মেদিনীপুর, 20 নভেম্বর: গাছ কাটার বিরুদ্ধে পৌরসভা এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিনব প্রতিবাদ করলেন মেদিনীপুর বাসী । ফাঁসির মঞ্চ করে রীতিমতো গাছের কাটা অংশকে প্রতীকী ফাঁসি দিলেন প্রৌঢ়া সমাজসেবী । অবিলম্বে এর প্রতিকার এবং ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন তিনি ।
জানা গিয়েছে, মেদিনীপুর পৌরসভার 22 নম্বর ওয়ার্ডে বসবাস করেন কার্তিক ধর । তিনি এলাকায় সমাজসেবী হিসেবে পরিচিত । দীর্ঘদিন ধরে বহু সমাজসেবামূলক কাজ করার পাশাপাশি তিনি এলাকার একটি মাঠকে দখল রুখতে কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন । এরই সঙ্গে তিনি গাছ কাটার বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়ান । এবার এই এলাকায় একটি পুরানো বট এবং অশ্বত্থ গাছ কেটে ফেলে রাস্তা হওয়ার প্রতিবাদ জানালেন তিনি ।
শহরের জজকোর্টের ব্যস্ত এলাকায় ফাঁসির মঞ্চ তৈরি করলেন তিনি ৷ এরপর গাছের কাটা ডালপালা অংশকে সেই ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে দিয়ে প্রতীকী ফাঁসি দিলেন ৷ শুধু তাই নয়, নিজেও গলায় ফাঁসির দড়ি লাগিয়ে প্রতিবাদ জানান । তাঁর অভিযোগ, মেদিনীপুর পৌরসভা, ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্রশাসনকে বারবার অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি ।পৌরসভা ইচ্ছে করেই রাস্তা তৈরি করার নামে দুটি বড় গাছ কেটে ফেলেছে নির্দ্বিধায় । মূলত, এলাকার জমি মাফিয়াদের রাস্তা সুগম করতে এই গাছ কেটে ফেলা হচ্ছে । যার জন্য বনবিভাগ থেকে কোনও অনুমতিও নেওয়া হয়নি ৷ এভাবে যদি গাছ কেটে ফেলতে থাকে তাহলে একদিন হয়তো মানুষও নিঃশেষ হয়ে পড়বে । পৃথিবীতে থাকবে না প্রাণের অস্তিত্ব । তাই আমাদের অবিলম্বে এই গাছগুলিকে বাঁচাতে হবে ।
এই বিষয়ে কার্তিক ধর বলেন, "পৌরসভা জমি মাফিয়াদের জন্য রাস্তা সুগম করতে এই দুটি বড় গাছ কেটে ফেলছে । পৌরসভা প্রতিশ্রুতি দেয় যে পরিবর্তে গাছ লাগিয়ে দেবে কিন্তু আজ পর্যন্ত একটি তুলসি গাছও লাগায়নি ৷ এরসঙ্গে জেলা প্রশাসনের মদত রয়েছে বলে আমি মনে করি । তাই এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি । অবিলম্বে এই ঘটনার প্রতিকার-সহ আগামিদিনে যদি এরকম ঘটনা ঘটতে থাকে তাহলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে । যার দায় নিতে হবে প্রশাসনকে ।"
যদিও এই বিষয়ে মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান বলেন, "মূলত কলকাতার ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে জেলা প্রশাসন, পৌরসভা এবং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সঙ্গে পঞ্চায়েত সদস্যদের অনুমতিক্রমে রাস্তা তৈরি করার জন্য বাধ্য হয়ে গাছ দুটি কাটতে হয়েছে । তাই তাদের যাতায়াতের প্রধান রাস্তা হয়েছে । তার পরিবর্তে আমরা 12টি গাছ লাগানোর ব্যবস্থাও করেছি । কারণ রাস্তা কখনও আকাশপথে হয় না । তাই এই ঘটনা ঘটেছে । এর বাইরে কে কী করল তা আমাদের দেখার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না ।"
যদিও এই প্রতীকী ফাঁসির মঞ্চ ফাঁসি দেওয়ার পরেই কার্তিক ধর সংশ্লিষ্ট থানায় নিয়ে যান পুলিশ এবং প্রশাসন থেকে । এরপর তার বিরুদ্ধে সমাজে প্যানিক ছড়ানোর জন্য 290 ধারায় একটি কেস দেওয়া হয় । যদিও তিনি তার ব্যক্তিগত বন্ডে জামিন নেন ।
আরও পড়ুন :
1 গাছ কাটার অভিযোগ পেয়ে বালিগঞ্জে রাজ্যপাল! প্রতিশ্রুতি 100 গাছ লাগানোর
2 গাছ কাটতে দেখলেই গ্রেফতার করুন, পরিবেশ বাঁচাতে বদ্ধপরিকর মেয়র ফিরহাদ