দুর্গাপুর, 21 অগস্ট : কৃষক পরিবারের মেয়ে ৷ ছোট থেকেই মাটির সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক ৷ সেই মেয়ে সবুজ মাঠকে ভালবেসে ফেলবেন এতে আর আশ্চর্যের কী ৷ পূর্ব বর্ধমানের গুসকরার মেয়ে সীমা বৈরাগ্য ৷ ছোটো থেকেই ফুটবল মাঠে দাপিয়ে বেড়াতেন ৷ এখন আর খেলেন না ৷ কিন্তু চামড়ার গোলাকার বস্তুটির সঙ্গে সখ্যতা কমনি বই বেড়েছে ৷ ফুটবল খেলা আর মাঠের কাছাকাছি থাকতে ফুটবল রেফারির কাজ বেছে নিয়েছেন সীমা ৷ সুষ্ঠুভাবে ম্যাচ পরিচালনা করে ফুটবল মহলের প্রশংসা আদায় করে নিয়েছেন তিনি ৷
বিদেশের ফুটবলে মহিলা রেফারি বিষয়টি নতুন নয় ৷ আমাদের দেশেও মহিলা রেফারি হিসেবে শিলিগুড়ির কণিকা বর্মণ, মণিপুরের রঞ্জিতা দেবীরা রয়েছেন ৷ কিন্তু গ্রামেগঞ্জের মানুষের কাছে মহিলা ফুটবল রেফারি মানে ভিড় করে দেখার মতো জিনিস ৷ পূর্ব বর্ধমানের গুসকরার মেয়ে সীমা বৈরাগীর সঙ্গেও এমনই ঘটে ৷ জেলায় জেলায় গ্রামেগঞ্জে ফুটবল খেলা পরিচালনা করছেন বছর তিরিশের সীমা ৷ সাত-আট বছর হয়ে গেল এই কাজের সঙ্গে যুক্ত সীমা ৷
মহিলা হয়ে মাঠে 22 জন পুরুষকে সামলানো সহজ কথা নয় ৷ তার উপর সীমা রোগা পাতলা, ছোটোখাটো চেহারার ৷ অসুবিধে হয় না ? এক গাল হেসে সীমা বলছেন, "না না, কোনও অসুবিধে হয় না ৷ তবে একটু সাহসের প্রয়োজন আছে বইকি ৷ সবসময় নিউট্রাল থাকি ৷ মাঠের নিয়ম কানুনগুলি প্রয়োগ করতে হয় ৷ আর মহিলা হয়ে ছেলেদের ফুটবল খেলাচ্ছি, এই বিষয়টা মাথাতেই রাখি না ৷ শুধুমাত্র সুষ্ঠুভাবে ম্যাচ পরিচালনা করার কথাই মাথার মধ্যে থাকে ৷"
আরও পড়ুন : Afghan Para-athlete: কাবুল থেকে বেরোনোর পথ নেই, ছারখার জাকিয়ার প্যারালিম্পিকসের স্বপ্ন
জেলার মেয়েকে এমন অন্যরকম ভূমিকায় দেখে সাধুবাদ জানিয়েছে শহর দুর্গাপুরের মানুষ । দুর্গাপুরের মেয়র দিলীপ অগস্তির মুখে শোনা গিয়েছে সীমা বৈরাগীর প্রশংসা । রেফারির কাজ করে সংসারে অনেকটাই স্বচ্ছলতাও ফিরিয়ে এনেছেন সীমা ৷ ফুটবল রেফারির ভূমিকায় একসময় পুরুষদের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল ৷ সেই অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে ৷ সীমাদের মতো মহিলাদের দেখে এই কাজে আরও অনেক মহিলা এগিয়ে আসবে, এমনই আশা রাজ্যের ফুটবল মহলের ৷