মেদিনীপুর, 6 জানুয়ারি: মুখ্যমন্ত্রীর রক্ষাকবচ ও দিদির দূত নিয়ে বৈঠকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার শাসকদল । দলীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এবং মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্বয়ং শাসকদলের কাউন্সিলরের চিঠি দেওয়া প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেই তড়িঘড়ি উত্তর দিয়েই সভা ছাড়েন বিধায়ক জুন মালিয়া (June Malia)। যদিও তিনি সাফ জানিয়ে দিয়ে যান, যাঁরা এই ধরনের গুজব ছড়াচ্ছেন তাঁদের বিরুদ্ধে তিনি কড়া ব্যবস্থা নেবেন ।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারি 15টি প্রকল্প রূপায়নে গ্রামে গ্রামে তৃণমূল কর্মীদের রাত্রিযাপন এবং মানুষকে সাহায্য করা সংক্রান্ত দিদির দূত নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক হওয়ার কথা ছিল ৷ কিন্তু সেখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের প্রশ্ন তুলতেই বৈঠক ভন্ডুল । তড়িঘড়ি সভা ছাড়লেন মেদিনীপুরের বিধায়ক-অভিনেত্রী জুন মালিয়া ।
প্রসঙ্গক্রমে বলা যায়, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো সমস্ত জেলায় এখন চলছে দিদির দূত ও রক্ষাকবচ নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক এবং ট্রেনিং কর্মসূচি । বিধায়ক ও তৃণমূল নেতৃত্ব সাংবাদিক বৈঠক করে দিদির দূতের পুরো বিষয়টি তুলে ধরছেন বারে বারে । মেদিনীপুরেও ফেডারেশন হলে এ দিন এক বৈঠকের আয়োজন করেন মেদিনীপুরের বিধায়ক জুন মালিয়া । এই বৈঠকে না ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি, না ছিলেন শহর সভাপতি ৷ ছিলেন না অধিকাংশ কাউন্সিলরও । তবু কয়েকজন কাউন্সিলার, মেদিনীপুরের পৌরসভার চেয়ারম্যান ও কিছু অঞ্চলের লোকদের নিয়েই এই সভা করেন জুন মালিয়া ।
কিন্তু মেদিনীপুর পৌরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্বয়ং শাসকদলের 11 জন কাউন্সিলারের চিঠি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেই ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন বিধায়ক । পরিস্থিতি সামাল দিতে তড়িঘড়ি মাইক কেড়ে নিয়ে আসরে নামেন জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি । যদিও মেদিনীপুর পৌরসভার অনাস্থা প্রসঙ্গে জুন মালিয়ার বক্তব্য, দলেরই কিছু কর্মী এই ধরনের গুজব ছড়িয়ে বেড়াচ্ছে । এই নিয়ে দল আলোচনা করেছে এবং দল নির্দেশ দিয়েছে যাঁরা এই ধরনের গুজব ছড়াবেন বা ছড়াচ্ছেন তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
আরও পড়ুন: 'দিদির দূত, নাকি দিদির ভূত' ! মমতাকে নিশানা করে কটাক্ষ শুভেন্দুর
জুন বলেন, তিনি নিজেও কড়া ব্যবস্থা নেবেন সেইসব দলীয় কর্মীদের বিরুদ্ধে । এরপরই সাংবাদিকরা জুনকে প্রশ্ন করেন বিধায়কের অধিকাংশ সাংবাদিক বৈঠকে জেলা সভাপতি ও শহর সভাপতির অনুপস্থিতির কারণ কী ৷ সে বিষয়ে জুনের বক্তব্য, পুরো বিষয়টা হেডকোয়ার্টার বুঝে নেবে ৷ এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ভাববার কোনও কারণ নেই ।
এরপর সাংবাদিকরা জিজ্ঞাসা করেন, যেখানে প্রশাসন, জেলাশাসক, বিডিও ও এসডিওরা রয়েছেন, সেখানে সরকারি প্রকল্পে কেন নতুন করে দিদির দূত পাঠানো হচ্ছে ? সে বিষয়ে জুন বলেন, "কোথাও কোথাও সরকারি সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার খামতি রয়ে গিয়েছে ৷ সেই সব জায়গায় যাতে রেক্টিফাই করা যায়, তার জন্যই এই দিদির দূত পাঠানো হচ্ছে গ্রামে গ্রামে ।" এরপরই তিনি সভা ছেড়ে চলে যান ।
জুন মালিয়া সাংবাদিক বৈঠকের ঘণ্টা দুয়েক আগেই তৃণমূলের জেলা সভাপতি আরেকটি সাংবাদিক বৈঠক করেন এই দিদির দূত ও দিদির রক্ষাকবচ নিয়ে । সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা, বিধায়ক দীনেন রায় ও এলাকার বিভিন্ন নেতা নেত্রী ও কর্মীরা । ফলে শাসকদলের আমরা-ওরার বিভাজনের ছবি ইতিমধ্যেই প্রকট হয়ে উঠেছে পশ্চিম মেদিনীপুরে ৷