চলেছেন। ওনাদের সাথে আমার ব্যবসায়িক সম্পর্কের কারণেই চেক দিয়েছিলাম তা বাউন্স করেছে এর সাথে চাকরির কোন সম্পর্ক নেই। কারো কোন অভিযোগ থাকলে তিনি আমার বিরুদ্ধে আইনিপথে লড়াই করতে পারেন। এভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে আমার রাজনৈতিক জীবন কালিমালিপ্ত করা উচিত নয়।

ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই তৃণমূলকে বিঁধতে ছাড়েননি পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নবারুণ নায়েক। তৃণমূলকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, সোমনাথ বাবুর বিরুদ্ধে কয়েকশো কোটি টাকা তোলার অভিযোগ অনেক আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল। তা সত্ত্বেও সোমনাথ বাবু কে তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের ইলেকশন এজেন্ট রাখা হয়েছিল। আসলে সোমনাথ বাবু কাঠমানি হিসাবে যে নৈবিদ‍্য বাজার থেকে তুলেছিলেন তা সঠিক সময়ে জেলার ক্ষমতাশীল পরিবারকে পৌছে দেননি। তাই উনার বিরুদ্ধে তৃণমূলেরই অপর গোষ্ঠীকে এগিয়ে দিয়ে চাপে রেখে টাকা আদায়ের নতুন পরিকল্পনা করেছে শাসকদলের জেলার পরিবার। আমরা চাই যারা আজ সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন তারা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাক। তদন্তে প্রকৃত সত্য উঠে আসুক।

এ বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সভাপতি শিশির অধিকারীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দলে কাউকে পদ দেওয়া মানেই তিনি চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার লাইসেন্স দেওয়া নয়। ওনার বিরুদ্ধে আমরা ইতিমধ্যেই অভিযোগ পেয়েছি। দলের তরফে তদন্ত কমিটি গঠন করে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দলীয়ভাবে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Last Updated : Dec 21, 2019, 8:52 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.