ETV Bharat / state

লকডাউনে বাড়ছে ফ্যান্সি সাইকেলের চাহিদা - medinipur

চায়না বয়কট আর লকডাউনের জেরে দু'চাকা,চার চাকা ছেড়ে সাইকেলে ভরসা রাখা মানুষের চাহিদা বাড়ছে পশ্চিম মেদিনীপুরে ৷

ছবি
ছবি
author img

By

Published : Jul 31, 2020, 10:18 PM IST

মেদিনীপুর, 29 জুলাই : একসময় জেলার মানুষ সাইকেল ছেড়ে দু'চাকার বাইকে ভরসা রেখেছিল । কিন্তু লকডাউনে যানবাহন না পেয়ে সাইকেলের দিকে ঝুঁকছে জেলার মানুষ । তবে চায়না নয়, বরং দেশীয় ফ্যান্সি সাইকেলে নজর তাঁদের । কিশোর, যুবকের পাশাপাশি বয়স্করাও এই সাইকেল কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন স্থানীয় সাইকেলের দোকানগুলিতে । বিক্রেতাদের দাবি লকডাউনে দ্বিগুণ সাইকেল বিক্রি বেড়েছে শহরে ।

জেলার বেশিরভাগ ব্যক্তিই সাইকেল ছেড়ে দু'চাকাতে ভরসা রেখেছিল ৷ রাতারাতি তাদের সাইকেলের পরিবর্তে দুই চাকার কেনার হিড়িক জেগেছে । শুধু দু'চাকায় নয়, চার চাকার উপরও তারা ভরসা রেখেছিল ৷ কিন্তু, দীর্ঘ লকডাউন এবং চায়না মার্কেটে বয়কট এরপর থেকেই ফের মোটরসাইকেল ছেড়ে আবার সাইকেলের উপর ভরসা রাখতে চলেছে জেলার মানুষজন । কেননা কোরোনা সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে থাকায় যানবাহন দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে । যা ও পাওয়া যাচ্ছে প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম । তাছাড়া ভয় রয়েছে সংক্রমণের । এই অবস্থার জের রয়েছে জেলার মানুষজনের উপর ।

এখন মার্কেটে এই সাইকেলের রমরমা ৷ যদিও বলা যায় একসময় এই সাইকেলের দুনিয়ায় চায়না সাইকেলের দাপট ব্যাপক পরিমাণে ছিল । চায়নার সাইকেল দু'চাকা কেউ টেক্কা দিতে বাজারে এসেছিল এবং সেই সময় অনেক মানুষ চায়না সাইকেলের উপরে ভরসা রেখেছিল । চায়নার অন্য পণ্যের মতো সাইকেলের কদর ছিল ভারতীয়দের মধ্যে । কিন্তু ইন্দো-চিন সংঘর্ষ এবং সংঘর্ষের পর ভারতীয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে চায়না দ্রব্য বয়কট শুরু করা হয় । যার প্রেক্ষিতে চায়নার সাইকেল আর আমদানি হয় না এই দেশে । জেলায় কম দামে সবচেয়ে সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন চায়না সাইকেল এখন অপ্রতুলতার পাশাপাশি এই সাইকেলে সার্ভিসিং আর না পাওয়ার আশঙ্কায় এবার তাই দেশীয় ফেন্সি সাইকেলে ভরসা রাখছে এখানকার মানুষজন । আট থেকে আশি,কিশোর থেকে যুবক পাশাপাশি বয়স্করাও এখন হুজুগে মেতেছে এই সাইকেলের ।

লকডাউনে বাড়ছে ফ্যান্সি সাইকেলের চাহিদা...

সাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে তাঁরা বেশকিছু যুক্তিও দেখিয়েছেন । তাঁদের বক্তব্য, বর্তমানে ভেজালের যুগে শরীরের নানা রকম রোগের প্রাদুর্ভাব ৷ এখন রোগের জন্য আর বয়সের হিসেব হয় না । কম বয়সে রোগ দানা বাঁধছে শরীরে ছোট থেকে । তাই চিকিৎসকেরা বারবার বলছেন রোজ শারীরিক কসরত করতে । তাই এই কসরতের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অনুকূল পন্থা হল সাইকেল চালানো । এক সময় এই দেশীয় সাইকেলের দাম অল্প টাকা ছিল তা হাজার টাকা এবং দুই হাজার টাকার ভেতরে ৷ কিন্তু বর্তমানে ফ্যান্সি গিয়ার দেওয়ার নতুন মডেল যুক্ত দেশীয় সাইকেল বাজার কাপাচ্ছে । এই সাইকেলের দাম 4000 থেকে শুরু করে 40 হাজার টাকা পর্যন্ত দাম রাখা হয়েছে ৷

