ETV Bharat / state

সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নেই সিটি স্ক্যানের সুবিধে! রাস্তা দিয়ে স্ট্রেচারে শুয়ে রোগী গেলেন স্ক্যান করাতে - কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল

Patient being carried in stretcher in a busy road: সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে সিটি স্ক্যান হয় না ৷ তাই কালনায় এক রোগীকে স্ট্রেচারে শুইয়ে রাস্তার উপর দিয়েই স্ক্যান করতে নিয়ে গেল পরিবার ৷ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য এমন ঘটনা যাতে না-ঘটে তার আশ্বাস দিয়েছে ৷

ETV Bharat
স্ট্রেচারে শুয়ে রোগী যাচ্ছেন স্ক্যান করতে
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 26, 2023, 7:57 AM IST

কালনা, 25 নভেম্বর: হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে গাড়ির পাশ দিয়ে স্ট্রেচারে করে এক রোগীকে ঠেলে নিয়ে চলেছেন দুই ব্যক্তি ৷ তাঁদের পিছনে আছেন আরও তিন জন মহিলা ৷ প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা এই ভাবে তাঁরা রোগীকে সিটি স্ক্যান করতে নিয়ে যাচ্ছেন ৷ যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে ৷ কালনা শহরের এই দৃশ্যতে স্তম্ভিত স্থানীয়-সহ চিকিৎসকরাও ৷ তবে ভবিষ্যতে যাতে এই ঘটনা না-ঘটে সেই আশ্বাস দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৷

কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সাবার আলি মল্লিক ৷ পেশায় দিনমজুর সাবার আলি মল্লিকের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের মেমারির মহিষপুর এলাকায় ৷ শনিবার তাঁর সিটি স্ক্যান করতে হবে বলে জানান হাসপাতালের চিকিৎসক ৷ এদিকে কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে সিটি স্ক্যান করার কোনও ব্যবস্থা নেই ৷ তাই বাইরে থেকে স্ক্যান করিয়ে আনতে বলা হয় ৷

রোগীর শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে তাঁর উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই ৷ এই পরিস্থিতিতে পরিবারের সদস্যরা নিজেরাই একটি স্ট্রেচার জোগাড় করে রোগীকে কোনও ভাবে স্ট্রেচারে চাপিয়ে বাইরে সিটি স্ক্যান করতে নিয়ে যান ৷ রাস্তা দিয়ে স্ট্রেচার ঠেলে নিয়ে যেতে হয় ৷ বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কানে যেতেই নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ ৷ এমনকী ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না-ঘটে সেদিকেও নজর রাখা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ ৷ রোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁরা আশা করেছিলেন, হাসপাতাল থেকে রোগীকে সিটি স্ক্যান করতে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হবে ৷ কিন্তু কোনও সাহায্য পাওয়া যায়নি ৷ তাই ঝুঁকি নিয়েই রোগীকে বাইরে নিয়ে যেতে হয় ৷

রোগীর ছেলে সাবার আলি মল্লিক বলেন, "আমার বাবা সাবার আলি মল্লিক অসুস্থ ৷ কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে সিটি স্ক্যান হয় না ৷ তাই সিটি স্ক্যান করতে বাইরে গিয়েছিলাম ৷ রোগীকে স্ট্রেচারে চাপিয়ে রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাই ৷ তাঁর টোটোতে যাওয়ার ক্ষমতা নেই ৷ অগত্যা স্ট্রেচারে চাপিয়েই নিয়ে যাই ৷ হাসপাতালে অনেক খোঁজাখুঁজি করে একটি স্ট্রেচার জোগাড় করি ৷"

কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডাঃ গৌতম দাস বলেন, "হাসপাতালে যে টেস্টগুলি হয় না, সেসব টেস্ট বাইরে থেকে করতে হয় ৷ প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে রেজিস্ট্রার দেওয়া আছে ৷ রোগীর পরিবার সেখানে সই করে লিখে যায় যে, তারা নিজের দায়িত্বে বাইরে থেকে টেস্ট করতে নিয়ে যাচ্ছেন ৷ আজও একই ঘটনা ঘটেছে ৷ তাঁরা সই করে বেরিয়েছেন ৷ তবে রোগীর পরিবার যোগাযোগ করলে আমরা বিনা পয়সায় গাড়ির ব্যবস্থা করে দিই ৷ এক্ষেত্রে হয়তো একটা কমিউনিকেশন গ্যাপ হয়েছে ৷ রোগীর পরিবার যদি রোগী সহায়তা কেন্দ্রে যেত, তাহলে আমরা জানতে পারতাম ৷ সেক্ষেত্রে গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারতাম। তবে যে ঘটনা ঘটেছে সেটা সত্যিই অমানবিক ৷"

তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, "আমরা চাই প্রশাসন কিংবা যে কেউ এই ধরনের ঘটনা দেখলে আমাদের জানাক ৷ আমরা অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করব ৷ তবে আমরা রেজিস্ট্রারে আরও একটা কলাম রাখব ৷ যেখানে রোগীর পরিবারকে জানাতে হবে যে, তাঁরা সরকারি গাড়িতে বাইরে যাবেন নাকি নিজেরা ব্যবস্থা করবেন ৷ যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা না-ঘটে ৷"

আরও পড়ুন:

