মেদিনীপুর, 2 মে: জেলাবাসীর সমস্যা সমাধানের জন্য স্বয়ং জেলাশাসক বসলেন জনতার দরবারে । তিনি দুয়ারে জেলাশাসক নাম দিয়ে এই জনতার দরবার বসিয়েছেন জেলা কালেক্টরেটে । মঙ্গলবার বহু মানুষ যেমন তাঁদের সমস্যা নিয়ে আসেন, তেমনই মাওবাদীরাও তাঁদের প্যাকেজ ও কাজের দাবিতে দরবার করেন ।
জনতার দরবারে এ বার প্যাকেজের জন্য আবেদন করলেন মাওবাদীরা । পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ও জেলা শহরের ঘটনা । দুয়ারে সরকার-সহ বিভিন্ন প্রকল্পের পাশাপাশি এ বার দুয়ারে জেলাশাসক বসলেন জনতার দরবারে ৷ জেলাশাসক মাসে দুদিন করে বসবেন ও জেলাবাসীর সমস্যা শুনবেন এবং তার সমাধান করবেন ।
সেই জনতার দরবারে এ দিন বিভিন্ন ব্লকের বিভিন্ন রকম সমস্যা নিয়ে মানুষ আসেন জেলাশাসকের কাছে । জেলাশাসক খুরশেদ আলি কাদরি ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক ও বিভিন্ন পদস্থ আধিকারিকরা । এ দিন বিভিন্ন মানুষের সমস্যার পাশাপাশি শালবনীতে 120 জন আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী আসেন তাঁদের নিজস্ব দাবি দাওয়া নিয়ে ।
তাঁদের অভিযোগ, 2011 সালের পরিবর্তনের আগে সেই সময় বাম সরকার ছলে বলে কৌশলে তাঁদের মাওবাদী তকমা দিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দিয়েছিল । যার জন্য তাঁরা ছ মাস, কেউ এক বছর, কেউ দু বছর সংশোধনাগারে কাটান । এখনও সেই মামলা চলছে এবং তাঁরা জামিনে মুক্ত আছেন । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পরই ঘোষণা করেছিলেন, সেই আত্মসমর্পণকারী এবং মাওবাদীদের পুনর্বাসন প্যাকেজ দেওয়া হবে । সেই কথামতো মাওবাদীর তৎকালীন তাবড় নেতা আজ পুলিশে চাকরি করছেন । অনেকে আবার বিভিন্নভাবে সরকারি সংস্থা এবং দফতরে নিযুক্ত রয়েছেন ।
তবে শালবনীর 120 জন আত্মসমর্পণকারী মাওবাদী দাবি করেন, তাঁরা কোনও রকম আর্থিক প্যাকেজ এখনও পাননি । এক বছর ধরে তাঁরা সরকারের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরছেন ৷ কিন্তু আর্থিক প্যাকেজের জন্য বহু আবেদন নিবেদন সত্ত্বেও তাঁদের আশা পূরণ হয়নি । তাই এ দিন জনতার দরবারে জেলাশাসককে দেখে তাঁরা চলে আসেন এবং তাঁদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন । যদিও জেলাশাসক তাঁদের আশ্বস্ত করেন এবং দাবি পূরণ করারও আশ্বাস দেন ।
এ দিন শালবনী থেকে আসা জামিনে মুক্তি পাওয়া মাওবাদীরা বলেন, "বাম সরকার আমাদের মাওবাদী তকমা দেয় এবং রাষ্ট্রদ্রোহী কেসে আমাদের জেলবন্দি করে দেয় । মামলা এখনও চলছে ৷ আমরা পরিবর্তনের পর মাওবাদী পুনর্বাসনের যে প্যাকেজ তা আবেদন করি ৷ কিন্তু আমাদের দীর্ঘদিন টালবাহানায় ঝুলিয়ে রেখেছে ৷ আমরা আবেদন করছি যেন আমাদের যে কোনও কাজে নিয়োগ করা হয় ।"
যদিও জেলাশাসক খুরশেদ আলি কাদেরী বলেন, বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপারের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি ৷
আরও পড়ুন: 24-এর লোকসভা নির্বাচন 'পরিবর্তনের ভোট', বিরোধীদের জোটবার্তা মমতার