মেদিনীপুর, 30 জুলাই: একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির একাংশ ছাত্রীদের বিরুদ্ধে ব়্যাগিংয়ের অভিযোগ ৷ আতঙ্কে পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির অনেক ছাত্রীই স্কুলে আসতে চাইছে না বলে অভিযোগ ৷ ঘটনাটি ঘটেছে মেদিনীপুর শহরের রাজনারায়ণ বালিকা বিদ্যালয়ে ৷ এ দিন সকালে আক্রান্ত ছাত্রীদের অভিভাবকরা স্কুলে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ৷ তাঁদের অভিযোগ, এই ঘটনা প্রথমবার নয় ৷ এর আগেও একাধিকবার একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীদের একাংশের বিরুদ্ধে ব়্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে (Ragging Allegation Against Eleven and Twelve Class Students at Raj Narayana School in Medinipur) ৷ এ নিয়ে আগামী সপ্তাহে অভিযোগকারী অভিভাবক এবং অভিযুক্ত ছাত্রীদের অভিভাবকদের নিয়ে একটি বৈঠক ডেকেছেন স্কুল পরিচালন কমিটি ৷
মেদিনীপুর শহরের ঋষি রাজনারায়ণ বালিকা বিদ্যালয়ে ব়্যাগিংয়ের (Ragging) অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল ৷ অভিযোগ একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির কিছু ছাত্রী স্কুলের নিচু ক্লাসের পড়ুয়াদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে ৷ যা নিয়ে এ দিন সকাল থেকে উত্তাল হয়ে ওঠে ঋষি রাজনারায়ণ বালিকা বিদ্যালয় চত্বর ৷ অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন, দু’টি পিরিয়ডের মাঝে, মূলত একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির কিছু ছাত্রী নিচু ক্লাসে চলে যাচ্ছে ৷ সেখানে ছোট ছোট মেয়েদের মারধর করা, তাদের ব্যাগ থেকে টিফিন বের করে খাওয়ার ঘটনা যেমন রয়েছে ৷ পাশাপাশি, অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন, উঁচু ক্লাসের ওই ছাত্রীরা ছুরি নিয়ে ভয় দেখিয়েছে ৷ বাড়িতে বা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জানালে, মারধর করার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ এমনকি, স্কুলের শৌচাগারে মোবাইল ফোনে গান চালিয়ে নাচতে বলা হয় নিচু শ্রেণির ছাত্রীদের ৷ এই পুরো ঘটনা সামনে আসতেই, স্কুলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ৷
আরও পড়ুন: হস্টেলে ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, ব়্যাগিং না আত্মহত্যা ?
যদিও, এ নিয়ে কোনও তাড়াহুড়ো করতে রাজি নয় স্কুল পরিচালন সমিতি ৷ ইতিমধ্যেই, কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ ৷ তাঁরা বিষয়টি নিয়ে আগামী সপ্তাহে একটি বৈঠক ডেকেছেন ৷ সেখানেই অভিযোগকারী অভিভাবক এবং অভিযুক্ত ছাত্রীদের অভিভাবকদের নিয়ে একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে ৷ স্কুল পরিচালন কমিটির সভাপতি সুব্রত সরকার জানিয়েছেন, তাঁরা এ নিয়ে জেলার স্কুল পরিদর্শকের সঙ্গে কথা বলছেন ৷ অভিযুক্ত ছাত্রীদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে, তাঁদের সতর্ক করা হবে ৷ কিন্তু, স্কুলে ছুরি নিয়ে প্রবেশের বিষয়টি মানতে চাননি পরিচালন কমিটির সভাপতি ৷
তবে, প্রধান শিক্ষিকার সুজাতা গোস্বামী এতটাও কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে নন ৷ তিনি মনে করেন, দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকা এবং তার জেরে নানান মানসিক সমস্যা ছাত্রীদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে ৷ এক্ষেত্রেও অভিযুক্ত ছাত্রীদের তেমন কিছু হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে হবে ৷ তাঁর মতে, অভিযুক্তরাও স্কুলের ছাত্রী ৷ তাঁদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই, কোনওরকম হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হবে না ৷ তবে, স্কুলের নিরাপত্তার বিষয়ে অবশ্যই অগ্রাধিকার দেওয়া হবে ৷ প্রয়োজনে ক্লাসরুমগুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর কথা বলেছেন তিনি ৷