ETV Bharat / state

হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব, খেলনা নিয়ে পথে আয়নালরা

মোবাইলের নেশায় মশগুল আজকের শৈশব ৷ শালপাতার সেপাই বা কাগজের ডুগডুগি যে কী জানেই না আজকালকার বাচ্চারা ৷ শৈশব ফেরাতে খেলনা নিয়ে আজও পথে পথে ঘোরেন আয়নালরা ৷

আয়নাল
আয়নাল
author img

By

Published : Mar 15, 2020, 6:57 PM IST

Updated : Mar 15, 2020, 8:35 PM IST

বর্ধমান,15 মার্চ : লুকোচুরি, কানামাছি, ডাংগুলির শৈশব আজ ধুলিমাখা স্মৃতি । কংক্রিটের জঙ্গলে হারিয়ে যাচ্ছে সবুজ ঘাসে ঢাকা গালিচাগুলো । ঠাকুরমার ঝুলি, নন্টে-ফন্টেদের কদর কমছে একটু একটু করে । শৈশব আজ বন্দী স্মার্টফোনের ছোট্ট স্ক্রিনটায় । তাই কাগজের কুমির, তালপাতার সেপাই, কিংবা ডুগডুগি বাজানো গাড়ি, অথবা খেলনা বেহালাগুলো আজ আর সুর তুলছে না । পথের পাশে পসরা সাজিয়ে বসে থাকেন আয়নালরা । অপেক্ষা করেন । অফিস ফেরত কোনও বাবা বলেন না, "দেখে শুনে একটা খেলনা দিন তো ।"

বাবা, ঠাকুরদার হাত ধরেই এই কাজে হাতেখড়ি ৷ তাই চাষের জমির মাটি কোপাতে জানে না এই হাত । কারখানায় মেশিন চালাতেও জানে না ৷ শুধু জানে শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে ৷ তাঁর বানানো খেলনা হাতে শিশুদের হাসি কবে যেন নিজের অজান্তেই মনের কোণে জায়গা করে নিয়েছিল ৷ তারপর থেকে সেটাই যেন নেশা হয়ে গিয়েছিল ৷ নিত্য-নতুন খেলনা বানানো ৷ সেই খেলনা শিশুদের হাতে তুলে দেওয়া ৷

কিন্তু এখন মোবাইলের নেশা কেড়ে নিয়েছে শৈশব ৷ এখন শিশুরা খেলনা নয়, মোবাইলে মশগুল ৷ খেলনার বিক্রি দিন দিন কমছে ৷ ফলে একটু একটু করে টান ধরছে পকেটে ৷ দু'বেলা ভরপেট খাওয়া জোটাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে ৷ সবটাই বুঝছেন ৷ কিন্তু তবু খেলনা বানানো যে নেশা ৷ চাইলেও যে ছাড়তে পারছেন না ৷ আর ছেড়ে করবেনই বা কী ? তাই আজও নিজের বানানো খেলনা নিয়ে সুদূর ডায়মন্ড হারবার থেকে নিয়মিত আসেন বর্ধমান শহরে । ঘুরে বেড়ান এক জেলা থেকে অন্য জেলায় । খোঁজেন রাশি রাশি সেই রাঙা হাসিগুলো ।

আয়নাল শেখ । গালে কাঁচাপাকা দাড়ি । বয়স পঞ্চাশের কোটায় । বাড়ি ডায়মন্ড হারবার । ভরা সংসার । কিন্তু উপার্জন, ওই ঘুরে ঘুরে খেলনা তৈরি করে বিক্রি করে যেটুকু আয় হয়, তাতেই চলে দিনযাপনের চেষ্টা । প্রায় যাযাবরের মতো ছুটে বেড়ান এক শহর থেকে অন্য শহরে ৷

হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব, খেলনা নিয়ে পথে আয়নালরা

আয়নাল জানান, একটা সময় তাঁর বানানো খেলনার ভালো চাহিদা ছিল ৷ কিন্তু এখন তাতে ভাটার টান । তাঁর আক্ষেপ, "মোবাইল ফোন আজকের শিশু, কিশোরদের ছেলেবেলা নষ্ট করে দিচ্ছে । আধুনিক বাবা-মায়েরা এখন আর তাদের ছেলেমেয়েদের এই সমস্ত খেলনা কিনে দেয় না । এক একটা বাড়িতে এখন চারটে করে মোবাইল । " বর্ধমান শহরের রাস্তার এক কোণে বসে থাকা আয়নালের চোখ-মুখে এখন শুধুই হতাশা ৷ বলেন, "আগে খুব বিক্রি হতো ৷ তখন কোথাও গিয়ে ঝুড়ি নামালে ঝুড়ি মুহূর্তের মধ্যে খালি হয়ে যেত ৷ এখন মোবাইলের কারণে বাচ্চারা আর এগুলি পছন্দ করছে না ৷ বিক্রিও কমে গেছে ৷ "

