কোলাঘাট,21 মার্চ : গলায় ফাঁস লাগানো ছবি এবং নিজের মানসিক যন্ত্রণার কথা রেকর্ড করে সোশাল মিডিয়ায় আপলোড করে আত্মঘাতী হলেন এক যুবক। ঘটনাটি কোলাঘাট থানার নুগুড়িয়া গ্রামের। মৃত যুবকের নাম শেখ ফারুক (29)।
অভিযোগ, বিবি, শাশুড়ি এবং দুই শ্যালকের মারধরের জন্য লজ্জায়-অপমানে আত্মঘাতী হয়েছেন ফারুক। সোশাল মিডিয়ায় তাঁর সেই ভিডিয়ো দেখার পর ঘটনা ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়।
17 মার্চ রাতে শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন পেশায় কাঠমিস্ত্রি ফারুক। 18 মার্চ বাড়ি ফিরে আসার পর থেকেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। এরপরই তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। দীর্ঘক্ষণ বাড়ি না ফেরায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এরই মধ্যে ফারুকের গলায় ফাঁস লাগানোর ছবি ও ভয়েস রেকর্ড তাঁর মামাতো ভাইয়ের কাছে পৌঁছে যায়। 18 মার্চ বিকেলে রূপনারায়ণ নদীর পাড়ে একটি গাছ থেকে তাঁর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়। গতকাল সোশাল মিডিয়ায় যুবকের ফাঁস নেওয়ার ছবি ও ভয়েস রেকর্ড প্রকাশ্যে আসে। এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
ফাঁস নেওয়ার ঠিক আগের মুহূর্তেই গলায় গামছা ফাঁস লাগানো অবস্থায় তিনি একটি সেলফি তুলেছেন। আর ভয়েস রেকর্ডে তিনি মামাতো ভাইকে বলেছেন, "ভাই তুই কাউকে ছাড়বি না। আমার বিবি,শাশুড়ি, মেজো শ্যালক ও সেজো শ্যালক এরা কেউ ভালো নয়। কালকে আমি শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলাম। ওরা আমাকে খুব মেরেছে। তাই আমি আর কাউকে কিছু বলিনি।" এরপর কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলেন, "নিজের জীবন দিয়ে দিচ্ছি ভাই। কিন্তু এদের কাউকে তুই ছেড়ে কথা বলবি না।"
ফারুকের ভাই রফিক আলি অভিযুক্ত 4 জনের বিরুদ্ধে কোলাঘাট থানায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি বলেন, "দাদারমৃত্যুর জন্য বউদি ও তার বাবারবাড়ির লোকেরা দায়ি। দাদাকে প্রায়ই ওরা শারীরিক ও মানসিকভাবে নিগ্রহ করত। আমরা অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি চাই।"
বিষয়টি নিয়ে তমলুকের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সুরজিৎ সেনগুপ্ত বলেন,"ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক। এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে ।" পুলিশ জানিয়েছে,ভয়েস রেকর্ডে নিজের আত্মহত্যার জন্য বিবিআসমা খাতুন,শাশুড়ি হাজরা বিবি ও দুই শ্যালক আকসাদ আলি ও আব্দুল আলিকে দায়ি করে গেছেন ফারুক।