সাইকেলে রয়েছে স্পেশাল ফেসিলিটি যুক্ত পরিষেবা । বিশেষ করে গাড়ির মতো দ্রুতগামী করার জন্য লাগানো হয়েছে গিয়ার প্রক্রিয়া । সাইকেলকে কন্ট্রোল করার জন্য রাখা হয়েছে দুই চাকার ব্রেকের অত্যাধুনিক ব্রেক ডিস যা এর ফেন্সি সাইকেলে ইনক্লুডিং করা হয়েছে । এই সাইকেলের মধ্যে অন্যতম হলো মনত্রা সিরিজের ম্যাডরক,ব্যাক বিট রোডিও সিরিজের মধ্যে A-75,A-30,A-500,hank MTB সিরিজের জ্যাকেল,ফ্লেয়ার,থর,স্ট্রিট ক্যাট, ডেড শো, স্পিট স্টার,নিও এছাড়াও নতুন মডেলের লেডি বার্ডও সাধারণ সাইকেল । বর্তমানে সাইকেলগুলিকে আরও উন্নত করা হয়েছে । সমস্ত রকম বাইকের মতন সুযোগসুবিধা রয়েছে এখানে । তাই বাইক ছেড়ে দিয়ে সাইকেলেই হাঁটছে জেলার মানুষ ।

দীর্ঘদিন ব্যবসা করে আসা প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, "আগে সাইকেল লড়ঝড়ে ছিল তাই সাইকেল থেকে মুখ ফিরিয়ে ছিল মানুষ । পরবর্তীকালে চায়না মার্কেটে অত্যাধুনিক করে সাইকেল আনে । বাজারেও অন্যান্য পণ্যের মতন দাপিয়ে ব্যবসা শুরু করে সাইকেলের । চায়নার দাপটে দেশীয় সাইকেলের মার্কেট একদম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল । কিন্তু পরবর্তীকালে ইন্দো-চায়না সংঘর্ষের জেরে চায়না সাইকেল বর্জনের ডাক দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকার । সেইখান থেকে পুনরায় দেশীয় সাইকেলের উপর ভরসা রেখে চলেছেন মানুষজন । পাশাপাশি, লকডাউন এবং লকডাউন পরবর্তী সংক্রমণের ভয় মানুষকে আরও ভাবিয়েছে । তাই তাঁরা চার চাকার দুই চাকার উপর ভরসা রাখছে না । এক অপ্রতুলতার জন্য আর দ্বিতীয় হচ্ছে সংক্রমণের ভয় । এই দুয়ের জেরে এবার দেশীয় ফ্যান্সি সাইকেলে ভরসা রাখছেন তারা।তাই লকডাউনের পর দ্বিগুণ বিক্রির পরিমাণ বেড়েছে এই ফেন্সি দেশীয় সাইকেলের ।

শান্তি ঘোষ বলেন, "ছেলে অনেকদিন ধরেই বায়না করছিল তাছাড়া এই লকডাউন এর জেরে সমস্ত গাড়ি-ঘোড়া বন্ধ গাড়ি-ঘোড়া চললেও রয়েছে সংক্রমণের ভয় সেই অবস্থা থেকে ছেলেকে মুক্তবাতাসের ফিরিয়ে দিতেই সাইকেল কিনে দেওয়া ৷ এদিকে, সাইকেল পেয়ে খুশি অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র রিতরশী ঘোষ ৷ সে বলে " বাবাকে দীর্ঘদিন আবদার করেছিলাম সাইকেলের জন্য । কেননা এই লকডাউনে সব সময় গাড়ি অটো টোটো পাওয়া যাচ্ছে না । তাই পড়তে যাওয়ার ক্ষেত্রে এই সাইকেলই একমাত্র ভরসা । "

পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকার 15 টি বিধানসভা যুক্ত ৷ এই জেলায় ফ্যান্সি সাইকেলের দোকান প্রায় এক হাজারের মতো । যেখানে এই ধরনের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যুক্ত ফেন্সি সাইকেল কিনতে ভিড় জমান মানুষজন । আগের সাইকেল নয় দেশীয় প্রযুক্তিতে এবার ফ্যান্সি সাইকেলে নজর রেখেছে তাঁরা । আর লকডাউন এবং সংক্রমণের জেরে তাঁদের সাইকেল বিক্রি বাড়ছে দেদার ।

