ETV Bharat / state

ললিত ঝা-র যোগ পশ্চিম মেদিনীপুরে ! সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে বাড়ছিল ‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’

Parliament Security Breach Incident: সংসদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার ঘটনায় জড়িত ললিত ঝা-র যোগ পাওয়া গেল পশ্চিম মেদিনীপুরেও ৷ ‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’র সংগঠন জঙ্গলমহলেও খুলেছিলেন অভিযুক্ত ৷ দাসপুরের এক ল-ক্লার্ক হিংমাশু শেখর মান্নার সাহায্যে সোশাল মিডিয়া গ্রুপের সাহায্যে সংগঠনে যুবক-যুবতীদের সামিল করাচ্ছিলেন ললিত ৷

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 17, 2023, 7:37 PM IST

ETV BHARAT
ETV BHARAT
‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা গ্রুপের অ্যাডমিন ছিলেন হিমাংশু শেখর মান্না

দাসপুর 17 ডিসেম্বর: ললিত ঝা এবং নীল আইচের তৈরি করা ‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’র সঙ্গে এবার যোগ মিলল পশ্চিম মেদিনীপুরেক ৷ দাসপুরের এক ল-ক্লার্ক হিমাংশু শেখর মান্নাকে দিয়ে সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে যুবক-যুবতীদের ওই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত করা হত ৷ তবে, হিমাংশ শেখরের বক্তব্য, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সমাজসেবার কাজ করবেন বলেই তিনি প্রথমে সদস্য হয়েছিলেন ৷ পরে তাঁকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সোশাল মিডিয়া গ্রুপের অ্যাডমিন করা হয়েছিল ৷

এ দিন সংবাদ মাধ্য়মকে হিমাংশু শেখর মান্না বলেন, তাঁর সঙ্গে নীল আইচ সোশাল মিডিয়ায় যোগাযোগ করেছিল ৷ তাও প্রায় দেড় বছর আগে ৷ এই নীল আইচকেই প্রথম সংসদ ভবনের নিরাপত্তা ভঙ্গে ভিডিয়ো পাঠিয়েছিলেন মূলচক্রী ললিত ঝা ৷ যাঁকে এই মুহূর্তে সন্দেহের বাইরে রাখছে না দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের তদন্তকারীরা ৷ উল্লেখ্য, নীল আইচ সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে হিমাংশুকে ‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’ নামে ওই সংগঠনের হয়ে কাজ করার প্রস্তাব দেন ৷ তাঁকে নীল বলেছিলেন এটি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং এর কাজ দুঃস্থ বাচ্চাদের বইখাতা কিনে দেওয়া ও বিভিন্ন ধরনের সেবামূলক কাজকর্ম করা ৷ নীলের এই কথা শুনেই রাজি হয়েছিলেন হিমাংশ শেখর মান্না ৷ এরপর দু’জনের মধ্যে ফোন নম্বর আদানপ্রদান হয় সোশাল মিডিয়ার মেসেজ বক্সে ৷

এরপর নীল আইচ ‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’র পশ্চিমবঙ্গ গ্রুপে হিমাংশুকে যুক্ত করেন ৷ সেই গ্রুপে সাধারণ সদস্য হিসেবেই ছিলেন হিমাংশু ৷ তবে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে সংগঠনের কাজ করার জন্য নীল তাঁকে একটি গ্রুপে যুক্ত করেন ৷ কয়েকদিনের মধ্যে হিমাংশুও ওই গ্রুপের অ্যাডমিন হয়ে যান ৷ এরপর তিনি আরও অনেক যুবক-যুবতীকে যুক্ত করেন সেখানে ৷ ল-ক্লার্ক হিমাংশুর দাবি অনুযায়ী, তিনি এবং জেলা গ্রুপের অন্যান্য সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় সমাজসেবার কাজ করতেন ৷ এমনকি নভেম্বর মাসেও দুঃস্থ বাচ্চাদের বইখাতা কিনে দিয়েছিলেন তাঁরা ৷

