বর্ধমান, 6 এপ্রিল: দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিনেই দলীয় জেলা কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে বিক্ষোভ দেখালেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীরা । বর্ধমান শহরের ঘটনা । ফলে ফের প্রকাশ্যে চলে এল বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল ।
পঞ্চায়েত ভোটের আগে এমনিতেই বেশ কিছুদিন ধরে বিজেপির দলীয় কোন্দল নিয়ে বিব্রত বর্ধমানের নেতা কর্মীরা । মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহে সাংসদ এস এস আলুওহলিয়া, জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা-সহ বেশ কিছু নেতার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অভিযোগ তুলে গণইস্তফা দেন বিজেপির বেশ কিছু নেতা । এরপরেই তৎকালীন সাংগঠনিক জেলা সহ-সভাপতি শ্যামল রায়কে দল থেকে বহিষ্কার করা হয় বিজেপির তরফে । যা বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীরা মেনে নিতে পারেনি বলে গেরুয়া শিবির সূত্রে খবর ।
অভিযোগ, বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ দলের বর্ধমানে জেলা কার্যালয়ের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীরা । শুরু হয় বিজেপির দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বাদানুবাদ । ভিতরে আটকে থাকা নেতা-কর্মীরা গেটের তালা ভেঙে বাইরে বের হন । এরপর তাঁরা বিক্ষুব্ধ কর্মীদের একটা অস্থায়ী শিবির ভেঙে দেন । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বর্ধমান থানার পুলিশ ।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই বেশ কিছু বিজেপি কর্মী দলের সাংসদ, জেলা সভাপতির বার্তা না মেনে ইচ্ছেমতো কাজ করার চেষ্টা করছিল । তাঁদেরকে দলের তরফে বারবার সতর্ক করা হয়েছিল । কিন্তু তাঁরা দল বিরোধী কাজকর্ম করতে শুরু করেন । দলের শৃঙ্খলা না মানায় দল সেটা মেনে নেয়নি ।
বিজেপির সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনের পরে সিপিএম, তৃণমূল ছেড়ে একাধিক নেতা-কর্মী বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন । এর মধ্যে বেশ কিছু নেতা বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরে দলীয় পদ পায় । এর ফলে বিজেপির পুরনো দিনের কর্মীদের সঙ্গে ওই সব নেতা-কর্মীদের কোন্দল শুরু হয় । যা সামলাতে হিমসিম খায় জেলা নেতৃত্ব । এরপর বিজেপির জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা-য়ের সঙ্গেও বিজেপির বেশ কিছু নেতার সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকে । ফলে বেশ কিছু নেতা দলে কোণঠাসা হয়ে পড়েন । এছাড়া বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ এস এস আলুওহলিয়ার বিরুদ্ধেও সোচ্চার হন বেশ কিছু নেতা-কর্মী । যা দলকে অস্বস্তিতে ফেলে দেয় ।
বিজেপির বিক্ষুব্ধ কর্মী রাজু পাত্র বলেন, ‘‘দলের সভাপতি ইচ্ছেমতো কাজকর্ম করে চলেছেন । তিনি সভাপতি হওয়ার পর থেকে পুরনো কর্মীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন । পরিবর্তে সিপিএম কিংবা অন্য দল থেকে আসা কর্মীরা ছড়ি ঘোরাতে শুরু করেন । এদিকে শ্যামল রায়কে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছে । যেটা পুরনো বিজেপি কর্মীরা মানতে রাজি নন । তাই তাঁকে দলে ফেরানোর দাবিতে বিক্ষোভ চলছে ।’’ তবে এই নিয়ে বিজেপির জেলাস্তরের শীর্ষ নেতৃত্বের কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি ৷
আরও পড়ুন: দ্বিধাহীন ভাবে কড়া সিদ্ধান্ত নেন প্রধানমন্ত্রী মোদি, বললেন অমিত শাহ