গলসি(পূর্ব বর্ধমান), 11 জুলাই: ভোটগণনার সকাল থেকে দফায় দফায় অশান্তি পূর্ব বর্ধমান জেলার গলসি এক নম্বর ব্লকের বুদবুদের মহাকালী হাইস্কুল চত্বরে। ভোট গণনাকেন্দ্রে প্রবেশ করতে গেলে বিরোধীদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ। কাঠগড়ায় তৃণমূল ৷ আহত হয়েছেন সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপির প্রার্থী থেকে শুরু করে কাউন্টিং এজেন্টরা।
65 নম্বর জেলা পরিষদের সিপিএমের মহিলা প্রার্থী জয়শ্রী বিষ্ণুর অভিযোগ, তিনি যখন ভোট গণনাকেন্দ্রে ঢোকার আগে স্ট্রংরুমে আসেন তখন তাঁর উপর আক্রমণ করা হয় । তাঁর মোবাইল ও ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে নেওয়া হয় । তাঁকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন ওই সিপিএম প্রার্থী । তাঁর সঙ্গে থাকা আরও বেশ কয়েকজন সিপিএম প্রার্থীকে মেরে হাত পা ভেঙ্গে দেওয়ার অভিযোগ তোলেন তিনি । কংগ্রেসের স্থানীয় বুদবুদ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থী অসিত মুখোপাধ্যায়ের মেরে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ । তাঁকে মানকর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ তাঁর মাথায় আটটি সেলাই পড়েছে ।
আরও পড়ুন: ভোট গণনা শুরু হতেই বোমাবাজি, উত্তপ্ত ডায়মন্ডহারবার
ব্যাপক উত্তেজনা সামাল দিতে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের বুদবুদ থানার পুলিশ এবং ডেপুটি কমিশনার কুমার গৌতম-সহ পুলিশ বাহিনী এবং কমব্যাট ফোর্স । বিরোধীদের অভিযোগ, পুলিশের চোখের সামনেই তাদের উপর আক্রমণ করা হয় । মানকর মহাকালী উচ্চ বিদ্যালয়ে পুলিশের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় বাহিনীও মোতায়েন থাকতে দেখা যায় । ডিসিপি পূর্ব কুমার গৌতমের নেতৃত্বে পুলিশ রুট মার্চ করে ৷ যারা অকারণে এই গণনাকেন্দ্রের বাইরে রাস্তার দুপাশে ভিড় জমিয়েছিল তাদেরকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় । বুদবুদের চাকতেঁতুল গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রার্থী বর্ণালী মাঝির স্বামী কৌশিকের অভিযোগ,"সকাল থেকেই ভোট গণনাকেন্দ্রের বাইরে রাস্তার উপরে শয়ে শয়ে তৃণমূল কর্মীরা দাঁড়িয়ে আছে । আমি পুলিশকে ফোন করার পরও আমাদের এজেন্টরা ঢুকতে পায়নি ।"
মানকর মহাকালী উচ্চ বিদ্যালয় বিরোধীদের কোন কাউন্টিং এজেন্ট সকাল 10টা পর্যন্ত গণনা কেন্দ্রে ঢুকতে পারেননি বলেই অভিযোগ । আহত সিপিএম কর্মীদেরকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে । পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বুদবুদ বাজার এলাকায় জমায়েত হওয়া মানুষজনকে সরিয়ে দিতে পুলিশ ও কমব্যাট ফোর্সকে লাঠিচার্জ করতে হয় । উত্তপ্ত পরিস্থিতি আপাতত নিয়ন্ত্রণে পুলিশের হস্তক্ষেপে ।
আরও পড়ুন: স্ট্রং রুমে আইসি-বিডিও, প্রশাসনের সাহায্যে ব্যালট বক্স চুরির অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে
প্রসঙ্গত, নির্বাচনে শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ যেমন উঠেছিল ৷ তেমনই কোথাও কোথাও প্রতিরোধ ও প্রতিবাদের জেরে আক্রান্ত হতে হয়েছিল তৃণমূলের নেতা কর্মীদের । নির্বাচনের দিন প্রায় 17 জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছিল গোটা রাজ্যজুড়ে । হিংসার সেই ছবি অব্যাহত থাকল ভোটগণনার দিনেও ।