দাসপুর, 11 ফেব্রুয়ারি: ফেসবুকে আলাপ পাতিয়ে মহিলার কণ্ঠস্বর নকল করে ফোনে প্রেমের ভান ৷ পরে 90 হাজার টাকা প্রতারণা ৷ চন্দ্রকোনায় যুবকের হাতে চরম অপদস্থ হতে হল আরেক যুবককে। শেষমেশ প্রতারণার কথা বুঝতে পেরে হাতেনাতে পাকড়াও করে অভিযুক্তকে পুলিশের হাতে তুলে দিল প্রতারিত (Chandrokona Fraud Case via Facebook)। ঘটনা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুর থানার।
জানা যায়, চন্দ্রকোনা থানার কদমতলা এলাকার এক যুবক শঙ্খ মণ্ডল যিনি মহিলার নামে ফেক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খোলে। আর সেই ফেক ফেসবুক অ্যাকাউন্টের নাম দেওয়া হয় 'সুস্মিতা সুস্মিতা'। সেই 'সুস্মিতা সুস্মিতা' ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকেই দাসপুরের গোপালপুরের এক যুবককে প্রথমে মেসেজ করে এবং পরে নম্বর দেওয়া-নেওয়া হয়। চন্দ্রকোনার যুবক শঙ্খ মণ্ডল মহিলা কণ্ঠস্বর নকল করে ফোনে দাসপুরের ওই যুবকের সঙ্গে ফোনে কথাবার্তা শুরু করে।
বুঝে উঠতে না-পেরে দু'জনের মধ্যে চলা কথাবার্তা গড়ায় প্রেম। প্রেমে গদগদ হয়ে মহিলা কণ্ঠস্বর নকল করা চন্দ্রকোনার যুবকের কথাবার্তায় মজে গিয়েই 90 হাজার টাকা দিয়ে দেন দাসপুরের ওই প্রেমিক যুবক। পরে ঘটনা বুঝতে পারে দাসপুরের যুবকটি। চন্দ্রকোনার ওই প্রতারক যুবক বিউটি পার্লারের কাজের সঙ্গে যুক্ত বলে জানা গিয়েছে। আর সেই কাজকেই হাতিয়ার করে দাসপুরের প্রতারিত যুবক তাকে হাতেনাতে ধরার জন্য ফাঁদ পাতে ৷ তারই এক বন্ধুকে দিয়ে ফোন করিয়ে বিউটি পার্লারের কাজের অর্ডার দেওয়া হয়। তাতেই ঝুলি থেকে বেরিয়ে পড়ে বিড়াল!
আরও পড়ুন: পুলিশের নামে সোশাল মিডিয়ায় ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে তোলাবাজি, সত্যতা স্বীকার মালদা পুলিশ সুপারের
চন্দ্রকোনার শঙ্খ মণ্ডল বিউটি পার্লারের কাজের অর্ডার নিতে গিয়েই হাতেনাতে ধরা পড়ে । তাকে দাসপুরে নিয়ে গিয়ে আটকে রাখে প্রতারিত যুবক-সহ তাঁর বন্ধুরা। দাসপুরের ওই যুবক মহিলা কণ্ঠস্বরে তার নকল প্রেমিকাকে ফাঁদ পেতে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এই ঘটনা জানাজানি হতেই রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে ঘাটাল মহকুমা জুড়ে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, খবর পেয়ে পুলিশ প্রতারিত যুবককে উদ্ধার করে নিয়ে যায়, যদিও এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি।
প্রতারক যুবকের বাবা নিশীথ মণ্ডল অবশ্য তাঁর ছেলের এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানান, তাঁর ছেলে বিউটি পার্লারে কনে সাজানোর কাজ করত। অ্যাডভ্যান্স করবে বলে তাঁর ছেলেকে ডেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। ছেলে বাড়ি না-ফেরায় চন্দ্রকোনা থানার পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি ৷ কিন্তু থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। পরবর্তী সময়ে ছেলের এহেন কাণ্ডের কথা জানতে পারেন নিশীথ মণ্ডল এবং প্রতারণার টাকা ফেরতের জন্য ছেলে তাঁকে টাকা পাঠানোর জন্য জানায় বলেও দাবি তাঁর।