কিন্তু, ললিত ঝা সম্পর্কে হিমাংশু কিছুই জানতেন না বলে জানিয়েছেন ৷ ললিতকে চেনা দূর, তাঁর নাম তিনি কোনও দিন শোনেননি বলে দাবি হিমাংশুর ৷ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’র নামে এমন দেশবিরোধী কাজ করা হচ্ছে, তা তিনি জানতেন না বলে জানিয়েছেন হিমাংশু ৷ টিভি-তে প্রথমবার এই সংগঠনের আড়ালে এমন কাজের কথা জেনে, তৎক্ষণাত সব হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুক গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যান তিনি ৷ এমনকি তাঁর পরিচিতদেরও সেখান থেকে সরিয়ে দেন ৷

তবে, এই মুহূর্তে আতংকে রয়েছেন হিমাংশু ৷ তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনার পর তাঁকে এবং ওই গ্রুপে সদস্য হিসেবে থাকা বাকিদের তদন্তকারীরা জিজ্ঞাসাবাদ করতেই পারেন ৷ সেক্ষেত্রে তাঁরা পূর্ণ সহযোগিতা করবেন ৷ কিন্তু, ভয় একটা থাকেই ৷ কোনওদিন এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়বেন, তা ভাবেননি হিমাংশু ৷ তবে, তিনি চান ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক এবং অভিযুক্তরা যথাযথ শাস্তি পাক ৷ উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ জেলায় সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে ‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’র সংগঠন খুলেছিলেন ললতি ঝা এবং নীল আইচরা ৷ তাই এখন দেখার এই সংগঠনের শিকড় ঠিক কতটা গভীরে বিস্তৃত রয়েছে ৷

আরও পড়ুন:

  1. 'সংসদে স্মোক ক্যানিস্টার হামলায় কোনও তর্ক-বির্তক নয়,' মন্তব্য নরেন্দ্র মোদির
  2. 'দু'বছর ধরে পরিকল্পনা ছিল', সংসদ হামলায় ষষ্ঠ অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করে দাবি করল পুলিশ
  3. সংসদে হামলাকারীদের 'আত্মদহনে'র পরিকল্পনা ছিল! চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল্লি পুলিশের

‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’র পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা গ্রুপের অ্যাডমিন ছিলেন হিমাংশু শেখর মান্না

দাসপুর 17 ডিসেম্বর: ললিত ঝা এবং নীল আইচের তৈরি করা ‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’র সঙ্গে এবার যোগ মিলল পশ্চিম মেদিনীপুরেক ৷ দাসপুরের এক ল-ক্লার্ক হিমাংশু শেখর মান্নাকে দিয়ে সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে যুবক-যুবতীদের ওই সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত করা হত ৷ তবে, হিমাংশ শেখরের বক্তব্য, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সমাজসেবার কাজ করবেন বলেই তিনি প্রথমে সদস্য হয়েছিলেন ৷ পরে তাঁকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সোশাল মিডিয়া গ্রুপের অ্যাডমিন করা হয়েছিল ৷

এ দিন সংবাদ মাধ্য়মকে হিমাংশু শেখর মান্না বলেন, তাঁর সঙ্গে নীল আইচ সোশাল মিডিয়ায় যোগাযোগ করেছিল ৷ তাও প্রায় দেড় বছর আগে ৷ এই নীল আইচকেই প্রথম সংসদ ভবনের নিরাপত্তা ভঙ্গে ভিডিয়ো পাঠিয়েছিলেন মূলচক্রী ললিত ঝা ৷ যাঁকে এই মুহূর্তে সন্দেহের বাইরে রাখছে না দিল্লি পুলিশের স্পেশাল সেলের তদন্তকারীরা ৷ উল্লেখ্য, নীল আইচ সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে হিমাংশুকে ‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’ নামে ওই সংগঠনের হয়ে কাজ করার প্রস্তাব দেন ৷ তাঁকে নীল বলেছিলেন এটি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং এর কাজ দুঃস্থ বাচ্চাদের বইখাতা কিনে দেওয়া ও বিভিন্ন ধরনের সেবামূলক কাজকর্ম করা ৷ নীলের এই কথা শুনেই রাজি হয়েছিলেন হিমাংশ শেখর মান্না ৷ এরপর দু’জনের মধ্যে ফোন নম্বর আদানপ্রদান হয় সোশাল মিডিয়ার মেসেজ বক্সে ৷

