বর্ধমান, 28 মার্চ: আদালতের মধ্যেই অ্যাসিস্টেন্ট পাবলিক প্রসিকিউটরদের (APP) সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়লেন পাবলিক প্রসিকিউটর । বর্ধমান আদালতের (Burdwan Court) ঘটনা । যা নিয়ে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে । বর্ধমান আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই পাবলিক প্রসিকিউটরের (PP) সঙ্গে বনিবনা হচ্ছে না এপিপিদের । আজ মঙ্গলবার আদালত চত্বরে পিপির বিরুদ্ধে পোস্টার পড়ে ।
পাবলিক প্রসিকিউটরকে সরানোর দাবিতে ইতিমধ্যেই 28 জন এপিপি সই করেছেন । তাদের দাবি মানা না হলে তারা মামলা না লড়ার হুমকিও দিয়েছেন । অ্যাসিস্টেন্ট পাবলিক প্রসিকিউটরদের (Assistant Public Prosecutor) অভিযোগ, বর্ধমান আদালতে যিনি পিপি ছিলেন তাঁর ফৌজদারি মামলা সম্পর্কে কোনও অভিজ্ঞতা নেই । এদিন জজ কোর্টে পাবলিক প্রসিকিউটর শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে এপিপিরা বচসায় জড়িয়ে পড়েন । সেই সময় জেলা জজ সেখান থেকে উঠে যান । এরপরেই তারা হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন । দুই পক্ষেরই অভিযোগ, একে অপরকে মারধর করেছে ।
পাবলিক প্রসিকিউটরের অভিযোগ, তাঁকে মাটিতে ফেলে বেধড়ক পিটিয়েছে এপিপিরা । তাঁর বুকে পেটে আঘাত লেগেছে । তিনি কোনওরকমে পালিয়ে বাঁচেন । অন্যদিকে অ্যাসিস্টেন্ট পাবলিক প্রসিকিউটরদের অভিযোগ, তাঁরা পিপিকে আদালত থেকে চলে যেতে বললে পিপি দু'জন এপিপির মুখে ঘুষি মারেন । এরপর নিজেই উত্তেজিত হয়ে চেয়ারে বসে পড়েন । তাঁকে কেউ মারধর করেনি ।
এপিপি বিশ্বজিৎ দাস জানান, বর্ধমান আদালতে 36 জন এপিপি আছে । তার মধ্যে 28 জন এপিপি এই পিপির অপসারণ চেয়ে জেলা জজকে এবং ডিএমকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন । এই পরিস্থিতিতে আজকে জজের সামনে যখন পিপি আসেন তখন তাঁরা জোড় হাত করে তিনি এখান থেকে উঠে যান । তখন পিপি সেখান থেকে যেতে রাজি হননি । তিনি বলেন, "উলটে আমাকে ও মানস বন্দ্যোপাধ্যায়কে মুখে ঘুষি মারেন পিপি । এর পরেও আমরা কেউ তাঁর গায়ে হাত দিইনি । আমাদের দাবি ছিল, আমরা কাজ করব না ৷ তাই তাঁকে সেখান থেকে চলে যেতে হবে । আমরা তাঁর অপসারণ চেয়েছি । আমাদের সমর্থনে হয়তো বেশিরভাগ আইনজীবীই আছেন । এখন উনি উলটে আমাদের নামে মারধরের অভিযোগ তুলছেন । সিসিটিভি দেখতেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে ।"
এপিপি মানস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, উনি প্রথম তাঁকে ঘুষি মারেন ৷ তারপর বিশ্বজিৎকে ঘুষি মারেন ৷ এরপর উত্তেজিত হয়ে নিজেই চেয়ারে পড়ে যান । সেখানে আরও চল্লিশ পঞ্চাশ আইনজীবী ছিলেন । তাঁরা সকলেই দেখেছেন উনি ঘুষি মেরেছেন । অ্যাসিস্টেন্ট পাবলিক প্রসিকিউটররা তাঁর গায়ে হাত দেননি । উনি মিথ্যে অভিযোগ করছেন বলে দাবি করেন মানস বন্দ্যোপাধ্যায় ।
বর্ধমান আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "খুব দুঃখজনক ঘটনা । আজ আমাকে মারধর করেছে এপিপিরা । আমি সততার সঙ্গে সরকারের হয়ে কাজ করছি । সেটাই আমার অপরাধ । এরা বিভিন্ন ভাবে পলিটিক্স করে । এরা আসামিদের হয়ে যে কাজ করে সেই সব কেসের সরকারি পক্ষের সিডি তাদের কাছে দেওয়ার দাবি জানায় তারা । আমি কেন দেব । আর না দেওয়ার জন্যই সেটা নাকি অন্যায় । তারা তাদের মক্কেলকে জামিন করাবে সেই সিডি আমি কেন দেব ৷ এই সব নিয়েই তারা আমাকে সরাতে চাইছে । এইভাবে কি চলতে পারে।"
আরও পড়ুন: তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা নেওয়ার অভিযোগের তদন্তে রাজি সিবিআই