ETV Bharat / state

এইচআইভি পজিটিভেও বাধা নেই দুগ্ধপানে, এইডস দিবসে সচেতনতার বার্তা দিচ্ছেন চিকিৎসকরা - World Aids Day 2023

শিশুর মা এইডসে আক্রান্ত হলেও তাঁর শিশু যদি সুস্থ থাকে তাহলে দুধ পান করানোর ক্ষেত্রে আতঙ্কের কিছু নেই বিশ্ব এইডস দিবসে এই বার্তা দিচ্ছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকরা ।

World Aids Day
শিশুকে দুগ্ধপান করানোতে বাধা নেই এইচ আই ভি পজিটিভেও
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 1, 2023, 5:25 PM IST

বর্ধমান, 1 ডিসেম্বর: মানুষের মধ্যে একটা ভ্রান্ত ধারণা হয়েছে যে এইচআইভি পজিটিভ মায়েরা তাঁদের সন্তানকে দুধ পান করাতে গিয়ে আতঙ্কে ভোগেন । তাদের ধারণা শিশুকে দুধ খাওয়ালে দুধের মাধ্যমে ভাইরাস শিশুর শরীরে প্রবেশ করতে পারে । কিন্তু শিশুর মা এইডসে আক্রান্ত হলেও তার শিশু যদি সুস্থ থাকে তাহলে দুধ পান করানোর ক্ষেত্রে আতঙ্কের কিছু নেই, বিশ্ব এইডস দিবসে এই বার্তা দিচ্ছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকগণ ।

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ থেকে স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন কোনও মহিলা গর্ভবতী থাকেন সেই সময় বিভিন্ন সময় তাঁর রক্ত পরীক্ষা করা হয় । ফলে যদি এইচআইভি পজিটিভ রিপোর্ট আসে তখন থেকেই তাঁর চিকিৎসা শুরু করে দেন চিকিৎসকেরা । সেক্ষেত্রে একটা ভয় থেকেই যায় । কারণ মহিলার এইডস হওয়ার পরে যদি তাঁর সন্তানের জন্ম হয় তাহলে ওই ভূমিষ্ঠ শিশুর এইডসে আক্রান্ত হওয়ার একটা সম্ভাবনা থেকেই যায় । কারণ ওই মায়ের জঠর থেকে তার শিশুর শরীরে এইডসের জীবাণু প্রবেশ করে অর্থাৎ যখন ভ্রূণের গঠন থেকে শরীরের গঠন হয় তখন মায়ের রক্ত থেকে শিশুর দেহে জীবাণু ঢুকে যাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে ।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাতৃদুগ্ধের কোনও বিকল্প নেই । শিশুর জন্মের পরে পুষ্টির জন্য এবং বিভিন্ন রোগ থেকে শিশুকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি হয় । সেই পুষ্টির একমাত্র উৎস হচ্ছে মাতৃদুগ্ধ । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সম্প্রতি একটা প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে যদি কোনও মা এইচআইভি পজিটিভ হন তিনি তার শিশুকে এক বছর পর্যন্ত দুধ খাওয়াতে পারবেন । এর আগে তারা জানিয়েছিল আক্রান্ত মহিলা তিন মাস পর্যন্ত দুধ খাওয়াতে পারবেন । কিন্তু পরে গবেষণা করে তারা জানায় নেয় এক বছর পর্যন্ত দুধ খাওয়ানো যেতেই পারে ।

স্বাস্থ্য দফতর আরও জানিয়েছে, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকেও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয় । যখন কোন গর্ভবতী মহিলা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন তখন তার এইচ আই ভি পরীক্ষার জন্য প্রিভেনশন অফ প্যারেন্ট টু চাইল্ড ট্রান্সমিশন অফ এইচআইভি প্রকল্পের আওতায় আনা হয় । প্রথম পরীক্ষায় যদি রিপোর্ট পজিটিভ আসে সেক্ষেত্রে সেটাকে নিশ্চিত করার জন্য দ্বিতীয় ও তৃতীয় বার ফের পরীক্ষা করা হয় । এরপরেও যদি রিপোর্ট পজিটিভ আসে সেক্ষেত্রে ওই মহিলাকে হাসপাতালের এ আর টি সেন্টারে নিয়ে গিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করা হয় । এবং সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরেই সদ্যোজাতকে নেভিরাপিন ওষুধ দেওয়া হয় । সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই সরকারি হাসপাতাল এই চিকিৎসা পরিসেবা দিয়ে থাকে ।

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল তথা বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার ডাঃ তাপস ঘোষ বলেন, 'বিজ্ঞান এখনও প্রমাণ করতে পারেনি যে এইডস আক্রান্ত মহিলা তার বাচ্ছাকে দুধ খাওয়াতে পারবে না । ফলে নিশ্চিন্তে মহিলা তার শিশুকে দুধ দিতে পারবে । এবার যদি মহিলার এইডসে আক্রান্ত হয় তার উপরে নজর রাখা হয় । পরে তার সন্তানের জন্ম হয় তাহলে সেই শিশুর এইডসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় ৷ কারণ মায়ের জঠর থেকে শিশুর শরীরে এইডসের জীবাণু প্রবেশ করে । তবে যদি বাচ্চাটি আক্রান্ত না হয় সে কিন্তু দুধ পান করতে পারবে । সেক্ষেত্রে তার মায়ের যেমন চিকিৎসা প্রয়োজন সেই মতো চিকিৎসা হয় । কিন্তু মাতৃদুগ্ধের মধ্যে সেই জীবাণু প্রবেশ করেছে সেটা এখনও প্রমাণ হয়নি । ফলে দুধ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই ।'