মেদিনীপুর, 29 জুলাই : একসময় জেলার মানুষ সাইকেল ছেড়ে দু'চাকার বাইকে ভরসা রেখেছিল । কিন্তু লকডাউনে যানবাহন না পেয়ে সাইকেলের দিকে ঝুঁকছে জেলার মানুষ । তবে চায়না নয়, বরং দেশীয় ফ্যান্সি সাইকেলে নজর তাঁদের । কিশোর, যুবকের পাশাপাশি বয়স্করাও এই সাইকেল কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন স্থানীয় সাইকেলের দোকানগুলিতে । বিক্রেতাদের দাবি লকডাউনে দ্বিগুণ সাইকেল বিক্রি বেড়েছে শহরে ।

জেলার বেশিরভাগ ব্যক্তিই সাইকেল ছেড়ে দু'চাকাতে ভরসা রেখেছিল ৷ রাতারাতি তাদের সাইকেলের পরিবর্তে দুই চাকার কেনার হিড়িক জেগেছে । শুধু দু'চাকায় নয়, চার চাকার উপরও তারা ভরসা রেখেছিল ৷ কিন্তু, দীর্ঘ লকডাউন এবং চায়না মার্কেটে বয়কট এরপর থেকেই ফের মোটরসাইকেল ছেড়ে আবার সাইকেলের উপর ভরসা রাখতে চলেছে জেলার মানুষজন । কেননা কোরোনা সংক্রমণের সংখ্যা বাড়তে থাকায় যানবাহন দীর্ঘদিন বন্ধ রয়েছে । যা ও পাওয়া যাচ্ছে প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত কম । তাছাড়া ভয় রয়েছে সংক্রমণের । এই অবস্থার জের রয়েছে জেলার মানুষজনের উপর ।

এখন মার্কেটে এই সাইকেলের রমরমা ৷ যদিও বলা যায় একসময় এই সাইকেলের দুনিয়ায় চায়না সাইকেলের দাপট ব্যাপক পরিমাণে ছিল । চায়নার সাইকেল দু'চাকা কেউ টেক্কা দিতে বাজারে এসেছিল এবং সেই সময় অনেক মানুষ চায়না সাইকেলের উপরে ভরসা রেখেছিল । চায়নার অন্য পণ্যের মতো সাইকেলের কদর ছিল ভারতীয়দের মধ্যে । কিন্তু ইন্দো-চিন সংঘর্ষ এবং সংঘর্ষের পর ভারতীয় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে চায়না দ্রব্য বয়কট শুরু করা হয় । যার প্রেক্ষিতে চায়নার সাইকেল আর আমদানি হয় না এই দেশে । জেলায় কম দামে সবচেয়ে সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন চায়না সাইকেল এখন অপ্রতুলতার পাশাপাশি এই সাইকেলে সার্ভিসিং আর না পাওয়ার আশঙ্কায় এবার তাই দেশীয় ফেন্সি সাইকেলে ভরসা রাখছে এখানকার মানুষজন । আট থেকে আশি,কিশোর থেকে যুবক পাশাপাশি বয়স্করাও এখন হুজুগে মেতেছে এই সাইকেলের ।

লকডাউনে বাড়ছে ফ্যান্সি সাইকেলের চাহিদা...

সাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে তাঁরা বেশকিছু যুক্তিও দেখিয়েছেন । তাঁদের বক্তব্য, বর্তমানে ভেজালের যুগে শরীরের নানা রকম রোগের প্রাদুর্ভাব ৷ এখন রোগের জন্য আর বয়সের হিসেব হয় না । কম বয়সে রোগ দানা বাঁধছে শরীরে ছোট থেকে । তাই চিকিৎসকেরা বারবার বলছেন রোজ শারীরিক কসরত করতে । তাই এই কসরতের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অনুকূল পন্থা হল সাইকেল চালানো । এক সময় এই দেশীয় সাইকেলের দাম অল্প টাকা ছিল তা হাজার টাকা এবং দুই হাজার টাকার ভেতরে ৷ কিন্তু বর্তমানে ফ্যান্সি গিয়ার দেওয়ার নতুন মডেল যুক্ত দেশীয় সাইকেল বাজার কাপাচ্ছে । এই সাইকেলের দাম 4000 থেকে শুরু করে 40 হাজার টাকা পর্যন্ত দাম রাখা হয়েছে ৷