এরপর নীল আইচ ‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’র পশ্চিমবঙ্গ গ্রুপে হিমাংশুকে যুক্ত করেন ৷ সেই গ্রুপে সাধারণ সদস্য হিসেবেই ছিলেন হিমাংশু ৷ তবে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা থেকে সংগঠনের কাজ করার জন্য নীল তাঁকে একটি গ্রুপে যুক্ত করেন ৷ কয়েকদিনের মধ্যে হিমাংশুও ওই গ্রুপের অ্যাডমিন হয়ে যান ৷ এরপর তিনি আরও অনেক যুবক-যুবতীকে যুক্ত করেন সেখানে ৷ ল-ক্লার্ক হিমাংশুর দাবি অনুযায়ী, তিনি এবং জেলা গ্রুপের অন্যান্য সদস্যরা বিভিন্ন জায়গায় সমাজসেবার কাজ করতেন ৷ এমনকি নভেম্বর মাসেও দুঃস্থ বাচ্চাদের বইখাতা কিনে দিয়েছিলেন তাঁরা ৷

কিন্তু, ললিত ঝা সম্পর্কে হিমাংশু কিছুই জানতেন না বলে জানিয়েছেন ৷ ললিতকে চেনা দূর, তাঁর নাম তিনি কোনও দিন শোনেননি বলে দাবি হিমাংশুর ৷ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’র নামে এমন দেশবিরোধী কাজ করা হচ্ছে, তা তিনি জানতেন না বলে জানিয়েছেন হিমাংশু ৷ টিভি-তে প্রথমবার এই সংগঠনের আড়ালে এমন কাজের কথা জেনে, তৎক্ষণাত সব হোয়াটসঅ্যাপ এবং ফেসবুক গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যান তিনি ৷ এমনকি তাঁর পরিচিতদেরও সেখান থেকে সরিয়ে দেন ৷

তবে, এই মুহূর্তে আতংকে রয়েছেন হিমাংশু ৷ তিনি জানিয়েছেন, এই ঘটনার পর তাঁকে এবং ওই গ্রুপে সদস্য হিসেবে থাকা বাকিদের তদন্তকারীরা জিজ্ঞাসাবাদ করতেই পারেন ৷ সেক্ষেত্রে তাঁরা পূর্ণ সহযোগিতা করবেন ৷ কিন্তু, ভয় একটা থাকেই ৷ কোনওদিন এমন ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে পড়বেন, তা ভাবেননি হিমাংশু ৷ তবে, তিনি চান ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক এবং অভিযুক্তরা যথাযথ শাস্তি পাক ৷ উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ জেলায় সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে ‘সাম্যবাদী সুভাষ সভা’র সংগঠন খুলেছিলেন ললতি ঝা এবং নীল আইচরা ৷ তাই এখন দেখার এই সংগঠনের শিকড় ঠিক কতটা গভীরে বিস্তৃত রয়েছে ৷

আরও পড়ুন:

  1. 'সংসদে স্মোক ক্যানিস্টার হামলায় কোনও তর্ক-বির্তক নয়,' মন্তব্য নরেন্দ্র মোদির
  2. 'দু'বছর ধরে পরিকল্পনা ছিল', সংসদ হামলায় ষষ্ঠ অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করে দাবি করল পুলিশ
  3. সংসদে হামলাকারীদের 'আত্মদহনে'র পরিকল্পনা ছিল! চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল্লি পুলিশের
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.