বর্ধমান, 11 অগস্ট: বাবা বর্ধমানেশ্বর । 1972 সালে বর্ধমান শহরের আলমগঞ্জ এলাকায় পুকুর খোঁড়ার কাজ চলছিল । শ্রমিকেরা যখন শাবল-গাঁইতি দিয়ে মাটি কাটছিলেন সেই সময় তাঁরা একটা শব্দ শুনতে পান ৷ সেই শব্দ ছিল কোনও পাথরের উপরে আঘাত করলে যেমন হয় সেইরকম ৷ এরপর তাঁরা সচেতনভাবে মাটি খোঁড়ার কাজ চালিয়ে গেলে উঠে আসে বিশালাকার একটি শিবলিঙ্গ । যার উচ্চতা প্রায় 6 ফুটের বেশি । ওজন 13 টনের বেশি ৷ ব্যাস প্রায় ছয় ফুট ও গৌরী পট্টের পরিধি প্রায় 18 ফুট । এরপর ক্রেনের সাহায্যে সেই শিবলিঙ্গ তোলা হয় । শাবল, গাঁইতির আঘাতে শিবলিঙ্গের গায়ে যদিও অনেক ক্ষত হয় । সেদিন ছিল 11 অগস্ট । বাংলায় তারিখ ছিল 25 শ্রাবণ (Crowd of Devotee at Bardhamaneswar Temple)।
আরও পড়ুন: 2 বছর পর কৌশিকী অমাবস্যায় খুলছে তারাপীঠের দরজা, 5 লক্ষ ভক্ত সমাগমের সম্ভাবনা
ইতিহাসবিদেরা বলছেন, এটা দ্বাদশ শতকের নিদর্শন । এমনকী ইতিহাস প্রসিদ্ধ কণিষ্কও এই শিবলিঙ্গের পুজো করতেন বলে কথিত আছে । আজ বর্ধমানেশ্বরের 51তম আবির্ভাব দিবস । দুধ ও গঙ্গাজল দিয়ে নিত্য পুজো করা হলেও শিবরাত্রির সময় ও শ্রাবণ মাসে আবির্ভাব তিথিতে এখানে মেলা বসে । শ্রাবণ মাসে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষজন জল ঢালতে আসেন । অনেকে আবার কাটোয়ার গঙ্গা থেকে বাঁকে করে জল ভরে হাঁটা পথে বর্ধমানেশ্বরে আসেন জল ঢালতে ।
11 অগস্ট আবির্ভাব দিবস উপলক্ষে ইতিমধ্যেই সেজে উঠেছে আলমগঞ্জের বর্ধমানেশ্বর । এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় বাঁশের ব্যারিকেড করে মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ । সকাল থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে হাজার হাজার পুণ্যার্থী এদিন এখানে শিবের মাথায় জল ঢালতে আসেন । মন্দিরের পিছনেই আছে দুধ পুকুর । সেখান থেকেও জল নিয়ে জল ঢালা হয় । এদিন পুণ্যার্থীদের জন্য রয়েছে ভোগ নেওয়ার ব্যবস্থাও । প্রসিদ্ধ এই বর্ধমানেশ্বর মন্দিরে যাবেন কীভাবে ? বর্ধমান স্টেশনে নেমে টাউন সার্ভিস বাসে চেপে সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে বিবেকানন্দ কলেজ মোড়ে নামতে হবে । সেখান থেকে টোটো করে দুই কিলোমিটার গেলেই মিলবে আলমগঞ্জের বর্ধমানেশ্বর । কিংবা বর্ধমান স্টেশনে নেমে টোটো পাওয়া যায় বর্ধমানেশ্বর যাওয়ার ৷