রায়না, 15 ফেব্রুয়ারি: স্কুলে রয়েছে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের ইউনিট। এরপরেও রায়না-2 ব্লকের একলক্ষী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রায় একলাখ টাকা বিল পাঠিয়েছে বিদ্যুৎ দফতর (Electricity Bill At Rayna School)। সেই বিলের টাকা না পাওয়ায় প্রায় তিন মাস ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে এই স্কুল (School)। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ দফতর, শিক্ষা দফতরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে একলক্ষী উচ্চ বিদ্যালয়ে রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরের বিদ্যুতের সংযোগ ছিল। পরবর্তীকালে সৌরশক্তির সাহায্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য 2019 সালের ডিসেম্বর মাসে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের ইউনিট চালু করা হয়। সেই থেকে সৌর বিদ্যুৎ ইউনিট থেকেই স্কুলে বিদ্যুৎ সংযোগ করা হয়। এরপর, বিদ্যুৎ দফতরের তরফে আগের মিটার রিডিং যন্ত্র খুলে নিয়ে নেট মিটার যন্ত্র লাগানো হয়। এরপরেও বিদ্যুৎ দফতরের তরফে বিদ্যুৎ বিল বাবদ পাঠানো হয় 98 হাজার 788 টাকা।
বিদ্যালয়ের তরফে বিদ্যুৎ দফতরকে বিষয়টি জানানো হয়। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। উল্টে বিদ্যুৎ দফতরের তরফে কোনও নোটিশ না দিয়ে গত বছরের ডিসেম্বর মাসে বিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়। চলতি মাসে চালু হয়েছে স্কুলের পঠন-পাঠন। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় স্কুলে চলছে অচলাবস্থা। পাম্প বন্ধ থাকায় বিদ্যালয়ে পাওয় যাচ্ছে না পানীয় জল। এছাড়া কম্পিউটার-সহ অন্যান্য কাজকর্ম বন্ধ রাখতে হয়েছে। দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী সোমাশ্রী ঘোষ জানান, খুব কষ্ট করে বাথরুমে যেতে হচ্ছে কারণ সেখানে অন্ধকার এবং জল নেই। এছাড়া খাবার জল পাচ্ছি না। ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা মিড ডে মিল খাওয়ার পরে হাত ধোওয়ার জন্য কোনও জল পাচ্ছে না। বন্ধ রয়েছে কম্পিউটারে ক্লাসরুমও। বাইরে থেকে খাবার জল আনতে হচ্ছে। অবিলম্বে স্কুলে বিদ্যুৎ চালু করলে আমাদের সুবিধা হয়। নবম শ্রেণির ছাত্র সায়ন কোনার জানায়, স্কুলে বিদ্যুৎ না থাকায় জল পাচ্ছি না। বাড়ি থেকে আনা জল শেষ হয়ে গেলে আর জল মিলছে না। বন্ধ কম্পিউটার ক্লাসও।
আরও পড়ুন: বর্ধমান স্টেশনে উদ্ধার 111টি কচ্ছপ, গ্রেফতার 2
স্কুলের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ মইদুল হক বলেন, "আমাদের স্কুলে 2019 সালের ডিসেম্বর মাসে সোলার সিস্টেম চালু করা হয়েছে। নেট মিটার লাগানো হয়। গত লকডাউনের সময় একবারও বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা রিডিং নিতে আসেনি। লকডাউনের সময় স্কুল পুরোপুরি বন্ধও ছিল। কিন্তু 2021 সালের অক্টোবর মাসে বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা এসে জানায়, প্রায় একলাখ টাকা বিল হয়েছে। সেখানে সোলার সিস্টেমের কোনও উল্লেখ নেই। অথচ আমাদের সোলার সিস্টেম চলছে। আমরা তাদের জানাই সঠিক বিল হলে আমরা বিল মিটিয়ে দেব। এরপর বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিক থেকে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ সংযোগ আসেনি। ফলে বিদ্যালয়ের সমস্ত কাজ ব্যহত হচ্ছে।" বিদ্যুৎ দফতরের তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানানো হয়েছে।