কোলাঘাট, ২৪ মার্চ: রাস্তার মোড়ে মোড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে ভূত ৷ রাস্তায় বেরোনো লোকজনদের দেখলেই বলছে, ‘‘ বাড়ি যা, নয়ত সবাই মরবি ।’’ আবার কখনও বলছে, ‘‘আমি সেই... কথা না শুনলে মরবি ।’’
কোনও গল্পের বই নয়, এমন চিত্র দেখা যাচ্ছে কোলাঘাটের বিভিন্ন রাস্তায় ৷ দিনদুপুরে রাস্তায় ভূতের দেখা মিলছে কোলাঘাটের এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সৌজন্যে ৷ কোরোনা সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে লকডাউনের নির্দেশ দেওয়া হলেও তা মানছে না বহু মানুষই ৷ অযথা রাস্তায় ঘোরাফেরা রুখতে এবার অভিনব পদ্ধতিতে প্রচার শুরু করল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ৷ সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এই উদ্যোগ সাধারণ মানুষের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে ।
কোরোনা সংক্রমণ রুখতে মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী উভয়ই লকডাউনের নির্দেশ দিয়েছেন ৷ প্রশাসনের সেই বার্তা কানে পৌঁছালেও একাংশ সাধারণ মানুষ খুব একটা গুরুত্ব দেননি তাতে । সারাদিনই কোলাঘাটের রাস্তাঘাটে দেখা মিলেছে অগুনতি মানুষের । বাজারহাট থেকে শুরু করে সমস্ত দোকানই ছিল খোলা । দোকানগুলিতে ব্যাপক ভিড় না হলেও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে সেই ভিড় ঠেকানোর চেষ্টা করে প্রশাসন । বেপরোয়া মনোভাবের জনতাকে বাগে আনতে লাঠিচার্জও করতে হয় পুলিশকে ।
এরপরই সাধারণ মানুষকে ঠান্ডা মাথায় বোঝাতে পথে নামে কোলাঘাটের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা । সংস্থার তিন সদস্য মুখোশ ও কালো কাপড় পরে ভূত সেজে দুপুরে শহরের মোড়ে মোড়ে ঘুরে পথচলতি মানুষকে বাড়ি থেকে বের না হওয়ার বার্তা দিতে শুরু থাকে । সঙ্গী অন্যান্য কয়েকজন সদস্য হ্যান্ড মাইক নিয়ে এলাকাবাসীকে বাড়ির মধ্যেই থাকার অনুরোধ জানান । স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এই উদ্যোগে খুশি হয়েছে প্রশাসনও ।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক অসীম দাস বলেন, ‘‘ কোরোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা নিয়ে আমরা তিন-চারদিন ধরে সাধারণ মানুষকে সচেতন করার চেষ্টা চালাচ্ছি । আজ মানুষকে সচেতন করার উদ্দেশ্যেই ভূত কঙ্কাল এসবের মডেল সাজিয়ে মানুষকে কোরোনার সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছে । তারা বার্তা দিচ্ছে, হয় বাড়ি যা, নয়ত সবাই মরবি । কেউবা জানাচ্ছে আমি সেই... কথা না শুনলে মরবি । মানুষকে বোঝাতে আমরা বিভিন্ন রাস্তাঘাটে ও বাড়িতে দু-চারজনের দল করে যাচ্ছি । বর্তমান কঠিন সময়ে মানুষকে সচেতন করাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য ।’’
কোলাঘাটের BDO মদন মণ্ডল জানিয়েছেন, ‘‘কিছু মানুষ প্রশাসনের লকডাউনকে না মেনে রাস্তায় বেরিয়ে নিজেদেরই ক্ষতি করছে । ওরা বুঝতেই পারছে না কতটা কঠিন সমস্যার মধ্যে দিয়ে আমরা যাচ্ছি । প্রতিটি মানুষকে খুব সচেতন হতে হবে এই ব্যাপারে । স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে সাধারণ মানুষকে যেভাবে সচেতন করা হচ্ছে, তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য ।’’