মেদিনীপুর, 22 অগস্ট: টিউমার নিয়ে 10 বছর ধরে ভুগছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ের বাসিন্দা সঞ্জীব কুমার ঘড়াই ৷ একাধিক চিকিৎসকের কাছে গিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি ৷ এভাবেই কেটে গিয়েছে এক দশক ৷ অবশেষে মেদিনীপুর হাসপাতালে(Rare Surgery at Medinipur Hospital)চিকিৎসক সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়কে দেখানোর পরই তিনি তড়িঘড়ি অস্ত্রোপচারের কথা বলেন ৷ সেই মতোই রাজি হয়ে যান সঞ্জীববাবু ৷
রবিবার এই অস্ত্রোপচারের পর এখন সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন সঞ্জীববাবু ৷ এমনকি চলাফেরা করতেও তাঁর কোনও সমস্যা হচ্ছে না বলেও জানান তিনি ৷
এই জটিল অস্ত্রোপচারের বিষয়ে মেদিনীপুর হাসপাতালের শল্য চিকিৎসক সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, "টিউমারটি এমন একটি শিরার মধ্যে তৈরি হয়েছিল যে শিরায় কোনওরকম অপারেশন করতে গেলে হয় প্যারালাইসিস হয়ে যাবে নয়তো রোগী মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল । এই টিউমার সাধারণত 10 লক্ষ মানুষের মধ্যে মাত্র 6 জনের হয় । এই পরিস্থিতিতে এই 56 বছর বয়সি কাপড় ব্যবসায়ী সঞ্জীব কুমার ঘড়াই হাজির হন মেদিনীপুর হাসপাতালে । সপ্তাহ দুয়েক ধরে তাঁকে হাসপাতালে রেখে এই টিউমার অস্ত্রোপচার করা হয় ৷ বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন, চলাফেরা করছেন ৷ এটা দেখেই আমরা ভীষণ খুশি ৷"
আরও পড়ুন : মেরুদণ্ড অপারেশনে সফলতা পেলেন দেবেন মাহাত হাসপাতালের চিকিৎসকরা
চিকিৎসক আরও বলেন, "এই রোগী যখন এখানে এসেছিলেন তখন ভাবতে পারিনি এই টিউমার আমরা সারিয়ে তুলতে পারব । কারণ এই টিউমার অপারেশন করতে গেলেই রোগীর ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের অসুবিধা হতে পারত । এই টিউমার ছিল শরীরের সবচেয়ে বড় সায়েটিক নার্ভে । সে ক্ষেত্রে আমরা রোগীর আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে তবেই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি । আমাদের অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে (Successful Rare Surgery at Midnapore Hospital)এবং রোগীকে সুস্থ অবস্থায় ফিরিয়ে দিতে পেরেছি ।"
যদিও অস্ত্রোপচার সফল হওয়ায় খুশি রোগী ও তাঁর আত্মীয়রা ৷ সঞ্জীববাবু বলেন, "বহু জায়গায় ঘুরেছি কিন্তু এই টিউমার অপারেশন করার কথা বলেনি । এর প্রধান অসুবিধে হত পা সব সময় চিনচিন করা এবং পা ফেলতে সমস্যা হওয়া । তবে এখন আর কোনও সমস্যা নেই ৷ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যেতে ভালো লাগছে । চিকিৎসকরা আমার প্রাণ ফিরিয়েছেন ৷"
আরও পড়ুন : জরায়ু কেটে যমজ সন্তানের জন্ম দিয়ে নজির গড়ল শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল