আঙ্গুয়া, 27 সেপ্টেম্বর: 280 বছরের পুরনো এই দাস মহাপাত্র জমিদার বাড়ির পুজো (Durga Puja 2022) ৷ প্রাচীন এই পুজোর পরতে পরতে আছে ইতিহাস ৷ এক সময় ঢাকে কাঠি পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুজোর তোড়তোড় শুরু হয়ে যেত এই পুজো ৷ কামান দেগে শুরু হত পুজো ৷ তবে এখন কামানের আওয়াজ শোনা না-গেলেও প্রথা মেনে পুজো বাকি নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করা হয় ৷ এখানে দেবী পুজিত হন যোগমায়া রূপে ৷
দাস মহাপাত্র বাড়ির এই পুজোতে আছে স্পষ্ট বৈষ্ণব প্রভাব। বৈষ্ণবের আদলে তৈরি মূর্তিকে শাক্ত মতে পুজো করা হয় এই জমিদার বাড়িতে। জমিদার বাড়ির ঐশ্বর্যের সিংহ দুয়ার আর দুর্গা মণ্ডপেই চলে দেবীর আরাধনা। কথিত আছে, বাংলার মসনদে তখন আলিবর্দি খাঁর শাসন চলছে । দিল্লিতে নাসিরুদ্দিন মহম্মদ শাহর শাসন চলছে । 1742 খ্রীস্টাব্দ নাগাদ শুরু হয় আঙ্গুয়া রাজগড়ের দুর্গাপুজা । তখন এই রাজগড় ছিল ওড়িশা রাজ্যের অধীন। পরবর্তীকালে হয় আঙ্গুয়া মন্দির । সেখানে পুজিত হন দেবী দুর্গা। পুজোর চারটি দিন বেশ আড়ম্বরে পুজো হয় এখানে ।
আরও পড়ুন: মা অর্ধনারীশ্বর, পৌরহিত্যে রূপান্তরকামী! তিলোত্তমার বুকে এক অন্যরকম দুর্গাবন্দনা
পুজোর নিয়মানুয়ায়ী বেশ কয়েকমন ধানের মুড়কি-খই দিয়ে প্রসাদ অর্পণ করা হয় দেবীর উদ্দেশ্যে। নৈবেদ্যয় থাকে কয়েক কেজি আতপ চাল, ফল, মিষ্টিও । এই পুজোর আরও একটি বিশেষত্ব হল পুজোর হোমের আগুন পুরোহিতের বাড়ি থেকে আনা হয় ৷ কিংবা সূর্যের আলোকে আতস কাচে ফেলে আগুন জ্বালিয়ে হোম কার হয় । প্রাচীন রীতি মেনে নবমীতে হয় মহামারী পুজাও । এছাড়া আনন্দ অনুষ্ঠানে থাকে যাত্রাপালাগান ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সবই হয় প্রাচীন রীতি মেনে। বেশ কয়েক পুরুষ ধরে পুজো হয়ে আসছে ওড়িশা ঘেঁষা বাংলার আঙ্গুয়া দাস মহাপাত্র জমিদার বাড়িতে। তবে নিষ্ঠাভরে আহ্বান করা হয় দেবীকে। আঙ্গুয়ার মানুষ এক যোগে মেতে উঠেন এই পুজোতে।