জামালপুর, 26 সেপ্টেম্বর: জামালপুরের কুলীনগ্রামকে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার আবেদন জানালেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। বৈষ্ণব সংস্কৃতির সঙ্গে নাম জড়িয়ে রয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার জামালপুরের কুলীনগ্রাম। কথিত আছে, শ্রীচৈতন্যের জন্মের আগেই কবি মালাধর বসুর হাত ধরেই বৈষ্ণব তীর্থক্ষেত্র হিসেবে কুলীনগ্রামের নাম ছড়ায়। রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ রবিবার কুলীনগ্রামের বিভিন্ন মন্দির ও বৈষ্ণব মঠ ঘুরে দেখার পর সেই কথাই ঘোষণা করলেন। মন্ত্রীর ঘোষণায় খুশি কুলীনগ্রামের বাসিন্দারা।
জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের আবুজহাটি 2 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত এই কুলীনগ্রাম। এই গ্রাম মালাধর বসুর জন্মস্থান পাশাপাশি হরিদাস ঠাকুরের সাধনাস্থল। মালাধর বসুর নাতি রামানন্দ বসুর সঙ্গে চৈতন্যদেবের ঘনিষ্ঠতা ছিল। বৈষ্ণব তীর্থক্ষেত্র হিসেবে পরিচিত এই গ্রামে প্রভু চৈতন্যদেবের পদধূলি পড়েছিল। চৈতন্য মঙ্গলকাব্যে উল্লেখ রয়েছে চৈতন্যদেব এই কুলীনগ্রামে তিন দিন ছিলেন। কুলীনগ্রামে রথযাত্রা দেখতে দূরদূরান্ত থেকে মানুষজন ভিড় করেন।
শুধু তাই নয়, গ্রামের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অনেক পুরনো মন্দির। রয়েছে রাজা বল্লাল সেনের আমলে নির্মিত গোপাল মন্দিরও। ফলে বৈষ্ণব তীর্থক্ষেত্র হিসেবে কুলীনগ্রাম যাতে প্রসিদ্ধ লাভ করে সেই দাবি জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। গতকাল, সোমবার মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ নিজে ওই জায়গা ঘুরে সেখানে ট্যুরিজম সেন্টার গড়ার কথা ঘোষণা করেন। পাশাপাশি এই গ্রামকে যাতে হেরিটেজ গ্রাম হিসেবেও তকমা দেওয়া হয় সেই বার্তাও দেন মন্ত্রী। বিষয়টি নিয়ে পর্যটন মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, "জামালপুরের কুলীনগ্রাম মালাধর বসুর জন্মস্থান। প্রভু চৈতন্যদেব এই গ্রামে এসেছিলেন। চৈতন্যদেবের জন্মের আগে মালাধর বসু শ্রীকৃষ্ণ বিজয় কাব্য রচনা করেন। মালাধর বসুর নাতি ছিলেন রামানন্দ। তিনি মহাপ্রভুর পার্ষদ (ঘনিষ্ঠ) ছিলেন। ফলে কুলীনগ্রাম একটা ঐতিহাসিক স্থান। এই গ্রামকে হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণার পাশাপাশি যাতে পর্যটন মানচিত্রে তুলে ধরা যায় সেই বিষয়ে মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনের সঙ্গে আলোচনা হবে।"
আরও পড়ুন: ভারতসেরা পর্যটন গ্রামের স্বীকৃতি পাওয়ার পরই দায়িত্ব বাড়ল কিরীটেশ্বরী গ্রামবাসীদের