রায়না, 4 নভেম্বর: ছেলে খুব দুষ্টুমি করে ৷ মা কিছুতেই তাকে বাগে আনতে পারতেন না । তাই এক সাধুর পরামর্শ শুনে বাবা-মা দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়াকে রেখে আসেন দামোদরের পাড়ে। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের শিয়ালি গ্রামে ৷ ছেলেকে এভাবে দামোদরের পাড়ে রেখে আসায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। ঘটনায় ওই শিশুর বাবা-মা ও দাদুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শিশুর বাবাকে তিন দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত । পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি বলেন, "কেন ঘটনাটি ঘটেছে পুলিশ তদন্ত করে দেখছে ।" পাশাপাশি কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, 8 বছরের ওই শিশুটি খুবই দুষ্টুমি করত। বাড়ি নদিয়ার চাকদহে। বর্ধমানের মেমারিতে তার মামার বাড়ি। মামার বাড়ির লোকজন রায়নার শিয়ালি গ্রামে একটা আশ্রমে যাতায়াত করতেন। ওই আশ্রমের সাধু পরিবারটিকে পরামর্শ দেন দুষ্টুমি কমাতে গেলে ছেলেকে রাতের অন্ধকারে দামোদর নদের পাড়ে রেখে আসতে হবে। সেই সাধুর পরামর্শ মতো তারা দ্বিতীয় শ্রেণির দুষ্টুকে নদীর পাড়ে রেখে আসে ।
ছোট্ট বাচ্চাটি বাবা-মাকে না দেখতে পেয়ে স্বাভাবিকভাবেই কাঁদতে থাকে ৷ রাতে খেয়া পারাপারের সময় কান্নার আওয়াজ শুনতে পান অনেকে । এরপর তারা তাকে উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয় । পুলিশ শিশুটিকে উদ্ধার করে হুগলির একটা হোমে পাঠিয়েছে। তার থেকে ঘটনার কথা জেনে শিশুর বাবা, মা ও দাদুকে গ্রেফতার করে পুলিশ । আটক করা হয় সাধুকেও।
ওই আশ্রমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ওমপ্রকাশ সিং বলেন, "শিশুরা চঞ্চল হবে সেটাই স্বাভাবিক। শান্ত করার জন্য তার কাউন্সেলিং-সহ অন্যান্য উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে। কিন্তু কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে কিছু করলে শিশুরই ক্ষতি হয়ে যাবে ।"
আরও পড়ুন: নাড়ি ছিন্ন করার আগেই শিশু বিক্রির রফা করছে হাসপাতাল, বিরাট পাচার চক্রের হদিশ হায়দরাবাদে