  1. ফিরল দানা মাঝির স্মৃতি, অ্যাম্বুলেন্স না-পেয়ে বোনের দেহ বাইকে বসিয়ে বাড়িতে আনলেন দাদা
  2. খারাপ রাস্তার জন্য পৌঁছতে পারেনি অ্যাম্বুলেন্স, পথেই সন্তান প্রসব মহিলার
  3. ফোন করেও মেলেনি অ্যাম্বুলেন্স, মাঝরাস্তায় সন্তানের জন্ম দিলেন রঞ্জিতা

কালনা, 25 নভেম্বর: হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে গাড়ির পাশ দিয়ে স্ট্রেচারে করে এক রোগীকে ঠেলে নিয়ে চলেছেন দুই ব্যক্তি ৷ তাঁদের পিছনে আছেন আরও তিন জন মহিলা ৷ প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা এই ভাবে তাঁরা রোগীকে সিটি স্ক্যান করতে নিয়ে যাচ্ছেন ৷ যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে ৷ কালনা শহরের এই দৃশ্যতে স্তম্ভিত স্থানীয়-সহ চিকিৎসকরাও ৷ তবে ভবিষ্যতে যাতে এই ঘটনা না-ঘটে সেই আশ্বাস দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৷

কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন সাবার আলি মল্লিক ৷ পেশায় দিনমজুর সাবার আলি মল্লিকের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের মেমারির মহিষপুর এলাকায় ৷ শনিবার তাঁর সিটি স্ক্যান করতে হবে বলে জানান হাসপাতালের চিকিৎসক ৷ এদিকে কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে সিটি স্ক্যান করার কোনও ব্যবস্থা নেই ৷ তাই বাইরে থেকে স্ক্যান করিয়ে আনতে বলা হয় ৷

রোগীর শারীরিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে তাঁর উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই ৷ এই পরিস্থিতিতে পরিবারের সদস্যরা নিজেরাই একটি স্ট্রেচার জোগাড় করে রোগীকে কোনও ভাবে স্ট্রেচারে চাপিয়ে বাইরে সিটি স্ক্যান করতে নিয়ে যান ৷ রাস্তা দিয়ে স্ট্রেচার ঠেলে নিয়ে যেতে হয় ৷ বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কানে যেতেই নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ ৷ এমনকী ভবিষ্যতে যাতে এই ধরনের ঘটনা না-ঘটে সেদিকেও নজর রাখা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ ৷ রোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁরা আশা করেছিলেন, হাসপাতাল থেকে রোগীকে সিটি স্ক্যান করতে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হবে ৷ কিন্তু কোনও সাহায্য পাওয়া যায়নি ৷ তাই ঝুঁকি নিয়েই রোগীকে বাইরে নিয়ে যেতে হয় ৷

রোগীর ছেলে সাবার আলি মল্লিক বলেন, "আমার বাবা সাবার আলি মল্লিক অসুস্থ ৷ কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে সিটি স্ক্যান হয় না ৷ তাই সিটি স্ক্যান করতে বাইরে গিয়েছিলাম ৷ রোগীকে স্ট্রেচারে চাপিয়ে রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাই ৷ তাঁর টোটোতে যাওয়ার ক্ষমতা নেই ৷ অগত্যা স্ট্রেচারে চাপিয়েই নিয়ে যাই ৷ হাসপাতালে অনেক খোঁজাখুঁজি করে একটি স্ট্রেচার জোগাড় করি ৷"

কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ডেপুটি সুপার ডাঃ গৌতম দাস বলেন, "হাসপাতালে যে টেস্টগুলি হয় না, সেসব টেস্ট বাইরে থেকে করতে হয় ৷ প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে রেজিস্ট্রার দেওয়া আছে ৷ রোগীর পরিবার সেখানে সই করে লিখে যায় যে, তারা নিজের দায়িত্বে বাইরে থেকে টেস্ট করতে নিয়ে যাচ্ছেন ৷ আজও একই ঘটনা ঘটেছে ৷ তাঁরা সই করে বেরিয়েছেন ৷ তবে রোগীর পরিবার যোগাযোগ করলে আমরা বিনা পয়সায় গাড়ির ব্যবস্থা করে দিই ৷ এক্ষেত্রে হয়তো একটা কমিউনিকেশন গ্যাপ হয়েছে ৷ রোগীর পরিবার যদি রোগী সহায়তা কেন্দ্রে যেত, তাহলে আমরা জানতে পারতাম ৷ সেক্ষেত্রে গাড়ির ব্যবস্থা করতে পারতাম। তবে যে ঘটনা ঘটেছে সেটা সত্যিই অমানবিক ৷"

তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, "আমরা চাই প্রশাসন কিংবা যে কেউ এই ধরনের ঘটনা দেখলে আমাদের জানাক ৷ আমরা অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করব ৷ তবে আমরা রেজিস্ট্রারে আরও একটা কলাম রাখব ৷ যেখানে রোগীর পরিবারকে জানাতে হবে যে, তাঁরা সরকারি গাড়িতে বাইরে যাবেন নাকি নিজেরা ব্যবস্থা করবেন ৷ যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা না-ঘটে ৷"

আরও পড়ুন:

  1. ফিরল দানা মাঝির স্মৃতি, অ্যাম্বুলেন্স না-পেয়ে বোনের দেহ বাইকে বসিয়ে বাড়িতে আনলেন দাদা
  2. খারাপ রাস্তার জন্য পৌঁছতে পারেনি অ্যাম্বুলেন্স, পথেই সন্তান প্রসব মহিলার
  3. ফোন করেও মেলেনি অ্যাম্বুলেন্স, মাঝরাস্তায় সন্তানের জন্ম দিলেন রঞ্জিতা
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.