পূর্ব মেদিনীপুর, 17 সেপ্টেম্বর : এগরা হাসপাতালে 80 জন শিশু আর কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে 90 জন শিশু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছে । হাসপাতাল ছাড়াও কাঁথি ও এগরা মহকুমার বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালেও অসুস্থ বাচ্চারা ভর্তি রয়েছে । জ্বরে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে । উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ সব জায়গায় একই ছবি ৷ এবার পূর্ব মেদিনীপুরেও সেই ছবির দেখা মিলল ৷
এগরা হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক প্রত্যয় রায় জানান, প্রতি বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে ঋতু পরিবর্তনের সময় শিশুরা এই ধরনের ভাইরাল জ্বরে বেশি আক্রান্ত হয় । এতে বাচ্চাদের নাক দিয়ে জলের মতো সর্দি ঝরতে শুরু করে, প্রচণ্ড জ্বর, দু‘-একদিনের মধ্যে শ্বাসকষ্ট শুরু হয় ৷ শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায় । তবে তাঁর আশ্বাসবাণী, শুরুতে চিকিৎসা হলে বাচ্চা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবে । আর 4-5 দিন হাসপাতালে থেকে তারা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে বলেও জানালেন শিশু চিকিৎসক ৷
এগরা মহকুমা হাসপাতালের এসএনসিইউতে (SNCU) 3-5 বছরের শিশুরা, 8-10 বছরের বাচ্চারা জ্বর, সর্দি, কাশি, নিয়ে ভর্তি হয়েছে ৷ এই সংখ্যা প্রায় 80 ৷ চিকিৎসক প্রত্যয় রায়ের কথায়, "ভর্তি হওয়া প্রায় শিশুরা বিভিন্ন উপসর্গের শিকার। জ্বর, সর্দি, কাশি ৷ এগুলি ইনফুয়েঞ্জা । তবে কোনও ভয়ের কারণ নেই।" তিনি জানালেন, জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে একটি মেডিক্যাল টিম তৈরি করে দিয়েছে । সেই দলের নির্দেশমতো অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসা চলছে ।
আরও পড়ুন : Child Death : মালদা মেডিক্যালে আরও দুই শিশুর মৃত্যু, 72 ঘণ্টায় মৃত পাঁচ
কাঁথির বিশিষ্ট শিশু চিকিৎসক উৎপলকান্তি জানা বলেন, "বেশ কিছু শিশুদের মধ্যে ল্যাব টেস্ট করে আমরা স্ক্রাব টাইফাস জ্বরের উপসর্গ পাচ্ছি । আবার বহু শিশু জ্বর, সর্দি, কাশি, নিয়ে আসছে । আবহাওয়া পরিবর্তনের ফলে নিউমোনিয়া উপসর্গ দেখা দিচ্ছে বহু খুদেদের মধ্যে । এই পরিস্থিতিতে অবশ্যই চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়া উচিত ।" আর পাশাপাশি তিনি সতর্ক করেন, বাচ্চারা যেন এই সময় বাড়ির ভিতরেই থাকে ৷ বাইরে অন্য কোনও সংক্রামিত বাচ্চার সংস্পর্শে এই জ্বর ও উপসর্গগুলি দ্রুত অন্য বাচ্চার মধ্যে ছড়িয়ে যেতে পারে ৷
কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান নন্দদুলাল মাইতি বলেন, "করোনার তৃতীয় ঢেউ আসার আগে এই জ্বর বা ঋতু পরিবর্তন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জ্বর, সর্দি, কাশি, এই সব উপসর্গ নিয়ে শিশুরা ভর্তি হয়েছে । রাজ্যজুড়ে একটা অস্থিরতা তৈরি হয়েছে । আমাদের চিকিৎসকরা প্রস্তুত রয়েছে ৷ পুরো বিষয়টির উপর নজরদারি চলছে ।" তিনিও আশ্বস্ত করেন এ নিয়ে ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই, ধৈর্য ধরে এর মোকাবিলা করতে হবে ৷ হাসপাতালে একই বেডে 3-4 জন শিশুর চিকিৎসা চলছে, সে বিষয়টি মেনে নিয়ে তিনি জানান, একটি সংক্রামিত বাচ্চার থেকে আরেকটি সংক্রামিত বাচ্চার দূরত্ব কী ভাবে বাড়ানো যায়, তার চেষ্টা চলছে ৷