মেদিনীপুর, 22 এপ্রিল: ওড়িশার হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে একসময় কোরোনায় আক্রান্ত থাকা বেলদার এক বৃদ্ধের(পরে কোরোনা মুক্ত হন) । সংক্রমণ ধরা পড়ার আগে তিনি মেদিনীপুরের একটি নার্সিংহোম ভরতি ছিলেন । পরে সংক্রমণ ধরা পড়ে তাঁর ও ওড়িশায় চিকিৎসা চলাকালীন মৃত্যু হয় । তাই এবার আগাম সতর্কতা গ্রহণে কিছু ব্যবস্থা নিতে দেখা গেল পাশের আর একটি নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষকে । ওই নার্সিংহোমে আসা প্রত্যেকের থার্মাল স্ক্রিনিং টেস্টের মাধ্যমে শরীরের তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে । এছাড়াও সংক্রমণ রোধে আরও কয়েকটি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ।
মেদিনীপুরের কোরোনো সংক্রমণের চেহারা তেমনভাবে প্রকাশিত না হওয়ায় জেলাকে অরেঞ্জ জ়োন হিসেবে ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক । কেবলমাত্র দাসপুরে সংক্রমিত দু'জন বাদে এই মুহূর্তে কোরোনা আক্রান্ত কেউ ছিলেন না । কিন্তু বেলদার বৃদ্ধ ওড়িশায় কোরোনা সংক্রমণ নিয়ে ভরতি হওয়ার পর জেলায় কোরোনা সংক্রমণের হার বাড়তে থাকে । ঘটনায় পাশের রাজ্যে বৃদ্ধের মৃত্যু হয় । আগাম সতর্কতা হিসেবে বৃদ্ধের পরিবারসহ আগে তিনি যে নার্সিংহোমে ভরতি ছিলেন সেখানকার স্টাফ ও ডাক্তারদের কোয়ারানটাইনে পাঠায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ । যে ওয়ার্ডে প্রথমে বৃদ্ধকে ভরতি করা হয়েছিল নার্সিংহোমের সেই অংশটুকুও সিল করে দেয় প্রশাসন । দফায় দফায় ওই নার্সিংহোমের দায়িত্বে থাকা ডাক্তার ও কর্মচারীদের টেস্ট করা হয় । প্রথম দফায় 19জন এবং দ্বিতীয় দফায় 12জনকে টেস্ট করা হয় । যদিও টেস্টের সব ফল নেগেটিভ ।
এবার ওই নার্সিংহোমের পাশের নার্সিংহোমেও শুরু হয়েছে থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে টেস্টিং । কারণ সংক্রমিত নার্সিংহোমের একটি অংশ সিল করে দেওয়ার কারণে পাশের নার্সিংহোমে রোগীদের ভিড় বাড়তে থাকে । পাশাপাশি ওই নার্সিংহোমটিতে ভরতি থাকা জরুরি পরিষেবা চলাকালীন কিছু রোগী এই নার্সিংহোমটিতে ভরতি হন । ঘটনায় আগাম সতর্কতা নিতেই কয়েকটি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এই নার্সিংহোমের তরফে । থার্মাল স্ক্রিনিং টেস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে । পাশাপাশি হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার দিয়ে বারবার হাত ধোয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে । এছাড়া একসঙ্গে নয়, একজন একজন করে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে নার্সিংহোমে । ভরতি থাকা রোগীর বাড়ির লোকজনদের অহেতুক প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ।
এই বিষয়ে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ কুনালকান্তি ঘোষ বলেন, "আমরা তখন থেকেই সচেতন হয়েছি যখন গোটা রাজ্য ও দেশজুড়ে শুরু হয়েছিল কোরোনার প্রভাব । আগে থেকেই আমরা প্রিকশন নিয়েছি । নানারকম পদ্ধতি অবলম্বন করেছি । তবে পাশের নার্সিংহোমটিতে একসময় ভরতি থাকা রোগী যখন ওড়িশায় মারা যান তখন থেকে আমরা আরও জোরদার করি এই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা । সংক্রমণ প্রতিরোধে বর্তমানে থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে দফায় দফায় চেকআপ চালাচ্ছি । হাসপাতালে আসা রোগী এবং রোগীর আত্মীয়দের থার্মাল স্ক্রিনিং টেস্ট করা হচ্ছে । যাতে প্রারম্ভিক প্রিকশন হিসেবে আমরা সংক্রমিত রোগীকে চিহ্নিত করতে পারি । তাছাড়া ক্রিটিক্যাল ইউনিটগুলো দিনে চারবার পরিষ্কার করানো হচ্ছে ।"