ঘাটাল, 24 সেপ্টেম্বর: দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বেহাল অবস্থা ঝুমি নদী বাঁধের উপর ঢালাই রাস্তার । আগে ত্রিপল ও বালির বস্তা দিয়ে রাস্তাটির মেরামত করা হয়েছিল । কিন্তু তাতেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি । কাজ শেষ হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই ধসে গিয়েছে নদী বাঁধ, রাস্তা হারিয়ে যেতে বসেছে নদী গর্ভে । বর্ষাকালে জল কাঁদায় আরও দুর্গম হয়ে উঠেছে রাস্তাটি ৷ এখান থেকে পারাপার করতে চরম সমস্যায় পড়তে হচ্ছে গ্রামবাসী থেকে স্কুল পড়ুয়াদের । এই ছবি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল ব্লকের মনসুকা এক গ্রাম পঞ্চায়েতের মাধবচক গ্রামের বাদুরতলা এলাকার ।
মূলত এই রাস্তা দিয়ে প্রায় 15টি গ্রামের মানুষজন থেকে স্কুল পড়ুয়ারা যাতায়াত করে । হেঁটে কিংবা সাইকেলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হয় তাদের । যে কোনও সময় ঘটে যেতে পারে বড়সড় দুর্ঘটনা ৷ তাই গ্রামবাসীরা চাইছে, নদীপাড় থেকে পাকা ঢালাই করে স্থায়ীভাবে সমাধান হোক এই রাস্তার । এলাকাবাসীর অভিযোগ, রাস্তা নিয়ে হুঁশ নেই প্রশাসনের । যদিও এই ঘটনায় খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমা শাসক ।
গ্রামবাসী গোবিন্দ দৌলই, সন্ন্যাসী পাত্র,সত্যরাজ চক্রবর্তী ও কিঙ্কর ঘোড়ইদের কথায়, দীর্ঘ কয়েক বছর যাবৎ এই নদী বাঁধের রাস্তার বেহাল অবস্থা । যতটুকু অবশিষ্টাংশ রয়েছে তা যে কোন মুহূর্তে পুরোপুরি নদী গর্ভে চলে যেতে পারে । কোনওক্রমে ত্রিপল দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে অস্থায়ীভাবে । আর এই ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় পারাপার করতে গিয়ে পড়ুয়ারা বহুবার পড়ে গিয়ে হাত পা ভেঙেছে গ্রামের মানুষজনের । তবুও কারও কোনও হেলদোল নেই । তাঁরা বলেন, "বহুবার অভাব অভিযোগ জানানো হয়েছে ৷ তবু হুঁশ ফেরেনি প্রশাসনের । আমরা চাই প্রশাসন এই রাস্তার দিকে নজর দিক এবং অবিলম্বে সারিয়ে দেওয়া হোক আমাদের যাতায়াতের এই রাস্তা ।"
আরও পড়ুন: 'রাস্তা দাও ভোট নাও' দেওয়াল লিখনে ভোট বয়কটের ডাক গ্রামবাসীদের
যদিও এ বিষয়ে সেচ দফতরের থেকে কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি ৷ তবে ঘাটাল মহকুমা শাসক সুমন বিশ্বাস বলেন, "বিষয়টি নিয়ে আগেও অভিযোগ পেয়েছি ৷ আবারও অভিযোগ শুনলাম ৷ আমরা খতিয়ে দেখব ৷ এরপর যা ব্যবস্থা নেওয়ায় নেব । কারণ যেহেতু নদী বাঁধের ব্যাপার । পুরোটাই সেচ দফতরের অধীনে । তাই আমরা দফতরকে চিঠি দিয়ে এই রাস্তাটি কংক্রিট করার ব্যবস্থা করব ।"
প্রসঙ্গত, ঘাটাল এই ডিভিশনের বিস্তীর্ণ এলাকা মূলত ফি বছরই বর্ষার জলে ডুবে যায় এবং সেক্ষেত্রেই যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম হয়ে ওঠে বাঁশের সেতু এবং নদীর বাঁধের রাস্তা । সেই বাঁশের সেতুগুলো পানার চাপে ভেসে যায় এবং নদী বাঁধের রাস্তা বেহাল হয়ে থাকায় মানুষ পড়েন দুর্ভোগে । মূল যাতায়াতের মাধ্যম তখন হয়ে ওঠে নৌকা এবং ভুটভুটি । তবে সঠিক সময়ে নৌকা এবং ভুটভুটি পাওয়া যায় না ৷ তাই মানুষের একমাত্র চলার মাধ্যম এই নদীপথে ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তাই । সেক্ষেত্রে এই রাস্তা কংক্রিট হওয়া দরকার আছে বলেই মনে করছে স্থানীয় মানুষজন ।
আরও পড়ুন: বেহাল দশা ! পঞ্চায়েত ভোটের আগে রাস্তা নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বেশ কয়েক বছর ধরে মাধবচক গ্রামের নদী বাঁধের ঢালাই রাস্তাটি বিপদজনক অবস্থায় পড়ে রয়েছে । সাইকেল বা বাইকে চেপে যাতায়াত করা দূরের কথা হেঁটে যেতেও ভয় লাগে তাদের । অনেকবার এই রাস্তায় পড়ে গিয়ে আহত হয়েছে স্কুল পড়ুয়া থেকে শুরু করে গ্রামবাসীরা । এখন দেখার কী উদ্যোগ নেয় প্রশাসন ৷ স্থায়ীভাবে কবে হয় রাস্তার সমাধান ৷ সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে গ্রামের মানুষজন ।