গড়বেতা, 19 অগস্ট : বহু বছর ধরে বহির্ভূত সম্পর্ক চলছিল, এই অভিযোগে এক যুগলকে প্রতিবেশীরা মারধর করেন ৷ এলাকাবাসীর ক্ষোভের শিকার হয়ে অপমানে আত্মহত্যা করেন প্রহৃতা ৷ এই মহিলা তৃণমূলের কর্মী ছিলেন ৷ ঘটনায় চাঞ্চল্য গড়বেতার চন্দ্রকোণা জুড়ে । পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে ৷
বিবাহ সম্পর্কের অভিযোগ মারধর করা হয় যুগলকে ৷ দু'জনেই তৃণমূল কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী ৷ প্রতিবেশীদের একাংশের কথায়, তৃণমূল কর্মীর এই সম্পর্ক বহুদিনের ৷ এই কথা সকলেই জানে ৷ তারপরও বিবাহ সম্পর্কের অভিযোগ ওঠায় তৃণমূলের সালিশি সভা করে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয় ৷ তবে মারধরের ঘটনায় পুলিশে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি ৷ তবে এই ঘটনার পর স্থানীয়দের টিপ্পনী, বাঁকা মন্তব্যের মুখে পড়তে হচ্ছিল এই মহিলা তৃণমূল কর্মীকে বলে অভিযোগ তাঁর এক প্রতিবেশীর ৷ ওই প্রতিবেশীর অভিযোগ, ওই অপমানের জন্য মহিলা গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন ৷ ঘটনাটি ঘটেছে গড়বেতা থানার চন্দ্রকোণা রোড পুলিশ বিট হাউসের নতুনপাড়া এলাকায় । বৃহস্পতিবার নিজের বাড়িতে আত্মহত্যা করেন কাকলি চৌধুরী (50) । দলীয় বুথ সভাপতি অশোক মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাকলির দীর্ঘদিন ধরেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে অভিযোগ ।
গত শনিবার কাকলি বাড়িতে ছিলেন না ৷ দলীয় কর্মসূচিতে গিয়েছিলেন ৷ একাংশ প্রতিবেশীর অভিযোগ, কাকলির না থাকার সুযোগে তাঁর বাড়িতে তাঁর নাবালিকা নাতনিকে একা পেয়ে তার শ্লীলতাহানি করেন অশোক ৷ তারপর প্রতিবেশীরা অশোককে মারধর করে ৷ গত মঙ্গলবার স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ও গ্রামবাসীকে নিয়ে এনিয়ে একটি সালিশি সভাও হয় । সালিশি সভার পরই কাকলির বাড়িতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় । তাঁকে হুমকি দেয় কয়েকজন ৷ সেই অপমান সহ্য করতে না পেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজের বাড়িতেই গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন কাকলি ৷ খবর পেয়ে চন্দ্রকোনা রোড পুলিশ বিট হাউসের পুলিশ গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় মৃতদেহ উদ্ধার করে । মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে । ঘটনার তদন্তে নেমেছে চন্দ্রকোণা রোড বিট হাউসের পুলিশ ।
ব্লক তৃণমূল নেতৃত্ব সালিশি সভার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন । গড়বেতা 3 নম্বর ব্লক তৃণমূল সভাপতি রাজীব ঘোষের দাবি, স্থানীয় বিজেপি নেতারা তাঁদের দলীয় কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে মারধর করে । পালটা বিজেপির জেলা সভাপতি সৌমেন তিওয়ারি বলেন, এই ধরনের ঘটনায় তাঁদের কেউ জড়িত নন । ঘটনাটির তদন্ত আইনের হাতেই ছেড়ে দেওয়া উচিত এবং পুলিশ প্রশাসনের নিরপেক্ষ তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত ।
এদিকে পুলিশ জানাচ্ছে, মহিলা নিজে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন না অন্য কোন ভাবে কেউ তাঁকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে । এছাড়া এই সালিশি সভায় তার উপর কোনও জোর জবরদস্তি করা হয়েছিল কিনা, কোন নির্দেশ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখছে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন ।
আরও পড়ুন : Dilip Ghosh : দিদির উপর ভরসা করলে তালিবানের গুলি খেতে হবে, বিস্ফোরক দিলীপ