টেকনোলজির এই যুগে শিশুরা সেই শৈশব ফিরে পাবে কি না তা অবশ্য জানা নেই ৷ তবে আজও আয়নালরা কচিকাঁচাদের শৈশব ফেরাতে পথে পথে হাঁক দেন, "খেলনা নেবে গো...খেলনা...।"

বর্ধমান,15 মার্চ : লুকোচুরি, কানামাছি, ডাংগুলির শৈশব আজ ধুলিমাখা স্মৃতি । কংক্রিটের জঙ্গলে হারিয়ে যাচ্ছে সবুজ ঘাসে ঢাকা গালিচাগুলো । ঠাকুরমার ঝুলি, নন্টে-ফন্টেদের কদর কমছে একটু একটু করে । শৈশব আজ বন্দী স্মার্টফোনের ছোট্ট স্ক্রিনটায় । তাই কাগজের কুমির, তালপাতার সেপাই, কিংবা ডুগডুগি বাজানো গাড়ি, অথবা খেলনা বেহালাগুলো আজ আর সুর তুলছে না । পথের পাশে পসরা সাজিয়ে বসে থাকেন আয়নালরা । অপেক্ষা করেন । অফিস ফেরত কোনও বাবা বলেন না, "দেখে শুনে একটা খেলনা দিন তো ।"

বাবা, ঠাকুরদার হাত ধরেই এই কাজে হাতেখড়ি ৷ তাই চাষের জমির মাটি কোপাতে জানে না এই হাত । কারখানায় মেশিন চালাতেও জানে না ৷ শুধু জানে শিশুদের মুখে হাসি ফোটাতে ৷ তাঁর বানানো খেলনা হাতে শিশুদের হাসি কবে যেন নিজের অজান্তেই মনের কোণে জায়গা করে নিয়েছিল ৷ তারপর থেকে সেটাই যেন নেশা হয়ে গিয়েছিল ৷ নিত্য-নতুন খেলনা বানানো ৷ সেই খেলনা শিশুদের হাতে তুলে দেওয়া ৷

কিন্তু এখন মোবাইলের নেশা কেড়ে নিয়েছে শৈশব ৷ এখন শিশুরা খেলনা নয়, মোবাইলে মশগুল ৷ খেলনার বিক্রি দিন দিন কমছে ৷ ফলে একটু একটু করে টান ধরছে পকেটে ৷ দু'বেলা ভরপেট খাওয়া জোটাতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে ৷ সবটাই বুঝছেন ৷ কিন্তু তবু খেলনা বানানো যে নেশা ৷ চাইলেও যে ছাড়তে পারছেন না ৷ আর ছেড়ে করবেনই বা কী ? তাই আজও নিজের বানানো খেলনা নিয়ে সুদূর ডায়মন্ড হারবার থেকে নিয়মিত আসেন বর্ধমান শহরে । ঘুরে বেড়ান এক জেলা থেকে অন্য জেলায় । খোঁজেন রাশি রাশি সেই রাঙা হাসিগুলো ।

আয়নাল শেখ । গালে কাঁচাপাকা দাড়ি । বয়স পঞ্চাশের কোটায় । বাড়ি ডায়মন্ড হারবার । ভরা সংসার । কিন্তু উপার্জন, ওই ঘুরে ঘুরে খেলনা তৈরি করে বিক্রি করে যেটুকু আয় হয়, তাতেই চলে দিনযাপনের চেষ্টা । প্রায় যাযাবরের মতো ছুটে বেড়ান এক শহর থেকে অন্য শহরে ৷

হারিয়ে যাচ্ছে শৈশব, খেলনা নিয়ে পথে আয়নালরা

আয়নাল জানান, একটা সময় তাঁর বানানো খেলনার ভালো চাহিদা ছিল ৷ কিন্তু এখন তাতে ভাটার টান । তাঁর আক্ষেপ, "মোবাইল ফোন আজকের শিশু, কিশোরদের ছেলেবেলা নষ্ট করে দিচ্ছে । আধুনিক বাবা-মায়েরা এখন আর তাদের ছেলেমেয়েদের এই সমস্ত খেলনা কিনে দেয় না । এক একটা বাড়িতে এখন চারটে করে মোবাইল । " বর্ধমান শহরের রাস্তার এক কোণে বসে থাকা আয়নালের চোখ-মুখে এখন শুধুই হতাশা ৷ বলেন, "আগে খুব বিক্রি হতো ৷ তখন কোথাও গিয়ে ঝুড়ি নামালে ঝুড়ি মুহূর্তের মধ্যে খালি হয়ে যেত ৷ এখন মোবাইলের কারণে বাচ্চারা আর এগুলি পছন্দ করছে না ৷ বিক্রিও কমে গেছে ৷ "

টেকনোলজির এই যুগে শিশুরা সেই শৈশব ফিরে পাবে কি না তা অবশ্য জানা নেই ৷ তবে আজও আয়নালরা কচিকাঁচাদের শৈশব ফেরাতে পথে পথে হাঁক দেন, "খেলনা নেবে গো...খেলনা...।"

Last Updated : Mar 15, 2020, 8:35 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.