বর্ধমান, 27 জুন: গাড়ি করে কলকাতা থেকে বর্ধমান ফেরার পথে ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হল গাড়ির চালক-সহ দম্পতির । সোমবার গভীর রাতে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে হুগলি জেলার গুড়াপের 2 নং জাতীয় সড়কে । পুলিশ জানিয়েছে মৃতদের নাম রনজিত মণ্ডল (64), বিজলি মণ্ডল (59) ও বেচু ঘোয়াহ (34)। মৃত তিনজনের বাড়ি বর্ধমান শহরে । গুড়াপ থানার পুলিশ ঘাতক ট্রাকটিকে আটক করেছে ।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার গভীর রাতে রনজিত মণ্ডল ও তার স্ত্রী বিজলি মণ্ডল দমদম এয়ারপোর্ট থেকে বর্ধমানে ফিরছিলেন । গুড়াপের মাঝিনানের কাছে তাদের গাড়িটা একটা লরির পিছনে ধাক্কা মারে । সেই সময় ওই গাড়ির পিছনে আরও একটা ট্রাক ধাক্কা মারলে তিনজনের মৃত্যু হয় ।
মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, রনজিত মণ্ডল বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট ছিলেন । বছর চারেক আগে তিনি অবসর নেন । অবসর নেওয়ার পরে তিনি মাঝেমধ্যেই ব্যাঙ্গালোরে মেয়ের বাড়িতে গিয়ে থাকতেন । এবার ব্যাঙ্গালোরে গিয়েছিলেন মূলত চিকিৎসা করানোর জন্য । সেখানে চিকিৎসা করানোর পরে মেয়ের বাড়ি ঘুরে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন । সোমবার রাতে দমদম এয়ারপোর্টে নামেন । তাঁদের আনার জন্য বর্ধমান থেকে একটা চারচাকা গাড়ি যায় । এরপর ফেরার সময় তাদের গাড়ি দুর্ঘটনার মুখে পড়লে ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয় ।
হুগলি জেলা গ্রামীণ পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে গুড়াপের মাঝিনান এলাকায় কলকাতার দিক থেকে বর্ধমানগামী একটা প্রাইভেট গাড়ি লরির পিছনে ধাক্কা মারে এরপর পিছন থেকে আরও একটা ট্রাক গাড়িটির পিছনে ধাক্কা মারে । ফলে গাড়িটা দুমড়ে মুচড়ে যায় । গ্যাস কাটার দিয়ে গাড়ির বিভিন্ন অংশ কেটে তিনজনকে আশংকাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয় । সেখানেই তিনজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা ।
আরও পড়ুন : খারাপ আবহাওয়া, সেবকে জরুরি অবতরণ মমতার কপ্টারের
স্থানীয় বাসিন্দা লাল্টু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "রনজিত মণ্ডল ও তাঁর স্ত্রী ব্যাঙ্গালোরে মেয়ের বাড়িতে গিয়েছিলেন । সেখানে থেকে ফেরার সময় রাতে দমদম এয়ারপোর্টে নামেন তাঁরা । এরপর চারচাকা করে ফেরার পথে গুড়াপে তাদের গাড়ি একটা লরির পিছনে ধাক্কা মারে ৷ সেই সময় পিছন দিক থেকে আসা একটা ট্রাক ওই গাড়ির পিছনে ধাক্কা মারলে গাড়িটা দুমড়ে মুচড়ে যায় । ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয় । মারা যায় গাড়ির চালকও ।"
মৃতের ভাই কাজল কুমার মণ্ডল বলেন, "ব্যাঙ্গালোরে মেয়ের বাড়ি থেকে ফ্লাইটে দমদম এয়ারপোর্টে নামেন তাঁরা । এরপর তাঁরা গাড়ি করে বর্ধমানের আনন্দপল্লিতে ফিরছিলেন । হুগলির গুড়াপের কাছে একটা ট্রাক তাদের গাড়িতে ধাক্কা মারে । ফলে গাড়ি ভেঙে দুমড়ে যায় । ড্রাইভার ছাড়া বাকি ওই দম্পতির মুখ চেনা যায়নি । গ্যাস কাটার দিয়ে কেটে তাদের মৃতদেহ বের করতে হয় । এদিন ভোরের দিকে পুলিশ থেকে ফোন করে জানানো হয় একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে । খবর পেয়ে আমরা গুড়াপ থানায় যাই । পরে তাদের বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হয় ।"