মেদিনীপুর, 9 ডিসেম্বর: স্কুল আছে, শিক্ষিকাও আছেন কিন্তু পড়ুয়া হাতে গোনা ৷ স্কুলের এই অবস্থায় পড়ুয়া খুঁজতে পাড়ায় পাড়ায় আবেদন করছেন দুই দিদিমণি । এরকমই চিত্র মেদিনীপুরের হাঁসপুকুর শহিদ ক্ষুদিরাম প্রাথমিক বিদ্যাপীঠের । কাগজ-কলমে পড়ুয়ার সংখ্যা 8 জন থাকলেও মেরেকেটে উপস্থিত থাকে মাত্র 4 জন ৷ তাই পড়ুয়াদের স্কুলে আনতে গ্রামবাসীদের দরজায় শিক্ষিকারা নিজেরাই হাজির হন ৷ যদিও তাতে খুব একটা লাভ হয়নি বলেই জানাচ্ছেন শিক্ষিকারা ৷
মেদিনীপুর শহরেরক অধিকাংশ প্রাইমারি স্কুলে পড়ুয়ার আকাল থাকলেও সবচেয়ে করুণ দশা এই হাঁসপুকুর শহিদ ক্ষুদিরাম প্রাথমিক বিদ্যাপীঠে। এক সময়েই এই স্কুলে 50-60জন পড়ুয়া থাকলেও এখন সেসব অতীত ৷ বর্তমানে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা কমতে কমতে ঠেকেছে মাত্র আট জনে । তার মধ্যে স্কুলে আসে কোনওদিন চারজন, কোনওদিন তিনজন । যদিও সেই পড়ুয়াদেরও বাড়ি থেকে ডেকে আনতে হয় প্রতিদিন । স্থানীয় বাসিন্দারাও চান তাঁদের সন্তানদের উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করাতে ৷ এমনটাই জানিয়েছেন এক স্কুল শিক্ষিকা ৷ এক অভিভাবক জানান, প্রাইমারি স্কুলে পড়ালে তাঁদের বাচ্চারা হাইস্কুলে পড়ার সুযোগ পাবে না । আর তাতেই সমস্যায় পড়ছেন দিদিমণিরা । বাড়ি গেলেও পড়ুয়া জোগাড় করতে পারছেন না তাঁরা ৷
এই বিষয়ে স্কুলের সহ-প্রধান শিক্ষিকা সারথি পাতর কর বলেন, "এক সময় স্কুলে প্রচুর পড়ুয়া ছিল । জমজমাট ছিল তাদের এই প্রাইমারি বিদ্যালয় ৷ কিন্তু সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র আট জনে । এখন মন খারাপ হয়ে যায় । যদিও ওই পড়ুয়াদের আনতে তাঁদের বাড়ি যেতে হয় প্রতিদিন। পাশাপাশি নতুন পড়ুয়ার সন্ধানে রোজই পাড়ায় পাড়ায় আবেদন করি । কিন্তু তাতে লাভ হয় না ৷" এই শিক্ষিকার কথার রেশ ধরেই আরও প্রধান শিক্ষিকা নাজিমা খাতুন বলেন, "এই পড়ুয়া কমার মূল কারণ বড় স্কুলগুলি । কারণ বড় স্কুলগুলিতে প্রাইমারি থাকার কারণে বাচ্চাদের একবার স্কুলে ভর্তি করলেই অভিভাবকদের আর চিন্তা করতে হয় না ৷ উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পাড়াশোনা করতে পারে । আমাদের শুধু প্রাইমারি সেকশন থাকায় পড়ুয়াদের বাবা-মায়েরা বাচ্চাদের পাঠাতে চায় না । তাই আমরা রোজ বের হই বাচ্চা খুঁজতে ।" স্কুলের পডুয়া রুবি দুলে জানায় আগে তাদের সহপাঠীর সংখ্যায় অনেক ছিল। কিন্তু এখন আর আসছে না তারা। অন্য স্কুলে ভর্তি হয়ে গিয়েছে ৷ তবে আবারও এই স্কুল প্রাণ ফিরে পাক, সেটাই চান শিক্ষিকা থেকে পড়ুয়া সকলেই ৷
আরও পড়ুন: