মেদিনীপুর, 5 মার্চ: পুকুরপাড় বাঁধাতে গিয়ে বারবার পৌরসভার নোটিশ পেয়ে ক্ষিপ্ত পুকুর মালিক । এই ঘটনায় ক্ষোভ খোদ শাসকদলের কর্মী-সহ এলাকার মানুষের । পৌরসভা কী চাইছে তবে পুকুর ভরাট হোক ? প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার মানুষজন-সহ মালিক কর্তৃপক্ষ । মেদিনীপুর পৌরসভার (Medinipur Municipality) বিরুদ্ধে মামলা করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পুকুর মালিক ।
একদিকে যখন গোটা রাজ্যে জলাশয়, ডোবা ও পুকুর বুজিয়ে ফেলে প্রোমোটারি রাজের অভিযোগ করছে অপরদিকে তখন মেদিনীপুরের আট নম্বর ওয়ার্ডে পুকুরপাড় বাধাতে গিয়ে পৌরসভার বারবার নোটিশে বেজায় খেপেছেন পুকুর মালিক । আর তা নিয়েই নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে এলাকায় । প্রসঙ্গক্রমে বলা যায়, মেদিনীপুর পৌরসভার 8 নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় বিঘা দশেকের বেনেপুকুর এলাকার বেনেপুকুর পাড় বাঁধানো নিয়েই বারবার নোটিশ করছে পৌরসভা । আর তাতেই এলাকাবাসী-সহ ক্ষোভের সঞ্চার পুকুর মালিক এবং শাসকদলের কর্মীদের মধ্যে ।
অভিযোগ পুকুরটিকে নতুন করে খনন করে এলাকার মাতাল নেশাড়ুদের সরিয়ে পাড় বাঁধিয়ে সৌন্দর্যায়ন করছেন পুকুর মালিক নিজে । এলাকার অনগ্রসর এবং দুঃস্থ মানুষদের জন্য জল সরবরাহে তিনি তৈরি করছেন চারটি বাঁধানো পাড় । এরই সঙ্গে বড় বড় জেসিবি লাগিয়ে পুকুরের মাটি তুলে নাব্যতা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন । তাছাড়া তিনি এলাকার মানুষের সুবিধার্থে পরিষ্কার স্বচ্ছ জলের সঙ্গে বাচ্চারা যাতে খেলতে পারে তারই ব্যবস্থা গড়ে তুলছেন । অথচ দেখা গেল যখনই তিনি কাজ শুরু করেছেন তখন থেকে পৌরসভা বারবার নোটিশ জারি করছে। পুকুর মালিকের অভিযোগ, পৌরসভার যে নোটিশ জারি হয়েছে তাও ভুলে ভরা । কখনও পৌরসভা পুকুরপাড় বাঁধানোর অভিযোগ তুলেছেন, কখনও বা পুকুর বোজানোর অভিযোগ তুলেছেন। আর তাতেই ক্ষোভ জন্মেছে পুকুর মালিক-সহ এলাকার মানুষের মধ্যে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ খোদ এলাকার কাউন্সিলর এবং শাসকদলের কর্মীরা। তাদের অভিযোগ কোথাও ভুল বোঝানো হচ্ছে পৌরসভাকে । কতিপয় মানুষ এই ঘটনা ঘটাচ্ছে যাতে এলাকার উন্নয়ন থমকে যায়। যদিও এই ঘটনায় এবার মুখ্যমন্ত্রী, মৎস্যমন্ত্রীর সঙ্গে কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে পৌরসভার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার হুমকি পুকুর মালিকের।
এই বিষয়ে পুকুর মালিক অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমি পুকুরের পাড় বাঁধিয়ে এলাকার মানুষের জন্য জল সরবরাহের ব্যবস্থা করছি । যেখানে মাতালদের আড্ডা হয়ে উঠেছিল, সন্ধে হলেই নেশাড়ুরা নেশা করত, উৎপাত করত সেখানে আমি পুকুর খনন করে সৌন্দর্যায়নের কাজ করছি । অথচ এই কাজ করতে গিয়েই পৌরসভা বারংবার নোটিশ দিয়ে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দিচ্ছে । তাই এই অশিক্ষিত পৌরসভার বিরুদ্ধে এবার আমি আদালতের দ্বারস্থ হব, মামলা করব পৌরসভার বিরুদ্ধে ।"
যদিও এই ঘটনায় ক্ষোভ জন্মেছে খোদ শাসকদলের কর্মীদের মধ্যে। এলাকার এক তৃণমূল কর্মী শিবু পানিগ্রাহী বলেন, "পৌরসভাকে কোথাও ভুল বুঝিয়েছে কিছু মানুষ এবং কতিপয় মানুষের অভিসন্ধির জন্য ভালো কাজ থমকে গিয়েছে তাদের ওয়ার্ডে। যেখানে গরম পড়লেই জলের সমস্যা শুরু হয় সেখানে এই ধরনের পুকুর থাকলে এলাকার মানুষ সুবিধে পাবে। আমরা দলের চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে বোঝানোর চেষ্টা করব । এই ঘটনায় ক্ষোভ জন্মেছে এলাকার মানুষের মধ্যেও । আনন্দ রায়, বাবলু দেব দাস-সহ ওয়ার্ডের বাসিন্দারা বলেন, পুকুর ভরাট নয় বরং নাব্যতা বাড়ানোর কাজ করছেন পুকুর মালিক এবং তাকে এজন্য অশেষ ধন্যবাদ । যে এলাকার উন্নয়নে তিনি সহযোগিতা করছেন ।
আরও পড়ুন : কাউন্সিলরের ওয়ার্ডেই মাটি ফেলে চলছে পুকুর ভরাট ! অস্বস্তিতে তৃণমূল