আরও পড়ুন:

(পরামর্শগুলি শুধুমাত্র সাধারণ তথ্যের ভিত্তিতে ৷ আপনার কোনও প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন)

বর্ধমান, 1 ডিসেম্বর: মানুষের মধ্যে একটা ভ্রান্ত ধারণা হয়েছে যে এইচআইভি পজিটিভ মায়েরা তাঁদের সন্তানকে দুধ পান করাতে গিয়ে আতঙ্কে ভোগেন । তাদের ধারণা শিশুকে দুধ খাওয়ালে দুধের মাধ্যমে ভাইরাস শিশুর শরীরে প্রবেশ করতে পারে । কিন্তু শিশুর মা এইডসে আক্রান্ত হলেও তার শিশু যদি সুস্থ থাকে তাহলে দুধ পান করানোর ক্ষেত্রে আতঙ্কের কিছু নেই, বিশ্ব এইডস দিবসে এই বার্তা দিচ্ছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকগণ ।

শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ থেকে স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, যখন কোনও মহিলা গর্ভবতী থাকেন সেই সময় বিভিন্ন সময় তাঁর রক্ত পরীক্ষা করা হয় । ফলে যদি এইচআইভি পজিটিভ রিপোর্ট আসে তখন থেকেই তাঁর চিকিৎসা শুরু করে দেন চিকিৎসকেরা । সেক্ষেত্রে একটা ভয় থেকেই যায় । কারণ মহিলার এইডস হওয়ার পরে যদি তাঁর সন্তানের জন্ম হয় তাহলে ওই ভূমিষ্ঠ শিশুর এইডসে আক্রান্ত হওয়ার একটা সম্ভাবনা থেকেই যায় । কারণ ওই মায়ের জঠর থেকে তার শিশুর শরীরে এইডসের জীবাণু প্রবেশ করে অর্থাৎ যখন ভ্রূণের গঠন থেকে শরীরের গঠন হয় তখন মায়ের রক্ত থেকে শিশুর দেহে জীবাণু ঢুকে যাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে ।

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাতৃদুগ্ধের কোনও বিকল্প নেই । শিশুর জন্মের পরে পুষ্টির জন্য এবং বিভিন্ন রোগ থেকে শিশুকে রক্ষা পাওয়ার জন্য অ্যান্টিবডি তৈরি হয় । সেই পুষ্টির একমাত্র উৎস হচ্ছে মাতৃদুগ্ধ । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সম্প্রতি একটা প্রতিবেদনে প্রকাশ করেছে যদি কোনও মা এইচআইভি পজিটিভ হন তিনি তার শিশুকে এক বছর পর্যন্ত দুধ খাওয়াতে পারবেন । এর আগে তারা জানিয়েছিল আক্রান্ত মহিলা তিন মাস পর্যন্ত দুধ খাওয়াতে পারবেন । কিন্তু পরে গবেষণা করে তারা জানায় নেয় এক বছর পর্যন্ত দুধ খাওয়ানো যেতেই পারে ।

স্বাস্থ্য দফতর আরও জানিয়েছে, রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকেও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয় । যখন কোন গর্ভবতী মহিলা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন তখন তার এইচ আই ভি পরীক্ষার জন্য প্রিভেনশন অফ প্যারেন্ট টু চাইল্ড ট্রান্সমিশন অফ এইচআইভি প্রকল্পের আওতায় আনা হয় । প্রথম পরীক্ষায় যদি রিপোর্ট পজিটিভ আসে সেক্ষেত্রে সেটাকে নিশ্চিত করার জন্য দ্বিতীয় ও তৃতীয় বার ফের পরীক্ষা করা হয় । এরপরেও যদি রিপোর্ট পজিটিভ আসে সেক্ষেত্রে ওই মহিলাকে হাসপাতালের এ আর টি সেন্টারে নিয়ে গিয়ে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করা হয় । এবং সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরেই সদ্যোজাতকে নেভিরাপিন ওষুধ দেওয়া হয় । সম্পূর্ণ বিনামূল্যেই সরকারি হাসপাতাল এই চিকিৎসা পরিসেবা দিয়ে থাকে ।

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল তথা বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপার ডাঃ তাপস ঘোষ বলেন, 'বিজ্ঞান এখনও প্রমাণ করতে পারেনি যে এইডস আক্রান্ত মহিলা তার বাচ্ছাকে দুধ খাওয়াতে পারবে না । ফলে নিশ্চিন্তে মহিলা তার শিশুকে দুধ দিতে পারবে । এবার যদি মহিলার এইডসে আক্রান্ত হয় তার উপরে নজর রাখা হয় । পরে তার সন্তানের জন্ম হয় তাহলে সেই শিশুর এইডসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় ৷ কারণ মায়ের জঠর থেকে শিশুর শরীরে এইডসের জীবাণু প্রবেশ করে । তবে যদি বাচ্চাটি আক্রান্ত না হয় সে কিন্তু দুধ পান করতে পারবে । সেক্ষেত্রে তার মায়ের যেমন চিকিৎসা প্রয়োজন সেই মতো চিকিৎসা হয় । কিন্তু মাতৃদুগ্ধের মধ্যে সেই জীবাণু প্রবেশ করেছে সেটা এখনও প্রমাণ হয়নি । ফলে দুধ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই ।'

আরও পড়ুন:

(পরামর্শগুলি শুধুমাত্র সাধারণ তথ্যের ভিত্তিতে ৷ আপনার কোনও প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করুন)

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.