সাইকেলে রয়েছে স্পেশাল ফেসিলিটি যুক্ত পরিষেবা । বিশেষ করে গাড়ির মতো দ্রুতগামী করার জন্য লাগানো হয়েছে গিয়ার প্রক্রিয়া । সাইকেলকে কন্ট্রোল করার জন্য রাখা হয়েছে দুই চাকার ব্রেকের অত্যাধুনিক ব্রেক ডিস যা এর ফেন্সি সাইকেলে ইনক্লুডিং করা হয়েছে । এই সাইকেলের মধ্যে অন্যতম হলো মনত্রা সিরিজের ম্যাডরক,ব্যাক বিট রোডিও সিরিজের মধ্যে A-75,A-30,A-500,hank MTB সিরিজের জ্যাকেল,ফ্লেয়ার,থর,স্ট্রিট ক্যাট, ডেড শো, স্পিট স্টার,নিও এছাড়াও নতুন মডেলের লেডি বার্ডও সাধারণ সাইকেল । বর্তমানে সাইকেলগুলিকে আরও উন্নত করা হয়েছে । সমস্ত রকম বাইকের মতন সুযোগসুবিধা রয়েছে এখানে । তাই বাইক ছেড়ে দিয়ে সাইকেলেই হাঁটছে জেলার মানুষ ।

দীর্ঘদিন ব্যবসা করে আসা প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, "আগে সাইকেল লড়ঝড়ে ছিল তাই সাইকেল থেকে মুখ ফিরিয়ে ছিল মানুষ । পরবর্তীকালে চায়না মার্কেটে অত্যাধুনিক করে সাইকেল আনে । বাজারেও অন্যান্য পণ্যের মতন দাপিয়ে ব্যবসা শুরু করে সাইকেলের । চায়নার দাপটে দেশীয় সাইকেলের মার্কেট একদম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল । কিন্তু পরবর্তীকালে ইন্দো-চায়না সংঘর্ষের জেরে চায়না সাইকেল বর্জনের ডাক দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকার । সেইখান থেকে পুনরায় দেশীয় সাইকেলের উপর ভরসা রেখে চলেছেন মানুষজন । পাশাপাশি, লকডাউন এবং লকডাউন পরবর্তী সংক্রমণের ভয় মানুষকে আরও ভাবিয়েছে । তাই তাঁরা চার চাকার দুই চাকার উপর ভরসা রাখছে না । এক অপ্রতুলতার জন্য আর দ্বিতীয় হচ্ছে সংক্রমণের ভয় । এই দুয়ের জেরে এবার দেশীয় ফ্যান্সি সাইকেলে ভরসা রাখছেন তারা।তাই লকডাউনের পর দ্বিগুণ বিক্রির পরিমাণ বেড়েছে এই ফেন্সি দেশীয় সাইকেলের ।

শান্তি ঘোষ বলেন, "ছেলে অনেকদিন ধরেই বায়না করছিল তাছাড়া এই লকডাউন এর জেরে সমস্ত গাড়ি-ঘোড়া বন্ধ গাড়ি-ঘোড়া চললেও রয়েছে সংক্রমণের ভয় সেই অবস্থা থেকে ছেলেকে মুক্তবাতাসের ফিরিয়ে দিতেই সাইকেল কিনে দেওয়া ৷ এদিকে, সাইকেল পেয়ে খুশি অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র রিতরশী ঘোষ ৷ সে বলে " বাবাকে দীর্ঘদিন আবদার করেছিলাম সাইকেলের জন্য । কেননা এই লকডাউনে সব সময় গাড়ি অটো টোটো পাওয়া যাচ্ছে না । তাই পড়তে যাওয়ার ক্ষেত্রে এই সাইকেলই একমাত্র ভরসা । "

পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকার 15 টি বিধানসভা যুক্ত ৷ এই জেলায় ফ্যান্সি সাইকেলের দোকান প্রায় এক হাজারের মতো । যেখানে এই ধরনের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যুক্ত ফেন্সি সাইকেল কিনতে ভিড় জমান মানুষজন । আগের সাইকেল নয় দেশীয় প্রযুক্তিতে এবার ফ্যান্সি সাইকেলে নজর রেখেছে তাঁরা । আর লকডাউন এবং সংক্রমণের জেরে তাঁদের সাইকেল বিক্রি বাড়ছে দেদার ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.