দাসপুর 17 ডিসেম্বর: ললিত ঝা এবং নীল আইচের তৈরি করা ‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’র সঙ্গে এবার যোগ মিলল পশ্চিম মেদিনীপুরেক ৷ দাসপুরের এক ল-ক্লার্ক হিমাংশু শেখর মান্নাকে দিয়ে সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে যুবক-যুবতীদের ওই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত করা হত ৷ তবে, হিমাংশ শেখরের বক্তব্য, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সমাজসেবার কাজ করবেন বলেই তিনি প্রথমে সদস্য হয়েছিলেন ৷ পরে তাঁকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সোশাল মিডিয়া গ্রুপের অ্যাডমিন করা হয়েছিল ৷
এ দিন সংবাদ মাধ্য়মকে হিমাংশু শেখর মান্না বলেন, তাঁর সঙ্গে নীল আইচ সোশাল মিডিয়ায় যোগাযোগ করেছিল ৷ তাও প্রায় দেড় বছর আগে ৷ এই নীল আইচকেই প্রথম সংসদ ভবনের নিরাপত্তা ভঙ্গে ভিডিয়ো পাঠিয়েছিলেন মূলচক্রী ললিত ঝা ৷ যাঁকে এই মুহূর্তে সন্দেহের বাইরে রাখছে না দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের তদন্তকারীরা ৷ উল্লেখ্য, নীল আইচ সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে হিমাংশুকে ‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’ নামে ওই সংগঠনের হয়ে কাজ করার প্রস্তাব দেন ৷ তাঁকে নীল বলেছিলেন এটি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং এর কাজ দুঃস্থ বাচ্চাদের বইখাতা কিনে দেওয়া ও বিভিন্ন ধরনের সেবামূলক কাজকর্ম করা ৷ নীলের এই কথা শুনেই রাজি হয়েছিলেন হিমাংশ শেখর মান্না ৷ এরপর দু’জনের মধ্যে ফোন নম্বর আদানপ্রদান হয় সোশাল মিডিয়ার মেসেজ বক্সে ৷
এরপর নীল আইচ ‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’র পশ্চিমবঙ্গ গ্রুপে হিমাংশুকে যুক্ত করেন ৷ সেই গ্রুপে সাধারণ সদস্য হিসেবেই ছিলেন হিমাংশু ৷ তবে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে সংগঠনের কাজ করার জন্য নীল তাঁকে একটি গ্রুপে যুক্ত করেন ৷ কয়েকদিনের মধ্যে হিমাংশুও ওই গ্রুপের অ্যাডমিন হয়ে যান ৷ এরপর তিনি আরও অনেক যুবক-যুবতীকে যুক্ত করেন সেখানে ৷ ল-ক্লার্ক হিমাংশুর দাবি অনুযায়ী, তিনি এবং জেলা গ্রুপের অন্যান্য সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় সমাজসেবার কাজ করতেন ৷ এমনকি নভেম্বর মাসেও দুঃস্থ বাচ্চাদের বইখাতা কিনে দিয়েছিলেন তাঁরা ৷
কিন্তু, ললিত ঝা সম্পর্কে হিমাংশু কিছুই জানতেন না বলে জানিয়েছেন ৷ ললিতকে চেনা দূর, তাঁর নাম তিনি কোনও দিন শোনেননি বলে দাবি হিমাংশুর ৷ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’র নামে এমন দেশবিরোধী কাজ করা হচ্ছে, তা তিনি জানতেন না বলে জানিয়েছেন হিমাংশু ৷ টিভি-তে প্রথমবার এই সংগঠনের আড়ালে এমন কাজের কথা জেনে, তৎক্ষণাত সব হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুক গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যান তিনি ৷ এমনকি তাঁর পরিচিতদেরও সেখান থেকে সরিয়ে দেন ৷
তবে, এই মুহূর্তে আতংকে রয়েছেন হিমাংশু ৷ তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনার পর তাঁকে এবং ওই গ্রুপে সদস্য হিসেবে থাকা বাকিদের তদন্তকারীরা জিজ্ঞাসাবাদ করতেই পারেন ৷ সেক্ষেত্রে তাঁরা পূর্ণ সহযোগিতা করবেন ৷ কিন্তু, ভয় একটা থাকেই ৷ কোনওদিন এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়বেন, তা ভাবেননি হিমাংশু ৷ তবে, তিনি চান ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক এবং অভিযুক্তরা যথাযথ শাস্তি পাক ৷ উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ জেলায় সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে ‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’র সংগঠন খুলেছিলেন ললতি ঝা এবং নীল আইচরা ৷ তাই এখন দেখার এই সংগঠনের শিকড় ঠিক কতটা গভীরে বিস্তৃত রয়েছে ৷
আরও পড়ুন: