চাঁদড়া, 11 সেপ্টেম্বর : দেশের 29টি রাজ্যের নাম এক সঙ্গে বলতে গেলে অধিকাংশকেই ভাবার জন্য একাধিকবার থামতে হবে ৷ কিন্তু সাড়ে তিন বছরের প্রিয়ম গড়গড় করে বলে দিতে পারে সব রাজ্যের নাম ৷ যে বয়সে শিশুরা ভাল করে কথা বলতে গেলেই হাঁফিয়ে ওঠে, সেই বয়সে প্রিয়মের এই মুন্সিয়ানায় বিস্মিত সকলে ৷
পশ্চিম মেদিনীপুরের চাঁদড়ার এই শিশু সকলকে বিস্মিত করেই থেমে থাকেনি ৷ বরং আদায় করে নিয়েছে নিজের প্রতিভার স্বীকৃতি ৷ সম্প্রতি তার নাম উঠেছে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডসে ৷ সেই কারণে শংসাপত্র এবং পদকও পেয়েছে প্রিয়ম ৷ যা পেয়ে জঙ্গলমহলের এই খুদে দারুণ খুশি ৷
আরও পড়ুন : Ghatal SDO : চন্দ্রকোনা পৌরসভায় জঞ্জাল সাফাইয়ে কোদাল, স্প্রে হাতে মহকুমাশাসক
জঙ্গলমহলের এই এলাকা এক সময় মাওবাদীদের আঁতুরঘর ছিল ৷ সেই এলাকার একটি প্রত্যন্ত গ্রামের শিশুর এই সাফল্য সত্যিই নজরকাড়া বলতেই হয় ৷ সেই নজরকাড়া সাফল্যে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত গোটা জঙ্গলমহল ৷
2017 সালে জন্ম প্রিয়মের ৷ বাবা প্রলয় মাহাতো সিআরপিএফ-এর জওয়ান ৷ এখন জম্মু-কাশ্মীরে রয়েছেন ৷ ছোট থেকে বাবার সঙ্গে সময় কাটানোর খুব একটা সুযোগ পায়নি ৷ মা তার সব ৷ মায়ের কাছ থেকে একটু একটু রপ্ত করে ফেলেছে দেশের সব রাজ্যের নাম, সব রাজ্যের রাজধানীর নামও ৷
আরও পড়ুন : Aadhar Card : আঁধার থাকতে লাইনে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা, উদ্দেশ্য আধার কার্ড
প্রিয়মের মা বালিকা মাহাতো অবশ্য পুরো কৃতিত্ব ছেলেকেই দিয়েছেন ৷ ইটিভি ভারতকে তিনি বলেন, ‘‘প্রিয়ম আর দশটা বাচ্চার থেকে একটু আলাদা । প্রিয়মকে নতুন করে কিছু শেখাতে হয় না ৷ ও যা দেখে তাই শেখে । এমনকী টিভিতে হওয়া বাংলা-হিন্দি গানের নাচও অবিকল নকল করে ফেলে সে ৷’’
এই সাফল্যের পর প্রিয়মকে নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে সকলের ৷ সে কী কী জানে, তা জানতে চান সকলেই ৷ তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, আধো-আধো গলায় জাতীয় সঙ্গীত গাইতে পারদর্শী সে ৷ যা শুনে মুগ্ধ হন ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস কর্মকর্তারাও । এছাড়া ইংরেজিতে 10টি পাখির নাম, শরীরের সমস্ত অঙ্গের নাম ইংরেজিতে গড়গড়িয়ে বলতে পারে প্রিয়ম ৷ আর আঁকাতেও বেশ ভাল হাত তার ৷
আরও পড়ুন : Nisith Das: কোভিড বিপর্যয় ! পেট চালাতে চায়ের দোকান চালাচ্ছেন জনপ্রিয় অভিনেতা
বালিকা মাহাতো জানালেন, এসব দেখেই তাঁর মনে হয় যে ছেলের সাফল্যের স্বীকৃতি মেলা উচিত ৷ চাই তিনি ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডসে আবেদন করেন গত মে মাসে ৷ অবশেষে ইন্ডিয়া বুক অব রেকর্ডসের শংসাপত্র ও পদক এল প্রিয়মের বাড়িতে । যা দেখে খুশিতে উচ্ছ্বসিত পরিবার ।
যদিও প্রিয়মের একটু মন খারাপ ৷ কারণ, বাবা নেই যে বাড়িতে ৷ তাই বাবার অপেক্ষায় রয়েছে মেদিনীপুর শহরের একটি বেসরকারি স্কুলের নার্সারির এই ছাত্র ৷